হাসিনার মামলার শেষ সাক্ষীর জবানবন্দি আজ, রায় কবে?

সাইদুর রহমান রুমি
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ৫৭
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০: ০৬

রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যালে সাবেক ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার সর্বশেষ ৫৪তম সাক্ষী হিসেবে তদন্তকারী কর্মকর্তা সাক্ষ্য প্রদান করবেন। এর মাধ্যমে মামলার জবানবন্দি তথা সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হবে। তার জবানবন্দির অংশবিশেষ ও জব্দকৃত ভিডিও প্রদর্শনী সরাসরি সম্পচার করা হবে বলে জানা গেছে। এদিন সাড়ে ১১টা থেকে বিচারকার্য সম্প্রচারের সম্ভাবনা আছে।

মামলার আইও মো. আলমগীরের জবানবন্দি ও জেরায় বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী গ্রহণ শেষ হলে নিয়ম অনুযায়ী আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষী হওয়ার কথা থাকলেও এই মামলায় আসামি পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে সেই সুযোগ নেই। তার পরিপ্রেক্ষিতে মামলায় যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শুরু হয়ে যাবে।

তবে কবে নাগাদ মামলা শেষ হতে পারে সেটি নিয়ে মুখ খুলছেন না সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য সাক্ষী গ্রহণ ও যুক্তি-তর্কসহ মামলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শেষ হতে আগামী মাস (অক্টোবর) পুরোটা লেগে যেতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রসিকিউটর জানান, সাবিক অবস্থা বিবেচনায় আশা করা যায়- শেখ হাসিনার বিচারিক রায় নভেম্বরে পাওয়া যাবে।

শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রের নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমীর হোসেন ইতিমধ্যে বিভিন্ন সাক্ষীর জেরায় বলেছেন, আসামি শেখ হাসিনা কোনো অপরাধ করেননি। তিনি কোনো গণহত্যার সাথে জড়িত নন।

আইনজীবী আমির হোসেন জানান, পলাতক থাকায় আইন অনুযায়ী সাফাই সাক্ষী দেওয়ার সুযোগ নেই। আসামিরা পলাতক না হলে নিজে সাফাই সাক্ষী হিসেবে কথা (সাক্ষী হতে) বলতে পারতেন। তাদেরকে আমি কোথায় পাবো। তারা তো পলাতক। তারা কোনো সাফাই সাক্ষী (ডিফেন্স ওইটনেস) দেওয়ার সুযোগ পাবেন না।

তবে ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, এই মামলায় যুক্তিতর্ক ভালোই জমবে। কারণ শেখ হাসিনা পলাতক হলেও তার আইনজীবী আদালতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। আর অন্যদিকে প্রসিকিউশনের পক্ষে সমস্ত ডকুমেন্টস এবং প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সবার দৃষ্টি এখন শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের দিকে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার পলায়নের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। যেটি এখন বিচারাধীন।

এ মামলায় পাঁচটি প্রধান অভিযোগ ও সাড়ে ৮ হাজারের বেশি নথিপত্র জমা পড়ে। এতে সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন তিনজনের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ চলতি বছরের ১ জুন দাখিলের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলো। এর পর অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার শুরু হয়। এর মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ৮ মাস পর প্রথম মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনো মামলার বিচারের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এ মামলায় ইতিমধ্যে অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন আওয়ামী লীগ সময়ে শেখ হাসিনাসহ তার ১৫ বছরের হত্যা, গুম,খুনসহ সবশেষ জুলাই গণহত্যায় এ মামলার রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত