ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নেতৃবৃন্দ। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ শোক প্রকাশ করেন।
গণতন্ত্র মঞ্চ, গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট, ১২ দলীয় জোট, সমমনা জোট, গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন একজন সাহসী, অকুতোভয় ও দেশপ্রেমিক নেতা। তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে একটি নতুন, মানবিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একটি মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি লড়াই চালিয়ে গেছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, তার মৃত্যুতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে সংগ্রাম তিনি করে গেছেন, তা দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে এগিয়ে নিতে হবে।
বিবৃতিতে শরিফ ওসমান হাদির বিদেহী রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। একই সঙ্গে তার হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। হত্যাকারীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে থাকলে তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বানও জানানো হয়।
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবিরের ওপর চালানো হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই ধরনের সহিংসতা ওসমান হাদির রাজনৈতিক সংগ্রামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পক্ষে ছিলেন।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ওপর হামলা একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। জাতি যখন শোকাহত, ঠিক সেই সময় প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানটের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে এবং একটি কূটনৈতিক স্থাপনাও আক্রান্ত হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড দেশের গণতান্ত্রিক চেতনাকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা ও পোড়ানোর ঘটনায় গভীর নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তারা বলেন, সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন অংশের অসংলগ্ন বক্তব্য এই সংকটময় পরিস্থিতি সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন জেএসডির সভাপতি আ.স.ম. আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন


হাদির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চায় জাতিসংঘ
দূতাবাস আক্রান্ত হলে বহির্শক্তি হস্তক্ষেপের সুযোগ পাবে