ছিনতাই-চাঁদাবাজি বরদাস্ত করা হবে না: উপদেষ্টা আসিফ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮: ৫১
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮: ৫২

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভুঁইয়ার সজীব বলেছেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে ছিনতাই-চাঁদাবাজি সন্ত্রাসসহ যারাই অপরাধে জড়িত হবে, এটা বরদাস্ত করা হবে না। শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নেবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার রাত পৌনে ১টার দিকে বিজয় স্বরণীতে রাজধানীর যৌথ বাহিনীর টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন টেলিগ্রাম গ্রুপ থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যমের গ্রুপগুলোতে দেখা যায় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটনোর জন্য সরকারকে উৎখাত করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা দেখছি রাজনৈতিক দলের কেউ কেউ অস্ত্র হাতে ঘোষণা দিয়ে চাঁদাবাজি করছে। এগুলো একটা এনার্কি তৈরি করে। রাজনৈতিক জায়গা থেকে যদি এগুলো হয় তাহলে সরকারের পক্ষে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য।

তিনি বলেন, যেসব স্থানে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা বেশি ঘটছে, সেখানে অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

উপদেষ্টা জানান, সেপ্টেম্বর থেকে ক্রমান্বয়ে বড় ধরনের অপরাধগুলো কমে আসছে। আপনারা পরিসংখ্যান দেখলে সেটা বুঝতে পারবেন।

তিনি বলেন, রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশ এবং বিভিন্ন বাহিনীর কার্যক্রম পরিদর্শন করে দেখেছি। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। জনমনে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল আশা করি খুব দ্রুতই সেখান থেকে উত্তরণ করা সম্ভব হবে।

ব্রিফিংয়ে ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী বলেন, চিহ্নিত চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের ব্লক রেইড দিয়ে ধরা হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় রাজধানীর ৬৫ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজন যানবাহন গুলো চেক করা হচ্ছে। এসব পয়েন্টে চিহ্নিত, সন্দেহভাজন মনে হলে চেক করে যারা অপরাধ করছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, মানুষকে নিরাপত্তাহীনতা থেকে বের করানোর জন্য আমরা আরো বেশি একটিভ হচ্ছি। মোহাম্মদপুরে পোঙ্গা বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানে চিহ্নিত অপরাধ দের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে রাজধানীতে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। পুলিশের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, সিটিটিসি, এটিইউ, বিজিবি ও অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় যৌথ অভিযানে বিভিন্ন স্থানে ব্লক রেইড দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ৬৪টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রকৃতপক্ষে অপরাধের সংখ্যা অতীতের তুলনায় বেশি নয়। তিনি বলেন, আগে অপরাধ ঘটলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসত, কিন্তু এখন অনেকেই শুধু ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। তিনি নগরবাসীকে অপরাধ দমনে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় ডিএমপি কমিশনার আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। তাই কোনো অপরাধীকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করুন।

জামিনে মুক্ত হয়ে আসা সন্ত্রাসীদের গতিবিধি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, অনেকেই আগের দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আবারও অপরাধে জড়াচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নজরদারিতে রেখেছে এবং দ্রুত আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত