জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ০১
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১: ৩৬

‘আমলাতন্ত্রের ঐতিহ্য রক্ষা এবং দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে নানামুখী চক্রান্ত মোকাবিলা’র দাবিতে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সমাবেশ করেছেন। সমাবেশ থেকে জনপ্রশাসন সংস্কার কশিমনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর অপসারণ এবং নতুন করে কমিশন গঠনের দাবি করেন তারা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধসহ হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ফিরে পাওয়া ফ্যাসিবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের সুবিধাভোগীরা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সংস্কার কমিশন তাদের ফাঁদে পা দিয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।

বিজ্ঞাপন

বুধবার রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে এ সমাবেশে জড়ো হন প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এবং বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন প্রর্যায়ের বিপুলসংখ্যক সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা অংশ নেন। সমাবেশে কর্মকর্তা সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ কমিশন পুনর্গঠনের দাবিও জানান।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এবং বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি এ বি এম আব্দুস সাত্তার প্রশাসনের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। মুয়ীদ কমিশনের বিভিন্ন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে আলোচকরা গত ১৭ ডিসেম্বর সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর একটি অভিমতের তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন, কমিশন প্রধান জনপ্রশাসনে উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রাখার কথা বলেছেন তা বৈষম্যমূলক, অযৌক্তিক, ষড়যন্ত্রমূলক। এছাড়াও প্রশাসন ক্যাডারের বিরুদ্ধে অন্যান ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।

গতকাল সমাবেশ থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিলেরও দাবি করেন। তারা বলেন, ‘আদার্স ক্যাডার’ নামে পরিচিত ২৫ ক্যাডারের জন্য বর্তমানে যে ২৫ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে সেটাও বাতিল করে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য শতভাগ কোটা নিশ্চিত করার দাবি জানান। তাদের বক্তব্য, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশে কোনো কোটা পদ্ধতি থাকতে পারে না। তবে বক্তাদের কেউ কেউ বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৭৫ শতাংশ আর অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য ২৫ শতাংশের বিধান বহাল রাখার পক্ষে তাদের যুক্তি তুলে ধরেন।

সমাবেশে বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি এ বি এম আবদুস সাত্তার বলেন, ‘দেশের প্রশাসনিক কাঠামোকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা হচ্ছে। আমলাতন্ত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে সরকার দুর্বল হয়ে পড়বে। এ ধরনের ষড়যন্ত্র চলতে থাকলে আমরাও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।

প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য সরকারের গঠিত মুয়ীদ কমিশনের সমালোচনা করে আবদুস সাত্তার বলেন, শুরু থেকে মুয়ীদ চৌধুরী সাহেব বিতর্কিত ভূমিকা পালন করে আসছেন। আমরা তার অপসারণ চাই এবং নতুন করে কমিশন গঠনের দাবি করছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি পদত্যাগ না করলে আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

এর আগে গত মঙ্গলবার প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতি, পদায়ন ও বেতন-ভাতার ক্ষেত্রে সমমর্যাদার দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে। সামনে আরও কর্মসূচি পালন করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এসব ক্যাডারের কর্মকর্তা।

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এসব কর্মসূচি রাষ্ট্রের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র বলে জানান প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত