ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান

আদিয়াত মুহতাসিম
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৪

‘থ্যালাসেমিয়া’ শব্দটি যাদের পরিচিত, তাদের জন্য এটি এক আতঙ্কের নাম। বংশগত এই রোগ নিয়ে জন্ম গ্রহণ করা রোগীদের জীবন কখনো কখনো থমকে থাকে কেবল এক ব্যাগ রক্তের অপেক্ষায়। বিশেষ করে মেজর থ্যালাসেমিয়া রোগীদের মাসে অন্তত একবার হলেও রক্ত নিতে হয় কেবল বেঁচে থাকার জন্য। অথচ বাংলাদেশে এখনো এই রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরবচ্ছিন্ন রক্তের সরবরাহ পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায়নি। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের থ্যালাসেমিয়া ইউনিটগুলোয় রোগীদের স্বজনেরা কখনো, কখনো এক ব্যাগ রক্ত খুঁজে, খুঁজে পাগলপারা হন প্রিয় মানুষ মৃত্যুর প্রহর গুনতে গুনতেই।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি এই বাস্তবতায় রক্তদানে সচেতনতা বাড়াতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক সপ্তাহব্যাপী রক্তদান কর্মসূচি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি রেসপন্স টিম (বিইউআরটি) আয়োজিত এই কার্যক্রমে সহযোগী সংগঠন হিসেবে যুক্ত ছিল বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসি)। এই কর্মসূচিতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ্রহী সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্টাফের কাছ থেকে বিনা মূল্যে রক্ত সংগৃহীত হয় প্রায় ২৬৫ ব্যাগ।

থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জীবন বাঁচাতে এই দুই প্রতিষ্ঠান রক্ত সংগ্রহ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সারা বছর। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী রক্তদানে আগ্রহী হলে দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের সহায়তায় দিনব্যাপী রক্তদান কর্মসূচি আয়োজন করতে পারে নিজস্ব ক্যাম্পাসে। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বা শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ নেওয়া হলে সম্পূর্ণ কর্মসূচি আয়োজনের জন্য হাসপাতাল বা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকেই প্রয়োজনীয় মেডিকেল টিম, যন্ত্রপাতি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সব ব্যবস্থা করা হয়।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি রেসপন্স টিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষকমন্ডলী, অ্যালামনাই ও স্টাফদের জরুরি মুহূর্তে প্রয়োজনীয় রক্তের জোগান দেওয়া এবং ভার্সিটির ব্লাড ডোনার ডেটাবেস ম্যানেজমেন্টের পাশাপাশি প্রতিবছরই এই ক্যাম্পাসভিত্তিক ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পেইন আয়োজন করে আসছে। ক্যাম্পেইনে সংগৃহীত এই রক্ত সরাসরি যুক্ত হয় থ্যালাসেমিয়া ও জীবনবিপন্নপ্রায় রোগীদের জন্য গঠিত ব্লাড ব্যাংকে। এবারের ক্যাম্পেইনের সমাপনী বক্তৃতায় রেসপন্স টিমের পক্ষ থেকে ঢাকার অন্যান্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও এ ধরনের ক্যাম্পেইন করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। দেশের প্রতিটি শহর-গ্রাম, পাড়া-মহল্লা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক ভিত্তিতে এমন রক্তদান কর্মসূচি আয়োজন করা গেলে থ্যালাসেমিয়া বা গুরুতর বিপদগ্রস্ত রোগীদের জন্য তা হতে পারে একটি স্বস্তির বার্তা।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত