আমার দেশ অনলাইন
দেশের প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) একটি অপরিহার্য দলিল। এটি শুধু একজন নাগরিকের পরিচয়ই বহন করে না, বরং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সেবা গ্রহণের জন্যও এটি অত্যাবশ্যক। আর এ সংক্রান্ত তথ্য নথিভুক্তকরণ ও আইডি কার্ড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হলে প্রথমে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপনার নাম, জন্ম তারিখ, ক্যাপচা এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে একটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করতে হবে।
তারপর ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করে সাবমিট করতে হবে।
অনলাইনে ভোটার আবেদন সম্পন্ন হলে ফরমটি ডাউনলোড করুন। এখন ডাউনলোড করা আবেদন ফরমটি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে আপনার স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করুন। আবেদনের জটিলতা কমাতে কাগজপত্রগুলো সত্যায়িত করে নিতে পারেন।
আপনার জমা দেওয়া আবেদন ফরম এবং কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে আঙুলের ছাপ এবং চোখের রেটিনা স্কিন করে বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করার জন্য ডাকা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবং বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করার দুই সপ্তাহের মধ্যে অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। এসময়ের মধ্যে আপনাকে মোবাইলে মেসজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
আমরা এখানে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড করার প্রক্রিয়াটি সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো। সম্পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়াটি বিস্তারিতভাবে অর্থাৎ ধাপে ধাপে কীভাবে সম্পন্ন করতে হবে-সেটা দেখে নেওয়া যাক।
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য অনলাইনে আবেদন করার আগে আবেদনের শর্ত এবং নতুন ভোটার হতে কী কী লাগে সেসব সম্পর্কে জানা আবশ্যক।
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার কার্ড করার ক্ষেত্রে শর্ত
নতুন জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি শর্ত রয়েছে। আবেদন ফরম পূরণ করতে হলে ভোটার আবেদনের যোগ্য হতে হবে। যেমন-
আগে NID নিবন্ধন না করা
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। সেইসঙ্গে বয়স সর্বনিম্ন ১৬ বছর হতে হবে এবং এর আগে কোনো জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নিবন্ধন করা যাবে না। এখানে ১৬ বছর নিয়ে কেউ কেউ হয়তো বিভ্রান্ত হতে পারেন!আসলে বাংলাদেশে বয়স ১৬ বছর হলেই জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের পিডিএফ কপি পাওয়া যায়।
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশের নাগরিকরা দুটি উপায়ে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। তা হলো-
১) অনলাইনে ভোটার নিবন্ধন আবেদনের মাধ্যমে এবং
২) সরাসরি নির্বাচন অফিসে গিয়ে।
কয়েক বছর আগেও উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে হত। এছাড়া সরকারি উদ্যোগে ৫ বছর পর পর এলাকাভিত্তিক যে নতুন ভোটার নিবন্ধন ক্যাম্পেইন চলে সেই ক্যাম্পেইনেও নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়।
তবে এখানে আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে- নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি জানা। যাতে করে কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই ঘরে বসে নিজেই নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
অনলাইনে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন
অনলাইনে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে- প্রধম ধাপে ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমেই অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন পেজে চলে যান। আবেদন ফরমে আপনার নাম, জন্মতারিখ ও ক্যাপচা পূরণ করে ‘কন্টিনিউ বা বহাল’ বাটনে ক্লিক করুন।
এখন আপনার অ্যাকাউন্টের জন্য সচল থাকা একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে তা ভেরিফাই করতে বলা হবে। নম্বরটি দিয়ে বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করলেই সচল থাকা ওই মোবাইল নম্বরে ৬ সংখ্যার একটি OTP চলে যাবে। প্রথমবারে আপনার ফোনে OTP না গেলে পুনরায় পাঠান বাটনে ক্লিক করে আরেকটি কোডের জন্য অনুরোধ করতে পারেন। নেটওয়ার্ক সমস্যা কিংবা সার্ভার ত্রুটির কারণে মাঝেমধ্যে মেসেজ আসতে দেরি হতে পারে।
ছয় সংখ্যার ভেরিফিকেশন কোডের মেসেজ আসলে তা OTP ঘরে বসিয়ে বাটনে ক্লিক করুন। সঠিক ওটিপি দিয়ে সাবমিট করার পর নতুন একটি পেজ ওপেন হবে।
উল্লেখ্য, পরবর্তী সময়ে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের বিভিন্ন আপডেট আবেদন ফরমে দেওয়া ওই নম্বরেই মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে। এমনকি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের অ্যাকাউন্ট লগইন করার সময়ও এই মোবাইল নম্বরে ওটিপি পাঠানো হবে।
ইউজার নাম ও পাসওয়ার্ড বাছাই
নতুন পেজটি ওপেন হতেই আপনাকে এখন একটি ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- ইউজার নামটি ইউনিক হতে হবে এবং কমপক্ষে ৮ ডিজিটের হতে হবে। আপনার ইউজারনেম ইউনিক করার জন্য ইংরেজি অক্ষরের পাশাপাশি সংখ্যা ব্যবহার করতে পারেন। যদি Username Already Exists দেখায়, তাহলে আপনার ইউজার নামটি পরিবর্তন করে ইউনিক করার চেষ্টা করতে হবে।
ইউজার নামটি গৃহীত হলেই আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড দিতে হবে এবং সেটা মনে রাখতে হবে অথবা লিখেও রাখতে পারেন। ভবিষ্যতে আপনার এই অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে আইডি কার্ড ডাউনলোড বা সংশোধন করতে এই ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে প্রোফাইল সম্পন্নকরণ
অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন হয়ে গেলে এখন আপনার সেট করা ইউজার নাম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। লগইন হয়ে গেলে একটি ড্যাশবোর্ড দেখতে পাবেন।
এখন সার্ভারে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সাবমিট করতে প্রথমে এডিট বাটনে ক্লিক করুন। এবার আপনার ব্যক্তিগত তথ্যগুলো দিয়ে খালি ঘরগুলো পূরণ করুন।
এ ধাপে আপনার নাম (বাংলা), ইংরেজি নাম (স্বয়ংক্রিয়ভাবে থাকবে), লিঙ্গ, রক্তের গ্রুপ, জন্মনিবন্ধন নম্বর, জন্মতারিখ (স্বয়ংক্রিয়ভাবে থাকবে) এবং জন্মস্থান বাছাই করতে হবে।
অ্যাকাউন্ট নিবন্ধনের সময় নিজ নামের ইংরেজি বানান যেভাবে দিয়েছেন এবং জন্মতারিখ যা দিয়েছেন তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ে নেবে। আপনি চাইলেও এগুলো আর পরিবর্তন করা যাবে না।
যদি অ্যাকাউন্ট নিবন্ধনের সময় নিজ নামের ইংরেজি বানানে কিংবা জন্ম তারিখে কোনো ভুল করে থাকেন, তাহলে এই অ্যাকাউন্ট বাতিল করুন এবং আরেকটি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে সঠিক তথ্য দিয়ে নতুন একটি অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করুন।
বাবা-মায়ের তথ্য
নিজের তথ্য পূরণ করার পর বাবার তথ্য দিতে হবে। এখন বাবার নাম (বাংলা ও ইংরেজি) এবং বাবার এনআইডি নম্বর দিতে হবে।
আর বাবা মৃত হলে, তার এসব তথ্যের সঙ্গে মৃত অপশনে টিক মার্ক দিয়ে মৃত্যু সন লিখে দিতে হবে। মনে রাখবেন, যেসব ঘরের সঙ্গে লাল স্টার (*) মার্ক দেওয়া আছে, সেই ঘরগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
একইভাবে মায়ের তথ্যগুলোও পূরণ করতে হবে।
অভিভাবকের তথ্য
এবার আপনার আভিভাবকের তথ্য দিতে হবে। সাধারণত অভিভাবক হিসেবে বাবা অথবা মায়ের তথ্য দেওয়া হয়। তবে আপনার অভিভাবক অন্য কেউ হলে, এখানে তার তথ্য দিতে হবে। অভিভাবক হিসেবে আপনি যার তথ্য দিতে চান, তার নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিতে হবে।
এরপর আসবে বড় ভাই বা বোনের তথ্য দেওয়ার ঘর। তবে এটি অপশনাল। চাইলে দিতে পারেন না দিলেও সমস্যা নেই। খালি রাখতে পারেন।
বৈবাহিক অবস্থা
অবিবাহিত হলে ড্রপ ডাউন মেনু থেকে শুধু অবিবাহিত অপশনটি সিলেক্ট করুন, আর কোনো তথ্য দিতে হবে না। আর বিবাহিত হলে স্ত্রী/স্বামীর নাম লিখে দিতে হবে। একাধিক স্ত্রী থাকলেও তাদের তথ্য দেওয়ার অপশন রয়েছে। স্ত্রী মৃত হলে মৃত্যুর সন লিখে দিতে হবে।
তথ্যগুলো পূরণ করা হলে, পুনরায় যাচাই করে দেখুন-কোথাও ভুল রয়ে গেল কিনা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
অন্যান্য তথ্য
এবার আপনাকে অন্যান্য তথ্য পূরণ করতে হবে। এখানে অবশ্যই পূরণ করতে হবে এমন ঘরগুলো হলো-শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা এবং ধর্ম। আবেদনকারী কোনো ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধী হলে, তা অসমর্থতার ঘরে বাছাই করে দিতে হবে।
এ ধাপে যে তথ্যগুলো দিতে হবে, তা হলো-
এভাবে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে এ ধাপটি সম্পন্ন করতে হবে।
আবেদন সাবমিট
এবার সম্পূর্ণ আবেদন ফরমের তথ্যগুলো নিশ্চিত করে ফাইনাল সাবমিট করতে হবে। তবে যদি মনে হয় কোথাও কোনো ভুল করে ফেলেছেন, তাহলে পেছনে বা ব্যাক নামক বাটনে ক্লিক করে আগের ধাপে যেতে পারবেন। পুনরায় সঠিক তথ্য দিয়ে আপনার আবেদনটি চূড়ান্ত সাবমিট করতে হবে।
আবেদন কপি ডাউনলোড
অনলাইনে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার হওয়ার আবেদন সাবমিট হয়ে গেলে আপনার সামনে আবেদন সামারি বা ভোটার আবেদন কপি ডাউনলোডের জন্য একটি বাটন দেখতে পাবেন। ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করুন।
এখন এ আবেদন কপি প্রিন্ট করে এর সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আপনার স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিসে বা উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
আপনার আবেদন ফরম জমা দেওয়ার পর, উপজেলা বা জেলা নির্বাচন অফিস তা যাচাই-বাছাই করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনাকে বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি ও আঙুলের ছাপ) নেওয়ার জন্য ডাকা হবে। এর ১০ থেকে ১৫ দিন পর আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হলেই, আপনি অনলাইন থেকে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রটি ডাউনলোড করে নেবেন।
সব প্রক্রিয়া শেষ হলে পেয়ে যাবেন আপনার নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড।
দেশের প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) একটি অপরিহার্য দলিল। এটি শুধু একজন নাগরিকের পরিচয়ই বহন করে না, বরং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সেবা গ্রহণের জন্যও এটি অত্যাবশ্যক। আর এ সংক্রান্ত তথ্য নথিভুক্তকরণ ও আইডি কার্ড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হলে প্রথমে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপনার নাম, জন্ম তারিখ, ক্যাপচা এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে একটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করতে হবে।
তারপর ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করে সাবমিট করতে হবে।
অনলাইনে ভোটার আবেদন সম্পন্ন হলে ফরমটি ডাউনলোড করুন। এখন ডাউনলোড করা আবেদন ফরমটি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে আপনার স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করুন। আবেদনের জটিলতা কমাতে কাগজপত্রগুলো সত্যায়িত করে নিতে পারেন।
আপনার জমা দেওয়া আবেদন ফরম এবং কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে আঙুলের ছাপ এবং চোখের রেটিনা স্কিন করে বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করার জন্য ডাকা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবং বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করার দুই সপ্তাহের মধ্যে অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। এসময়ের মধ্যে আপনাকে মোবাইলে মেসজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
আমরা এখানে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড করার প্রক্রিয়াটি সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো। সম্পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়াটি বিস্তারিতভাবে অর্থাৎ ধাপে ধাপে কীভাবে সম্পন্ন করতে হবে-সেটা দেখে নেওয়া যাক।
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য অনলাইনে আবেদন করার আগে আবেদনের শর্ত এবং নতুন ভোটার হতে কী কী লাগে সেসব সম্পর্কে জানা আবশ্যক।
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার কার্ড করার ক্ষেত্রে শর্ত
নতুন জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি শর্ত রয়েছে। আবেদন ফরম পূরণ করতে হলে ভোটার আবেদনের যোগ্য হতে হবে। যেমন-
আগে NID নিবন্ধন না করা
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। সেইসঙ্গে বয়স সর্বনিম্ন ১৬ বছর হতে হবে এবং এর আগে কোনো জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নিবন্ধন করা যাবে না। এখানে ১৬ বছর নিয়ে কেউ কেউ হয়তো বিভ্রান্ত হতে পারেন!আসলে বাংলাদেশে বয়স ১৬ বছর হলেই জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের পিডিএফ কপি পাওয়া যায়।
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশের নাগরিকরা দুটি উপায়ে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। তা হলো-
১) অনলাইনে ভোটার নিবন্ধন আবেদনের মাধ্যমে এবং
২) সরাসরি নির্বাচন অফিসে গিয়ে।
কয়েক বছর আগেও উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে হত। এছাড়া সরকারি উদ্যোগে ৫ বছর পর পর এলাকাভিত্তিক যে নতুন ভোটার নিবন্ধন ক্যাম্পেইন চলে সেই ক্যাম্পেইনেও নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়।
তবে এখানে আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে- নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি জানা। যাতে করে কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই ঘরে বসে নিজেই নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
অনলাইনে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন
অনলাইনে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে- প্রধম ধাপে ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমেই অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন পেজে চলে যান। আবেদন ফরমে আপনার নাম, জন্মতারিখ ও ক্যাপচা পূরণ করে ‘কন্টিনিউ বা বহাল’ বাটনে ক্লিক করুন।
এখন আপনার অ্যাকাউন্টের জন্য সচল থাকা একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে তা ভেরিফাই করতে বলা হবে। নম্বরটি দিয়ে বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করলেই সচল থাকা ওই মোবাইল নম্বরে ৬ সংখ্যার একটি OTP চলে যাবে। প্রথমবারে আপনার ফোনে OTP না গেলে পুনরায় পাঠান বাটনে ক্লিক করে আরেকটি কোডের জন্য অনুরোধ করতে পারেন। নেটওয়ার্ক সমস্যা কিংবা সার্ভার ত্রুটির কারণে মাঝেমধ্যে মেসেজ আসতে দেরি হতে পারে।
ছয় সংখ্যার ভেরিফিকেশন কোডের মেসেজ আসলে তা OTP ঘরে বসিয়ে বাটনে ক্লিক করুন। সঠিক ওটিপি দিয়ে সাবমিট করার পর নতুন একটি পেজ ওপেন হবে।
উল্লেখ্য, পরবর্তী সময়ে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের বিভিন্ন আপডেট আবেদন ফরমে দেওয়া ওই নম্বরেই মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে। এমনকি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের অ্যাকাউন্ট লগইন করার সময়ও এই মোবাইল নম্বরে ওটিপি পাঠানো হবে।
ইউজার নাম ও পাসওয়ার্ড বাছাই
নতুন পেজটি ওপেন হতেই আপনাকে এখন একটি ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- ইউজার নামটি ইউনিক হতে হবে এবং কমপক্ষে ৮ ডিজিটের হতে হবে। আপনার ইউজারনেম ইউনিক করার জন্য ইংরেজি অক্ষরের পাশাপাশি সংখ্যা ব্যবহার করতে পারেন। যদি Username Already Exists দেখায়, তাহলে আপনার ইউজার নামটি পরিবর্তন করে ইউনিক করার চেষ্টা করতে হবে।
ইউজার নামটি গৃহীত হলেই আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড দিতে হবে এবং সেটা মনে রাখতে হবে অথবা লিখেও রাখতে পারেন। ভবিষ্যতে আপনার এই অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে আইডি কার্ড ডাউনলোড বা সংশোধন করতে এই ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে প্রোফাইল সম্পন্নকরণ
অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন হয়ে গেলে এখন আপনার সেট করা ইউজার নাম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। লগইন হয়ে গেলে একটি ড্যাশবোর্ড দেখতে পাবেন।
এখন সার্ভারে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সাবমিট করতে প্রথমে এডিট বাটনে ক্লিক করুন। এবার আপনার ব্যক্তিগত তথ্যগুলো দিয়ে খালি ঘরগুলো পূরণ করুন।
এ ধাপে আপনার নাম (বাংলা), ইংরেজি নাম (স্বয়ংক্রিয়ভাবে থাকবে), লিঙ্গ, রক্তের গ্রুপ, জন্মনিবন্ধন নম্বর, জন্মতারিখ (স্বয়ংক্রিয়ভাবে থাকবে) এবং জন্মস্থান বাছাই করতে হবে।
অ্যাকাউন্ট নিবন্ধনের সময় নিজ নামের ইংরেজি বানান যেভাবে দিয়েছেন এবং জন্মতারিখ যা দিয়েছেন তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ে নেবে। আপনি চাইলেও এগুলো আর পরিবর্তন করা যাবে না।
যদি অ্যাকাউন্ট নিবন্ধনের সময় নিজ নামের ইংরেজি বানানে কিংবা জন্ম তারিখে কোনো ভুল করে থাকেন, তাহলে এই অ্যাকাউন্ট বাতিল করুন এবং আরেকটি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে সঠিক তথ্য দিয়ে নতুন একটি অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করুন।
বাবা-মায়ের তথ্য
নিজের তথ্য পূরণ করার পর বাবার তথ্য দিতে হবে। এখন বাবার নাম (বাংলা ও ইংরেজি) এবং বাবার এনআইডি নম্বর দিতে হবে।
আর বাবা মৃত হলে, তার এসব তথ্যের সঙ্গে মৃত অপশনে টিক মার্ক দিয়ে মৃত্যু সন লিখে দিতে হবে। মনে রাখবেন, যেসব ঘরের সঙ্গে লাল স্টার (*) মার্ক দেওয়া আছে, সেই ঘরগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
একইভাবে মায়ের তথ্যগুলোও পূরণ করতে হবে।
অভিভাবকের তথ্য
এবার আপনার আভিভাবকের তথ্য দিতে হবে। সাধারণত অভিভাবক হিসেবে বাবা অথবা মায়ের তথ্য দেওয়া হয়। তবে আপনার অভিভাবক অন্য কেউ হলে, এখানে তার তথ্য দিতে হবে। অভিভাবক হিসেবে আপনি যার তথ্য দিতে চান, তার নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিতে হবে।
এরপর আসবে বড় ভাই বা বোনের তথ্য দেওয়ার ঘর। তবে এটি অপশনাল। চাইলে দিতে পারেন না দিলেও সমস্যা নেই। খালি রাখতে পারেন।
বৈবাহিক অবস্থা
অবিবাহিত হলে ড্রপ ডাউন মেনু থেকে শুধু অবিবাহিত অপশনটি সিলেক্ট করুন, আর কোনো তথ্য দিতে হবে না। আর বিবাহিত হলে স্ত্রী/স্বামীর নাম লিখে দিতে হবে। একাধিক স্ত্রী থাকলেও তাদের তথ্য দেওয়ার অপশন রয়েছে। স্ত্রী মৃত হলে মৃত্যুর সন লিখে দিতে হবে।
তথ্যগুলো পূরণ করা হলে, পুনরায় যাচাই করে দেখুন-কোথাও ভুল রয়ে গেল কিনা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
অন্যান্য তথ্য
এবার আপনাকে অন্যান্য তথ্য পূরণ করতে হবে। এখানে অবশ্যই পূরণ করতে হবে এমন ঘরগুলো হলো-শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা এবং ধর্ম। আবেদনকারী কোনো ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধী হলে, তা অসমর্থতার ঘরে বাছাই করে দিতে হবে।
এ ধাপে যে তথ্যগুলো দিতে হবে, তা হলো-
এভাবে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে এ ধাপটি সম্পন্ন করতে হবে।
আবেদন সাবমিট
এবার সম্পূর্ণ আবেদন ফরমের তথ্যগুলো নিশ্চিত করে ফাইনাল সাবমিট করতে হবে। তবে যদি মনে হয় কোথাও কোনো ভুল করে ফেলেছেন, তাহলে পেছনে বা ব্যাক নামক বাটনে ক্লিক করে আগের ধাপে যেতে পারবেন। পুনরায় সঠিক তথ্য দিয়ে আপনার আবেদনটি চূড়ান্ত সাবমিট করতে হবে।
আবেদন কপি ডাউনলোড
অনলাইনে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার হওয়ার আবেদন সাবমিট হয়ে গেলে আপনার সামনে আবেদন সামারি বা ভোটার আবেদন কপি ডাউনলোডের জন্য একটি বাটন দেখতে পাবেন। ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করুন।
এখন এ আবেদন কপি প্রিন্ট করে এর সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আপনার স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিসে বা উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
আপনার আবেদন ফরম জমা দেওয়ার পর, উপজেলা বা জেলা নির্বাচন অফিস তা যাচাই-বাছাই করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনাকে বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি ও আঙুলের ছাপ) নেওয়ার জন্য ডাকা হবে। এর ১০ থেকে ১৫ দিন পর আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হলেই, আপনি অনলাইন থেকে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রটি ডাউনলোড করে নেবেন।
সব প্রক্রিয়া শেষ হলে পেয়ে যাবেন আপনার নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড।
ভোটের দায়িত্ব পালনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। আপনাদের যে কাজের দায়িত্ব পড়ুক না কেন, সেটা আইনসম্মত, নিউট্রালি, প্রফেশনালি করবেন।
২ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার বিকেল ৫টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
৩ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যম পোর্টালে এখনো জুয়া ও অনিরাপদ কনটেন্টের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগেমসজিদ ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালা প্রণয়ন বিষয়ে কর্মশালা করেছে বাংলাদেশ মসজিদ মিশন। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কাটাবন সেন্ট্রাল পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এ কর্মশালা সভাপতিত্ব করেন মিশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন।
১০ ঘণ্টা আগে