প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষিকা নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অসুস্থতাজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা হয়েছে। সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হয়ে মারা যাওয়ার খবরটি সঠিক নয়।
মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষিকার মৃত্যুর ঘটনায় আমরা দুঃখপ্রকাশ করেছি। নিহতের পরিবারকে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া সহকারী শিক্ষক ফাতেমা আক্তার (৪৫) গত ৮ নভেম্বর শাহবাগে সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে আতঙ্কগ্রস্ত হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে একপর্যায়ে কথা বলাই বন্ধ হয়ে যায়। তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। গত রোববার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান।
ফাতেমা চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ঝিনাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তিনি মতলব উত্তর উপজেলার ঘনিয়ারপাড় গ্রামের সুরুজ মোল্লার মেয়ে ও ঠাকুরচর গ্রামের স্কুলশিক্ষক ডি এম সোলেমানের স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের মা ছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডির সোবহানবাগে ড্যাফোডিল প্লাজায় আয়োজিত গ্লোবাল এন্টারপ্রেনরশিপ উইক-২০২৫ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, তরুণ প্রজন্ম ভবিষ্যতে নেতৃত্ব গ্রহণ করে দেশকে একটি উদ্যোক্তা বান্ধব রাষ্ট্রে পরিণত করবে।
তিনি বলেন, নানা দুর্বলতা উদ্যোক্তা বান্ধব পরিবেশ গঠনে বাধা সৃষ্টি করলেও ভবিষ্যতে তরুণরাই এ পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেন, ‘শিশুর ব্যক্তিগত সক্ষমতা বিকাশের পাশাপাশি তাকে সমাজের একজন দায়িত্বশীল ও উৎপাদনশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য।’
ব্যক্তিকেন্দ্রিক মনোভাব সমাজবিরোধী আচরণে রূপ নিতে পারে এ বিষয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘সৃজনশীলতা, যুক্তিশীলতা ও নৈতিকতা একইসঙ্গে লালন করতে না পারলে প্রতিভাবান ব্যক্তি তৈরি হলেও একটি ভালো সমাজ তৈরি করা সম্ভব হবে না।’
তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় গুণগত উন্নয়ন ছাড়া উদ্যোক্তা মানসিকতা বিকাশ সম্ভব নয়। প্রাথমিক শিক্ষার মূল ভিত্তি হলো সাবলীলভাবে পড়া বুঝা, লেখা এবং মৌলিক গণিত দক্ষতা অর্জন। এই ভিত্তি দুর্বল থাকলে উচ্চশিক্ষায় এবং জীবনব্যাপী শেখায় ঝুঁকি থেকে যায়।
উদ্যোক্তা মানসিকতা গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, শৈশবেই সৃজনশীলতা, কল্পনাশক্তি এবং সামাজিক উপযোগিতা সম্পর্কে ধারণা তৈরি করতে হবে। সহ-শিক্ষা কার্যক্রম যেমন সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলা, বিতর্কসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শিশুর উদ্ভাবনী ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ড্যাফোডিল ফ্যামিলির চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, বাংলাদেশ মহিলা উদ্যোক্তা ফেডারেশনের সভাপতি ড. রুবিনা হোসাইন, ইউএনডিপি’র ন্যাশনাল কনসালটেন্ট পলিসি ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট সাইফুল হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড. কে এম হাসান।
এ সময় উপদেষ্টা ড্যাফোডিলের তিন শিক্ষার্থীকে ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার দেন। পরে তিনি ড্যাফোডিল রোবোটিক্স অ্যান্ড এআই সেন্টার পরিদর্শন করেন।

