তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের জীবনযাত্রায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বর্তমানে দেশের ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ খানায় (পরিবার) মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রকাশিত ‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ ২০২৫-২৬’ এর প্রথম ত্রৈমাসিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৫) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটি প্রতি তিনমাস অন্তর এ ধরনের জরিপ করে। সর্বশেষ জরিপটি করা হয়েছে চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এতে ৬১ হাজার ৬৩২টি পরিবারের পাঁচ বছর বা তার বেশি বয়সী নাগরিকদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
বিবিএসের জরিপে দেখা যায়, বর্তমানে দেশের ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে স্মার্ট ফোন ব্যবহার হয়। ২০২৩ সালে ব্যবহারকারী ছিল ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ২০২৪–২৫ সালে ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। এ হিসেবে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে স্মার্ট ফোন ব্যবহার সামান্য কমেছে। ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার বেড়েছে। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ ব্যক্তি মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সেটা ৮০ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও বেড়েছে। আগে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যবহার করলেও এখন ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।
জরিপের তথ্য মতে, মোবাইল ফোনের মালিকানা হিসেবে নারীরা পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও ব্যবহারকারী হিসেবে সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি। দেশে মোবাইল ফোনের পুরুষ ব্যবহারকারী ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ। মালিকানার দিক থেকে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষের নিজের একটি মোবাইল ফোন আছে, যেখানে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার ৫২ দশমিক ৮ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকেও নারীরা পিছিয়ে আছে। পুরুষদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, আর নারীরা ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
বিবিএসের জরিপে গ্রাম ও শহরের তুলনামূলক পর্যালোচনাও করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, মোবাইল ফোন ব্যবহারে গ্রাম ও শহরের হার প্রায় কাছাকাছি। তবে গ্রামের তুলনায় শহরে স্মার্ট ফোনের ব্যবহার বেশি। শহরের কমপক্ষে একটি স্মার্ট ফোন আছে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারে। অপরদিকে, গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারে একটি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করা হয়।
সংস্থাটি জানায়, জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য থেকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সূচকগুলোর অগ্রগতি জানার পাশাপাশি জেলাভিত্তিক ব্যক্তি ও খানাগুলোর মাধ্যমে আইসিটির ব্যবহার ও প্রয়োগ সম্পর্কে সর্বশেষ ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এ সেক্টরের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্ভব।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

