বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ বৃহস্পতিবার। এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনি সময়’। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির নেতৃত্বে ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ জুন ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। তবে আজ সরকারি ছুটি থাকায় ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, বায়ুদূষণে বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে। এ ছাড়া পানি ও মাটিসহ দেশে পরিবেশের সবই খুব খারাপ অবস্থায় আছে। পলিথিন ও প্লাস্টিক উৎপাদন এবং ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। প্লাস্টিক দূষণে নদীনালা, খালবিল ভরে যাচ্ছে। সমুদ্রের উপকূলবর্তী অঞ্চলও পলিথিনের কারণে নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া নানাভাবে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে। তাই জনসচেতনতা জরুরি।
বায়ুদূষণ
ঢাকাবাসী গত ৯ বছরে মাত্র ৩১ দিন নির্মল বাতাসে নিশ্বাস নিয়েছে। ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাওয়া ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ, গত ৯ বছরে ঢাকার বায়ুমানের সূচক বা একিউআইয়ের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এসব তথ্য জানিয়েছে। ক্যাপস বলছে, দেশে প্রতি বছরই বায়ুদূষণ আগের চেয়ে বেড়েছে।
শব্দদূষণ
বায়ুদূষণে নাকাল এ নগরে শব্দদূষণও ব্যাপক। শব্দদূষণ একটি গুরুতর পরিবেশগত সমস্যা হিসেবে বাংলাদেশে চিহ্নিত। বিশেষ করে ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকায় শব্দ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি। শব্দের প্রধান উৎস যানবাহন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২১-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী, আবাসিক এলাকায় শব্দের আদর্শ মান দিনে ৫৫ ডেসিবেল এবং রাতের ৪০ ডেসিবেল। সংস্থাটি বলছে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
পরিবেশবিদ আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার আমার দেশকে বলেন, হর্ন শুনে বোঝার উপায় নেই, কোনটি বৈধ আর কোনটি অবৈধ। কিন্তু আমরা যখন এটাকে ৬০ ডেসিবলের মধ্যে নিয়ে আসতে পারব, তখন হর্ন শুনেই বোঝা যাবে এটি ৬০-এর মধ্যে, নাকি ১০০ ডেসিবেল তৈরির মতো হাইড্রোলিক হর্ন।
পরিবেশ পদক
জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৪ দেওয়ার জন্য তিন ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে সরকার। পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষা ও প্রচার এবং পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পদক দেওয়া হবে। সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিবেশ পদক, ২০২৪ প্রদানের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় কমিটির সভায় এ মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে।
পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিভাগে অবদানের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার আজিজনগর গ্রামের বাসিন্দা মাহমুদুল ইসলামকে এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ঢাকার ধামরাইয়ের ‘স্নোটেক্স আউটারওয়্যার লিমিটেডকে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছে।
পরিবেশ বিষয়ক শিক্ষা ও প্রচার বিভাগে অবদানের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে চট্টগ্রামের সিডিএ আবাসিক এলাকার মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ‘ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট’ পদকের জন্য মনোনীত হয়েছে । এ ছাড়া পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অবদানের জন্য ব্যক্তিপর্যায়ে প্রফেসর ড. এম ফিরোজ আহমেদ এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) পদকের জন্য মনোনীত হয়েছে।

