আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

প্রমাণ পেয়েছে এফবিআই, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন

যুক্তরাষ্ট্রে ৩৬০০ কোটি টাকা পাচার হাসিনা-জয়ের

আমার দেশ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে ৩৬০০ কোটি টাকা পাচার হাসিনা-জয়ের

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জানিয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও অর্থ পাচারের প্রমাণ পেয়েছে তারা।

এফবিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে ৩০ কোটি ডলার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংকে পাচার করা হয়েছে। এই অর্থ পাচারের জন্য কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জ ও হংকংয়ের বিভিন্ন ব্যাংককে চ্যানেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি এফবিআইয়ের ব্রিটেন প্রতিনিধির বরাত দিয়ে এই তথ্য জানায় অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পস।

গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পসের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস বিশেষ এজেন্ট লা প্রিভোটের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখেন, ৩০ কোটি ডলার বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর এফবিআইয়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক মহাপরিচালক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেন এবং বিপুল পরিমাণ নথি হস্তান্তর করেন।

অপরদিকে ১ অক্টোবর ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইইউর তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মইনউদ্দিন আবদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধারে প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে কমিশনের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলেন।

এদিকে দুদক ইতোমধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ কোটি ডলার পাচারে সংযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদক কর্মকর্তারা গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পসকে জানান, শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করে দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর কাছে অধিকতর তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

গত ১৭ ডিসেম্বর দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, সংস্থাটি একইসঙ্গে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে জয় এবং হাসিনার বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র এক তদন্ত শুরু করেছে। নয়টি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৭ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করার অভিযোগে এই তদন্ত করা হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও আশ্রয়ণ প্রকল্প এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

অভিযোগ অনুযায়ী সাত বিলিয়ন ডলারের মধ্যে পাঁচ বিলিয়ন ডলারই রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

চলতি বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ১৫ বছরের শাসনের পর হাসিনার নেতৃত্বাধীন কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একে একে তার নামে দুর্নীতির অভিযোগগুলো সামনে আসতে থাকে।

দুদক কর্মকর্তাদের মতে, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম প্রথম নজরে আসে ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র বনাম রিজভী আহমেদের মামলায়। এফবিআইয়ের তদন্তে জয়ের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অসদাচরণ প্রকাশ পেয়েছে।

জয়ের নামে হংকং এবং কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি এবং লন্ডন ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর করার তথ্য বিশেষভাবে সামনে এসেছে।

এ বিষয়ে দুদকের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনাটি অনেকাংশে সত্য, আমরা ভবিষ্যতে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে পারি, এ বিষয়ে আমরা পরে সরাসরি কথা বলব।’

বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে সম্প্রতি প্রকাশিত শ্বেতপত্র অনুসারে, কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগ শাসনের অধীনে অবৈধ তহবিল প্রবাহের কারণে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বার্ষিক ১৬ বিলিয়ন ডলার লোকসান করেছে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন