গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ফাঁসির ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মিছিল করেছে শাখা ছাত্রশিবির। এরমধ্য দিয়ে দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর পর প্রকাশ্যে নিজেদের ব্যানরে প্রোগ্রাম করল শিবির।
সোমবার রাত সোয়া ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মহুয়া চত্বর থেকে মিছিল শুরু হয়। পরে বটতলায় এসে একটি বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এ সময় শাখা শিবিরের সদস্য ফেরদৌস আল হাসানের সঞ্চালনায় শাখা ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা হাসিনার শাসনামলের দমন নিপীড়নের কথা স্মরণ করেন। সেই সাথে অবিলম্বে তাকে দেশে এনে ফাঁসি কার্যকর করার দাবি করেন।
শাখা ছাত্রশিবিরের অফিস ও প্রচার সম্পাদক এবং জাকসু জিএস মাজহারুল ইসলাম বলেন,শাখা শিবিরের দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বিগত ১৭বছর জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে জুলুমতন্ত্র কায়েম করেছিল। তারা কখনো সত্য ন্যায়ের পথে থাকতে চায়নি। এর আগেও সুজলা সুফলা সম্পদশালী এই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েমের চেষ্টা হয়েছে। ২০০৯ সালে প্রি-প্ল্যাণ্ড নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে মুজিবীয় কায়দায় বাকশাল কায়েমের চেষ্টা করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার শুরু হয়েছিল দেশপ্রেমিক, ন্যায়পরায়ণ সেনা সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে। এর পর শাপলা চত্বরে ইসলাম প্রেমিক তৌহিদি জনতার উপর গণহত্যা চালানো হয়েছে। আমরা ভুলিনি তারা মিথ্যা মামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের ক্যাঙারু কোর্টে শিবিরের সাবেক নেতা ও জামায়াতে ইসলামির নেতাদের জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়। খুনি হাসিনার বিচার আমরা তারই ট্রাইবুনালে দেখতে পেলাম। তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য গুম খুন করেছে। বাংলাদেশকে পার্শ্ববর্তী দেশের কাছের ইজারা দিয়েছিল। অবশেষে ২৪এ তাদেরকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে দেশপ্রেমিক জনতা। রক্তপিপাসু, বেহায়া হাসিনার বিচার আজ নিশ্চিত হয়েছে। আমরা এখনই সন্তুষ্ট নই। তাকে দেশে এনে বিচার কার্যকর করা হউক। এছাড়াও এখনো অনেকে অন্যায়, দুর্নীতি, চাঁদাবাজিকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের রুখতে হবে। ছাত্রশিবির সবসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু দীর্ঘ ৩৫ বছর তাদের জাবিতে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। এ ক্যাম্পাসে কামরুল ইসলাম ভাইকে শহিদ করা হয়েছে। অর্ধশত শিক্ষার্থীকে শিবির করার কারণে ছাত্রত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা নতুন ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বেনিফিটেড হবে।
সমাপনী বক্তব্যে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুস্তাফিজুর রহমান বলেন,জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজকে খুনি হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে। যারা বিগত সময়ে স্বৈরাচারের রোষে ভাই হারিয়েছে, বাবা হারিয়েছে, স্বামী হারিয়েছে তাদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এটা আমাদের প্রাথমিক বিজয়, কিন্তু যতক্ষণ খুনি হাসিনাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো না হবে ততদিন চূড়ান্ত বিজয় আসবেনা। আজকের রায়ের মাধ্যমে ভারতীয় আধিপত্যবাদের কবর রচিত হয়েছে। ভারতকে অবশ্যই হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে হবে। শুধু খুনি হাসিনা নয়, বিগত সময়ে যারা এই ফ্যাসীবাদি শক্তিকে সাংস্কৃতিকভাবে শক্তি জুগিয়েছে, তাদের খুন, গুমের ন্যায্যতা দিয়ে এসেছে সেই সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানেকে বিচারের আওতায় আনা হবে। একইসাথে ১৫ই জুলাই ছাত্রলীগের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসকল শিক্ষকেরা মদদ জুগিয়েছিল অনতিবিলম্বে তাদের বিচার করতে হবে। নয়তো তাদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

