বাজারে সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম নিম্নমুখী

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ১১: ৫৮

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সরবরাহ বেড়ে সব ধরনের সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। তবে দাম কমেনি কোনো খাদ্যপণ্যের। আগের বাড়তি দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। কাঁচাবাজারে গত কয়েক সপ্তাহে সব ধরনের সবজিই চড়া দামে বিক্রি হলেও আগের তুলনায় গতকাল বৃহস্পতিবার কিছুটা নিম্নমুখী হতে দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

আগের দুই সপ্তাহ ধরে কাঁচামরিচের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়ে ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। গতকাল কারওয়ান বাজারে খুচরায় কেজিপ্রতি ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, হাতিরপুল, পলাশী ও নয়াবাজারে খুচরায় ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টি থেমে বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়ে তিন থেকে চার দিন ধরে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। মূলত সরবরাহের ওপর নির্ভর করে এর দাম।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহানার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তিন থেকে চার দিন ধরে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত সবজির দাম কমেছে।

গতকাল এই বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ সবজি কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। এর মধ্যে প্রতি কেজি করলা, ঢ্যাঁড়শ, লাউ, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, কচুরলতি, বরবটি ও কাঁকরোল ৫০ থেকে ৮০ টাকা। বেগুনের দামও কেজিপ্রতি ২০ টাকা কমে মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকার কমের মধ্যে মিষ্টিকুমড়া, পটোলসহ কয়েকটি সবজি। সবচেয়ে বেশি কমেছে পেঁপের দাম, কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু আগের বাড়তি দামেই ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে কাঠিলাল আলু ৪০ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকা এবং ডায়মন্ড আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

তবে টমেটো, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ধনেপাতার মতো অমৌসুমি সবজি চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমে প্রতি কেজি টমেটো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, শিম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট থেকে সংগ্রহ করা বাজার দরের তালিকায় এসব সবজি ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেশি দাম বিক্রি হচ্ছে।

মাছ ও মুরগি দাম আগের সপ্তাহের মতোই। চাষের রুই আকারভেদে ৩৮০ থেকে ৪৫০, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৮০, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০, কই ২৮০ থেকে ৩০০, পাবদা ও শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছিল সেই বাড়তি দামেই ব্রয়লার মুরগির কেজি এখন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। প্রতি ডজন মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা।

রসুন ও আদা আগের দামেই বিক্রি হলেও পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫, রসুন ১৪০ থেকে ২০০, আদা ১৪০ থেকে ২২০ বিক্রি হচ্ছে।

আর কয়েক সপ্তাহ আগে মিনিকেটের দাম যেভাবে বেড়েছিল, সেই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। তীর, ডায়মন্ড, সাগর, মঞ্জুর, রশিদ প্রভৃতি ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি মিনিকেট চাল এখন ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোজাম্মেল মিনিকেটের দাম প্রতি কেজি ৯০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি স্বর্ণা (মোটা চাল) ৫৫-৫৮ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ (মাঝারি চাল) জাতের চাল ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টানা বৃষ্টির কারণে বাজারভেদে খুচরায় কিছুটা চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে টিসিবির গতকাল বৃহস্পতিবার ৫১টি পণ্যের বাজার দরের তালিকায় অনুযায়ী সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিন তেল (লুজ, ৫ লিটার বোতল), পাম অয়েল লুজ, মসুর ডাল (ছোট) ও দারুচিনির মূল্য বৃদ্ধি এবং মুগ ডাল, মুরগি ব্রয়লার, চিনির দাম কমেছে। এছাড়া চালসহ অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

সংস্থাটি রাজধানীর কাওরান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার, মালিবাগ, হাতিরপুল, রামপুরা, কাটাসুর কাঁচাবাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত