রাজউকের সার্ভারে অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে মোবাইল কোর্ট

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৫, ০১: ১০

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নকশা অনুমোদনের সার্ভারে (ইসিপিএস) হ্যাকার বা অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এই অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে রাজউক।

রাজউক জানায়, সম্প্রতি এই সার্ভারটিতে অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। যার ফলে ঝুঁকিতে পড়ে যায় রাজউক এর সম্পূর্ণ প্ল্যান অনুমোদন প্রক্রিয়া। স্বল্প সময়ের জন্য সম্পূর্ণ রূপে থমকে ছিল ভবন অনুমোদনের কাজ। রাজউকের অভ্যন্তরীণ প্ল্যান অনুমোদনের কাজ ও আটকে ছিল। এ সুযোগে অনুপ্রবেশকারীরা সিস্টেমে ঢুকে বেশ কয়েকটি ভবনের অনুমোদন কার্যক্রম চালায়।

গত ১৯ মে, রাজউক নকশা অনুমোদনের সার্ভারে (ইসিপিএস) অনুপ্রবেশ করে মাত্র ১৭ মিনিটে একটি ভবনের অনুমোদন পাশের ঘটনাটি নজরে আসে রাজউক কর্তৃপক্ষের। জলাভূমি ও হাইট রেস্ট্রিকশন থাকা ভূমিতে ১৫ তলা বিশিষ্ট ১৮৫ ইউনিট এর এই সুউচ্চ ভবনটির নকশা সকল বিধিকে পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পাশ করিয়ে নেয় অনুপ্রবেশকারীরা। পরবর্তীতে রাজউক কর্তৃপক্ষ উক্ত ঘটনা জানতে পারার পর প্রাথমিক তদন্তে একই উপায়ে আরও তিনটি ভবনের নকশা অনুমোদন শেষ পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় পায়। তৎক্ষণাৎ সার্ভারটি বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজউকের পক্ষ থেকে এবং মতিঝিল থানায় সেদিনই একটি জিডি দায়ের করা হয়। ওই পাশকৃত নকশার সূত্র ধরে রাবেয়া বারী নামক এক প্রকৌশলীর সন্ধান পায় রাজউক, যার স্বাক্ষর নকশাগুলোতে পাওয়া যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মতিঝিলের নীল নকশা নামক একটি কম্পিউটারের দোকানের এবং সেখানকার এক কর্মচারী স্বপনের নাম। তারই প্রেক্ষিতে রাজউক এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মনির হোসেন হাওলাদার এর নেতৃত্বে একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় মতিঝিলস্থ নীল নকশা নামক দোকানটিতে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কালে দোকানটির সাথে অননুমোদিত নকশা অনুমোদনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। একইসাথে দোকানটির মালিক এনামুল এর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে রাজউক এর নির্ধারিত ফি পরিশোধের প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও দোকানের কয়েকটি কম্পিউটারে উক্ত অবৈধ ভবনগুলোর নকশা পাওয়া যায়। যা থেকে দোকানের মালিক এনামুল ও কর্মচারী স্বপনের সম্পৃক্ততা প্রতীয়মান হয়।

মোবাইল কোর্ট চলাকালীন তাদের কাওকেই পাওয়া না যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মচারীদের পুলিশের আওতায় নেওয়া হয়। এ প্রেক্ষিতে রাজউকের পক্ষ থেকে এজাহার দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।

রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের ঘটনা খুবই অনভিপ্রেত। কঠোর তদন্ত করে এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একইসাথে ভবিষ্যতে যেন এমন কোন ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়াও এর সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে অবৈধভাবে অনুমোদন নেওয়া ভবনটির নকশা বাতিল করে মালিকপক্ষকে চিঠি প্রদান করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিষয়:

রাজউক
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত