অযাচিত ‘প্যারেন্টিং লেকচার’ নিয়ে পরীমণির আপত্তি

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫, ০৪: ০৫

নায়িকা, মা, অতপর একজন উদ্যোক্তা হিসেবেও নিজের অবস্থানকে দৃঢ় করেছেন অভিনেত্রী পরীমণি। অভিনয়ের ব্যস্ততা, শুটিং, ব্যবসার ভার সব কিছুর মাঝেও মা হিসেবে তিনি অনবদ্য। তার সন্তান রাজ্যকে ঘিরেই তার নতুন অধ্যায়, নতুন এক জীবনদর্শন।

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে নিজের মাতৃত্বের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি দীর্ঘ, লেখা প্রকাশ করেন পরীমণি। যেখানে তিনি সন্তান পালনে পাওয়া নানা ভুলভাল পরামর্শ, অযাচিত ‘প্যারেন্টিং লেকচার’ এবং তার নিজের চিন্তা ও উপলব্ধির কথা তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

লেখার শুরুতেই পরীমণি বলেন, ‘খেয়াল করে দেখবেন, আপনার চারপাশে এমন কিছু মানুষ থাকবে, যারা ভালোবাসা দেখানোর নামে উপদেশের বন্যা বইয়ে দেবে—তোমার বাচ্চার জন্য এটা করো, ওটা করো না। যাদের অনেকেই হয়তো নিজেরাই জানেন না তারা কী বলছেন।’

এই পোস্টে পরীমণি তার পরিচিত একজনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার এক পরিচিত মানুষ (মায়ের সমতুল্য) আমাকে নানান রকম বুদ্ধি পরামর্শ দিতো আর কি! আমার বাচ্চা নিয়ে দিতো। উনি আমাকে বুঝাতেন- বাচ্চাকে ডিমের কুসুম দিতে ৩ মাস পর থেকেই (যেটা একদমই ঠিক নয়) শিখাতেন- বাচ্চা বসা শিখলেই আমি যেন বাচ্চাকে ওয়াকার দিয়ে দেই! তাহলে নাকি বাচ্চা দ্রুত হাঁটতে শিখবে! আমি দেই নি বলে উনি নিজেই একদিন কিনে নিয়ে এলেন। (যেটা এখন সাইন্টিফিক‍্যালি একদম ব্যান করে দেওয়া হয়েছে। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে এতে বাচ্চাদের মেরুদণ্ডের ক্ষতি করে। পঙ্গুত্ব পর্যন্ত হতে পারে!’

তবে সেই অভিভাবক শুধু ভুল নয়, কিছু ভালো জিনিসও শিখিয়েছেন। যেমন—ব্রেস্টফিড, তেল মালিশ, গ্যাস বের করার উপায়। সেসবের জন্য কৃতজ্ঞ পরীমণি।

পরীমণির কথায় তার এই লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিল অন্য এক ভিডিও দেখে—যেখানে এক মা গুড প্যারেন্টিং-এর নামে বলছিলেন, সাধ্য থাকলেও সন্তানকে সব কিছু কিনে দেওয়া ঠিক নয়।

তিনি লেখেন, ‘এই কথাগুলো আমাকেও বলা হয়েছিল। ওই যে যিনি আমাকে গুড প‍্যারেটিং নিয়ে উপদেশ দিতেন। উনি আমাকে এটাও বলেছিলেন, যে তার বাচ্চারা ছোটবেলায় বাইরে গেলে চিপস কিনতে চাইলেও নাকি তাদের তখন কিনে দেয়া হতো না। পরের দিন দিত। এতে নাকি বাচ্চার তার বাবা মায়ের সমর্থের উপর আস্থা আসে। বাচ্চা নাকি এতে অভাব বুঝতে শেখে।’

পরীমণি প্রশ্ন তোলেন, ‘ছোট্ট একটা শিশুকে আপনি কী শেখাতে চাইছেন? অভাব? না কি কৃপণতা? সরি ভাই! আমার মোটেও এই ধরনের প্যারেন্টিং বোধগম্যে হইল না। একটা শিশুর বয়স যদি হয় তিন, তখন তো তাকে শেখাতে হবে ভালোবাসা, অনুভব, উদারতা। না হলে বড় হয়ে তোমার মতোই ধোকাবাজি শিখবে।’

নিজের প‍্যারেটিং বিষয়ে পরী লেখেন, ‘আমি আমার ছেলেকে একদম ছোট থেকেই খেলনার দোকানে ছেড়ে দেই। আর বলি, আমার বাজান তোমার যা কিছু ভালো লাগে তুমি নিতে পারো।’ ফলে আমি ওর খুশি হওয়া দেখি। আমি দেখি কত লোভনীয় হার্মফুল টয় (পিস্তল, বন্দুক ইত্যাদি) ও ধরে না। ব্যাস,এতটুকুই শিক্ষা এই বয়সের জন্য যথেষ্ট। এক বস্তা খেলনা কিনে যখন সবাইকে ভাগ করে দেয়! ব্যাস, এতটুকু মন উদার হওয়াটাই ওর এই বয়সের জন্য যথেষ্ট।’

সবশেষে তিনি বলেন, ‘আমি জানি প্রত্যেক মায়ের বা বাচ্চাদের বড় হওয়ার জার্নি এক রকম নয়। শুধু এই টুকু বলার, আপনার সোশ্যাল কোনো কম্পিটিশনের মধ্যে বাচ্চদের নিয়ে মাইতেন না প্লিজ।’

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত