এনআরএম প্ল্যাটফর্ম একটি মাইলফলক উদ্যোগ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৮

ডিজিটাল ন্যাশনাল রেফারেল মেকানিজম (এনআরএম) প্ল্যাটফর্ম মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সহায়তার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মাইলফলক উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

বিজ্ঞাপন

সোমবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রূপসী বাংলা গ্র্যান্ড বলরুম-২ এ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে পাচারের শিকার ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ, সুরক্ষা এবং সহায়তা করার জন্য ডিজাইনকৃত এনআরএম-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া, আইজিপি বাহারুল আলম বিপিএম প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক-১ অধিশাখার যুগ্মসচিব মু. জসীম উদ্দিন খান।

উপদেষ্টা বলেন, মানব পাচার এবং অভিবাসী চোরাচালান বিশ্বব্যাপী গুরুতর ও উদ্বেগজনক অপরাধ। ট্রানজিট এবং গন্তব্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশও এর ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। বাংলাদেশ সরকার সর্বদা এ অপরাধ মোকাবেলায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে একটি শক্তিশালী আইনি কাঠামো তৈরি করেছি। তবে আমরা এটাও স্বীকার করি যে মানব পাচারের শিকার ভুক্তভোগীরা সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সদস্য। তাদের সুরক্ষা প্রদান এবং পুনর্বাসন অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরো বলেন, পাচারের শিকার ব্যক্তিরা মানসিক আঘাত, শোষণ এবং সামাজিক বর্জনের সম্মুখীন হন। যদিও সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবা প্রদানকারী উভয় পক্ষই সহায়তা প্রদান করে, সমন্বয় এবং সময়োপযোগী রেফারেলের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। উপদেষ্টা বলেন এ চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিজিটাল এনআরএম তৈরি করেছে। এ প্ল্যাটফর্মটি ভুক্তভোগীদের আরো কার্যকরভাবে শনাক্তকরণ, অনুমোদিত পরিষেবা প্রদানকারীদের সাথে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ এবং একটি কাঠামোগত কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের অধীনে দ্রুত রেফারেল সেবা প্রদানে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, একটি একক ডিজিটাল কাঠামোর অধীনে পরিষেবাগুলিকে একীভূত করার মাধ্যমে, এনআরএম সমন্বয় বৃদ্ধি করবে, দক্ষতা উন্নত করবে এবং ভুক্তভোগীদের সহায়তায় জবাবদিহিতা জোরদার করবে। তিনি আরো বলেন, সিস্টেমটি ইতোমধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং এটি বাংলাদেশে ভুক্তভোগী-কেন্দ্রিক পরিষেবা প্রদানকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে রূপান্তরমূলক সম্ভাবনা প্রদর্শন করবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকার মানব পাচারের এ জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরো বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- মানব পাচারের অপরাধকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিদ্যমান আইন পর্যালোচনা এবং ২০২৬-২০৩০ সালের জন্য মানব পাচার সংক্রান্ত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, নতুন টিআইপি রিপোর্টিং এবং প্রত্যাবাসন ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের পাশাপাশি সিআইডিতে একটি বিশেষ তদন্ত ইউনিট প্রতিষ্ঠা, পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য তদন্ত নির্দেশিকা প্রবর্তন এবং সকল প্রাসঙ্গিক অংশীদারদের জন্য ভিকটিম শনাক্তকরণ নির্দেশিকা বাধ্যতামূলক করণ।

তিনি বলেন, এ পদক্ষেপসমূহের লক্ষ্য ন্যায়বিচার প্রদান, অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলা এবং ভিকটিমদের জন্য সামগ্রিক সহায়তা প্রদান করা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত