জনতা ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভুয়া কাগজপত্র, ক্ষমতার অপব্যবহার ও পরস্পর যোগসাজশে ৯ হাজার ৪২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাত এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
দুদক জানায়, এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ মঞ্জুরীপত্রের শর্ত ভঙ্গ, অনুমোদনহীন সীমাতিরিক্ত ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড সুবিধা সৃষ্টি, প্রয়োজনীয় গ্যারান্টি ছাড়া ঋণ গ্রহণ, তুলনামূলক অল্প এফডিআর সংরক্ষণ, নিজস্ব গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে আমদানি করে নির্দেশনা ভঙ্গ, নির্ধারিত সময়ে ঋণ আদায়ে ব্যর্থতা, মর্টগেজকৃত সম্পত্তির অতিমূল্যায়ন, কম সহায়ক জামানত গ্রহণসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও আত্মসাৎ করেছে।
দুদক আরো জানিয়েছে, এ কাজে অবৈধভাবে সহযোগিতা করেছে জনতা ব্যাংক পিএলসি’র সাধারণ বীমা ভবন করপোরেট শাখা, আগ্রাবাদ শাখা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় ও প্রধান কার্যালয়ের ক্রেডিট কমিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
দুদকের তদন্তে জনতা ব্যাংক পিএলসি থেকে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৯ হাজার ৪২৮ কোটি ৫৯ লাখ ৬৩ টাকার ঋণ আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিষ্ঠানভেদে অভিযোগের বিবরণ
এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের পরিচালকসহ ৩২ জন ২ হাজার ২৯৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানিয়েছে দুদক, যা তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এককভাবে সর্বোচ্চ আত্মসাৎ।
এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মোট ৩৬ জনের বিরুদ্ধে ২ হাজার ৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা পাঁচটির মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের পরিচালকসহ মোট ৩২ জন জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের ১ হাজার ১৫২ কোটি ৫১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের ৩২ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ২ হাজার ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেডের এই প্রতিষ্ঠানের ৩১ জন জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের ১ হাজার ৯৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

