অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার: ফাওজুল কবির খান

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ১১
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ১৬

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

শনিবার পতেঙ্গায় অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামের বেসরকারি চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেছেন, বিগত সরকার দেশের সব কাঠামো ধ্বংস করেছে। এমন কোনো কাঠামো নেই যে দুর্নীতি ছিল না। বর্তমান সরকার এসব সংস্কার নিয়ে কাজ করছে। সংস্কার শেষেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের সাহসী তরুণদের জন্য আমরা স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছি। এই জুলাই অভ্যুত্থানে আমাদের প্রায় এক হাজারের বেশি ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। অনেকে এখনো হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। অনেকে পঙ্গু হয়েছেন। যাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব নয়।

ফাওজুল কবির খান বলেন, বিগত সরকার দেশের সব কাঠামো ধ্বংস করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের সরকার খুব নির্মমভাবে ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। তারা রাষ্ট্রের সব কাঠামো ধ্বংস করেছে। বিশেষ করে বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রায় সব কাঠামো। প্রতিটি সেক্টরে ছিল দুর্নীতির আখড়া। ওই সরকার সাধারণ জনগণের মতামতকে কোনো গুরুত্ব দিত না। তাদেরকে অধিকারহীন করে রেখেছিল। শেষ তিনটি নির্বাচনে মানুষের কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি। মানব ইতিহাসে এমন নিকৃষ্ট ঘটনা আর দ্বিতীয়টি নেই।

তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার পতনের পর অন্তবর্তী সরকার সংস্কার করছে। এই সংস্কারে সময় প্রয়োজন। কারণ সবকিছু পতিত সরকার ধ্বংস করে দিয়েছেন। আমরা এখন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন নিয়ে কাজ করছি।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এই আন্দোলনের অংশীদার। আপনাদের কারণে স্বৈরাচার সরকার পতন হয়েছে। আপনারা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ঠিক কা্জটি করে মানুষকে মুক্ত করেছেন।

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন শিল্পগ্রুপ ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী (সিইও) কিহাক সুং। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আপনাদের রয়েছে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে আপনারা নিজেদের যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তুলবেন। এ বিশ্ব আপনার। আপনারা এ বিশ্বকে শাসন করার যে সুযোগ রয়েছে তা কাজে লাগাবেন।

তিনি বলেন, কোরিয়ায় আমি বাংলাদেশী হিসেবে পরিচিত। আর চট্টগ্রামে চিটাগনিয়ান হিসেবে। চট্টগ্রামবাসীর কারণেই আমাদের সক্ষমতা হয়েছে। আমি নিজেকে চট্টগ্রামের মানুষ ভেবে গর্ববোধ করি। কোরিয়া-বাংলাদেশের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করছে এ অ্যাপারেলস সেক্টর।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে তোমরা আলো ছড়াবে। দক্ষ লিডারশীপের মাধ্যমে দেশকে নেতৃত্ব দিবে। পুরো বিশ্ব তোমাদের সামনে। নেতৃত্ব দিতে হবে তোমাদের।

সিআইইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ নুরুল আবসারের সভাপতিত্বে সমাবর্তনে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুন আখতার, সিআইইউর প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্ট এডুকেশন, সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট (ইসটিসিডিটি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকারিয়া খান, সিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব প্রমুখ।

এসময় বক্তারা গ্রাজুয়েটদের জন্য শুভ কামনা জানান এবং কর্মজীবনে নিজেদের প্রজ্ঞা মেধা দিয়ে সফলতা কামনা করেন।

সিআইইউ’র বিভিন্ন অনুষদের মোট দু’হাজার ১৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। তারমধ্যে এক হাজার ৪৫২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রকৌশল, আইন এবং লিবারেল আর্টস অনুষদ থেকে পাস করা স্নাতক এবং ৭৩৭ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠানে ১৪ জন শিক্ষার্থীকে তাদের স্ব স্ব প্রোগ্রামে অসামান্য কৃতিত্বের ফলস্বরূপ ‘টপ অ্যাচিভার্স’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

এমএস

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত