স্বাস্থ্য খাতে ‘দুর্নীতির হোতা’ মিঠু ৫ দিনের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪১
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৭

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় আওয়ামী সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে ‘দুর্নীতির হোতা’ আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. সাব্বির ফয়েজের আদালত এ আদেশ দেন।

গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে নিউমার্কেট থানাধীন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তাকে দুদকে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক জাকির হোসেন। ওইদিন আদালতে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে রিমান্ড শুনানির জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।

এদিন আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম, ফোরকান আলী ও বোরহান উদ্দিনসহ অনেকেই তার রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করেন। জামিনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ২৪ বার মিঠুর বিরুদ্ধে নোটিশ করা হয়েছে। এর আগে দুদকের মামলায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মুলত ব্যবসায়িকভাবে মিঠুকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই মামলা দেয়া হয়েছে। তার স্ত্রী আমেরিকায় অসুস্থ। তারপরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় দেশে ফিরেছেন। মানবিক কারণে আমরা তার জামিনের আবেদন করছি।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও দেলোয়ার জাহান রুমি জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন। তারা রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, অনুসন্ধানকালে মিঠুর ১ শত ৪৭ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেছে দুদক। এরমধ্যে ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বর্হিভুত সম্পদ অর্জন করায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে সংস্থাটি। এছাড়াও দেশের বাইরে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডাতে তার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ আত্মসাতের তথ্য উদ্‌ঘাটন করতে আসামি মিঠুকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইস ও টেকনোক্রেট নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিঠু কৃষিজমি ক্রয়, জমি লিজ, প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি নির্মাণে মোট ১৮ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ার ও বিনিয়োগ, গাড়ি ক্রয়, ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী মিলিয়ে আরও ৫৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ তার নামে পাওয়া গেছে। স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

এছাড়া মিঠুর নামে পারিবারিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ সম্পদ ও ব্যয়সহ তার মোট সম্পদের হিসাব দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অন্যদিকে অনুসন্ধানে বৈধ উৎস পাওয়া গেছে ৭১ কোটি ৪৯ লাখ টাকার। অর্থাৎ বৈধ আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ৭৫ কোটি ৮০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পায় সংস্থাটি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত