ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি নির্বাচনি প্রচারণায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার পরপর তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়।
জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইসরাফিল ফরাজী জানিয়েছেন, মতিঝিলে প্রচার শেষ করে রিকশা দিয়ে যাচ্ছিলেন হাদি ভাই। যারা গুলি করেছে, তারা কয়েক দিন ধরে প্রচারে যুক্ত ছিল। কোনো রাজনৈতিক দলের পরিচয় দেয়নি। হাদি ভাইকে পছন্দ করে বলে তার কাছে আসছিলন এবং প্রচারে অংশগ্রহণ করতে চায় বলে জানায়।
তিনি বলেন, হাদি ভাই সবাইকে একসেপ্ট করে, তার কাছে যে আসে। সে মাস্ক খোলেনি। তাকে বারবার বলা হয়েছিল মাস্ক খুলতে। সে বলেছে, তার সমস্যা আছে। সেটা সিরিয়াসলি নেয়নি হাদি ভাই। এ কারণে সে মাস্ক পরাই ছিল।
তিনি বলেন, জুমার নামাজ পড়ে এখান দিয়ে যাচ্ছিল তারা। হাদির ভাইয়ের পেছনে আমাদের আরো দুইটা রিকশা ছিল। হাদি ভাইতের সাথে তার ভাই ছিলেন। তখন পাশ দিয়ে গুলি করে।
এর আগে ফেসবুক পোস্টে ফরাজী বলেন, অনুগ্রহ করে ছবি ছড়িয়ে দিন। কালো পাঞ্জাবি পড়া, গলায় চাদর। যেখানে পাবেন তাকে ধরে রাখুন। কেউ যেন ওকে মেরে না ফেলে। রমনা ডিসির সঙ্গে আলোচনা করে আরো কিছু আলামত আমরা পেয়েছি। খুনি যে দলেরই হোক রেহায় পাবে না।
এর আগে গত নভেম্বর মাসে শরিফ ওসমান হাদি দেশি-বিদেশি ৩০টি নম্বর থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। ১৪ নভেম্বর এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, তাকে হত্যা, তার বাড়িতে আগুনসহ তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের একজন সদস্য দাবি করেছেন, যারা ওসমান হাদির ওপর গুলি চালিয়েছে, তারা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তার নির্বাচনি প্রচারণার টিমে যোগ দিয়েছিল।
ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য মোহাম্মদ ওসামা বিবিসি বাংলাকে জানান, একটি মোটরসাইকেলে আসা দুইজনের মধ্যে একজন শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালায়। এই দুইজন ব্যক্তি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে হাদির প্রচারণার টিমে যোগ দিয়েছিল। মাঝখানে কিছুদিন তাদের দেখা না গেলেও, কয়েকদিন আগে তারা আবার এসে প্রচারণার কাজে যুক্ত হয়।
এদিকে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনার বিষয়ে ভিডিও ফুটেজ ও সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা বর্তমানে সব তথ্য যাচাই করে দেখছেন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মোহাম্মদ সেলিম জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
সন্ধ্যার দিকে হাদির অস্ত্রোপচার শুরু হয় এবং ঢাকা মেডিকেলের সিনিয়র চিকিৎসকরা এই অপারেশনে অংশ নেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়।


হাদির অপারেশনের পর যা বললেন ঢামেক পরিচালক
হাদিকে নেওয়া হচ্ছে এভারকেয়ার হাসপাতালে