
ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী

ঢাকার ধানমণ্ডি ৩২ নাম্বারের বাসাটি নতুন করে গুঁড়িয়ে, জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে জয় বাংলা করে দিয়েছে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে হাজারো, লাখো ছাত্র-জনতা। এতে সারাদেশের জনগণ খুশি হয়েছে। তারা দেশের আরো বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী বর্বর ফ্যাসিবাদের আইকন স্থাপনা, মুজিবের ম্যুরাল তথা বাস্তবে মূর্তিকে ধ্বংস করেছে। দেশের বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও অবস্থানের অসংখ্য নাম-না-জানা মানুষ অংশ নিয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, পুরো দেশবাসী প্রথমবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তির স্বাদ পেয়েছে ৫ আগস্ট, ২০২৪—ওই দিন ফ্যাসিস্ট হাসিনা পলায়নের পর। ৩৬ জুলাই ২০২৪-এ জুতা খেয়েছিল আওয়ামী-বাকশালী ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আধিপত্যবাদের দাসী ও ফ্যাসিবাদী সাঙ্গাতরা। দীর্ঘকালের গণশত্রু খুনি হায়েনাকে ও ফ্যাসিবাদকে আবার ভালো ধোলাই করেছে ছাত্র-জনতা ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ দিবাগত রাতে ফ্যাসিবাদের ৩২ নাম্বারের আইকন ধ্বংস করে এবং জোর করে চেপে বসা জাতির বাপ ও জাতির ঘাড়ে চেপে বসা লাই, লেট লুজ ও লিঞ্চিংয়ের বর্বরতা প্রত্যাখ্যানের স্মারক হিসেবে।
একনায়ক অসভ্যের মূর্তিকে ধ্বংস করে ওই রাতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। ‘চিরঞ্জীব মুজিব’, ‘সার্বভৌম মুজিব’-এর দ্বীনবিরোধী শির্ক, ব্যক্তিপূজা ও চেপে বসা ‘পিতার আসন’ ওই রাতেই ধূলিসাৎ হয়ে যায় একমাত্র আল হাইয়্যূ, আল কাইয়্যূম আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের চূড়ান্ত ও অপার করুণায়।
এর মাঝে আসে এক যুবক, সচ্ছল পরিবারের সদস্য। সে ইংরেজিতে অনার্স ও মাস্টার্স, আল-কুরআনের হাফিজ। বাংলা, ইংরেজি, আরবি ও উর্দু ভাষায় দক্ষ। অত্যন্ত স্মার্ট। ভালো ছাত্রত্ব নিয়ে সে বিসিএস পরীক্ষায় বসে প্রিলিমিনারি ও রিটেন সাফল্যের সঙ্গে শেষ করেছিল। কিন্তু ভাইভা পর্যন্ত পারেনি, কারণ তাকে কেবলই অনলাইনে লেখালেখির কারণে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে মিথ্যা মামলা দেয়। তারপর আয়নাঘর, হাজতবাস, অত্যাচার, মৃত্যুর মুখোমুখীকরণ ঘটে।
তাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হলে সে জবাবে কেবল দুই রাকা‘আত নফল সলাহ আদায়ের অনুরোধ করে, যা ফ্যাসিস্ট হাসিনার গোয়েন্দা দাসদের হতবাক করে। এসবের মধ্যেই সে সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করে ফেলে। একসময় আদালত থেকে রায়ের মাধ্যমে বেকসুর খালাস পায়। তত দিনে তার বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন শেষ, ব্যক্তিগত জীবন শেষ, পারিবারিক জীবন শেষ। এরপরও আল্লাহর ইচ্ছায় একজন মু’মিন হওয়ায় ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার পতনের কারণে প্রথমে সে আল্লাহর শুকরিয়া জানায় ২০২৪-এর ৫ আগস্ট। অতঃপর কয়েক মাস অতিবাহিত হয়।
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ দিবাগত রাতে জনতার সঙ্গে সেও যায় ৩২ নাম্বারে। সেখানে ফ্যাসিস্ট মুজিব ও তার কন্যার ‘দস্যু ভবনে’ সোফায় বসে উল্লাস করে। তারপর জনতা ওই সোফা পুড়িয়ে দেয়। যুবক এরপর ৩২ নাম্বারের জ্বলন্ত ছাদে উঠে পড়ে। সে তার সঙ্গে বহন করা ধবধবে সাদা রংয়ের কাপড়ের ওপর কন্ট্রাস্ট কালারে লিখিত কালেমার বাণীযুক্ত পতাকা আকাশের দিকে তুলে ধরে তার রবের এককত্ব তথা লা শরীক অস্তিত্বের ঘোষণা দেয়। কোন্ স্থানে এই কাজ করে ওই যুবক? এটা ধর্মনিরেপক্ষতা, হিন্দুত্ববাদ ও ইসলাম ধ্বংসের আকর ভবন। সেখানেই জ্বলন্ত আগুনের আলোতে কালেমার পতাকা উজ্জ্বল দেখা যায়। তা ছিল এক প্রতীকী বিরল মুহূর্ত। ওই যুবকের আক্বীদাহ ও আবেগ তখন যেন তার আত্মগণ্ডির সীমা ছাড়িয়ে আদিগন্ত বাংলাদেশের অযুত বনি আদমের অন্তর হয়ে ওঠে।
গুম, খুন, দখল, লুট, পাচার, দম্ভ, অনাচার, বেআইনি অপকর্ম, পৈতৃক তালুকদারি, ইতিহাস বিকৃতি, ক্ষমতা পারিবারিকভাবে ও এককভাবে কুক্ষিগতকরণ এবং ভয়তাল দেখানোর পরও এ দেশের লড়াকু ছাত্র-জনতা ৩৬ জুলাই সুযোগ পেয়েও অনেকটা উপেক্ষা করেছিল শাখামৃগ, সারমেয় ও বরাহ জীবকুলের আত্মসাতের টাকায় গড়ে ওঠা একনায়কত্ব ও ফ্যাসিবাদের প্রতীক ও বাস্তবে মূর্তিপূজা ও হিন্দুত্ববাদী দাসত্ব প্রতিষ্ঠার আইকন ওই ভবনটিকে চূড়ান্তভাবে গুঁড়িয়ে না দিয়ে।
কিন্তু দ্বিতীয় দফায় তারা আর ছাড় দেয়নি। কেননা ওই ভবন পরিণত হয়েছিল আমাদের রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা বিকিয়ে দেওয়ার, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদের পদতলে সঁপে দেওয়ার প্রামাণ্য শ্বাপদের আস্তানা হিসেবে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সাত দফা গোপন চুক্তি এবং ১৯৭২ সালে মুজিব কর্তৃক ভারতের সঙ্গে কৃত ২৫ বছরের গোলামির চুক্তি এদেশের ছাত্র-জনতা মেনে নেয়নি।
তারা রক্ষীবাহিনীকে যেমন মেনে নেয়নি, তেমনি ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীদের দাদাগিরিও সহ্য করতে রাজি থাকেনি। তারা বাকশালী ফ্যাসিবাদকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। এজন্য ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫, ১৯৯৬ থেকে জুন ২০০১ এবং ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ইতিহাস স্মরণে রাখুন। ভুলে যাবেন না, নতুবা ফ্যাসিবাদ পালালেও ফিরে আসবে। যা হোক, বিপ্লবী ছাত্র-জনতা উদারতা দেখিয়েছে প্রথম দফায়। কিন্তু যখন তারা খুনি হাসিনার চট করে ঢুকে যাওয়ার ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘোষণা শুনল; যখন তারা দেখল যে, ঘরে-বাইরে ভারতীয় ও আওয়ামী দালালরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে, চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে; যখন তারা খুনি হাসিনার ভাষণদানের ইতর ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ উসকানির ঘোষণা শুনল, তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা তাদের চরম ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাল। স্মরণে রাখতে হবে, ছয় মাস পরে যখন ওই ভবন ছাত্র-জনতা আক্রমণ করল, তখন তাদের ধৈর্যের শেষ সীমা অতিক্রম করে গিয়েছিল।
কেননা বিগত ছয় মাস সীমান্তের ওপারে হিন্দুত্ববাদী, আধিপত্যবাদী তস্করদের কোলে বসে, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে পালিয়ে যাওয়া খুনি হাসিনা তার গুণ্ডা-ডাকাত বাহিনীসহ বারংবার বাংলাদেশে অন্তর্ঘাত চালাচ্ছিল। তদুপরি শেখ হাসিনা ওই ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ নতুন করে জাতির উদ্দেশে তার প্রবলতম ঘৃণা উৎপাদনকারী নষ্টামিপূর্ণ ভাষণ দেওয়ার অগ্রিম উষ্মা-প্রকাশক ঘোষণা দেয়। একইসঙ্গে হিন্দুত্ববাদী কসাই মোদির সরকার ও মিডিয়ার ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। হিন্দুস্তানের চরম দাঙ্গাবাজ ও মুসলিম গণহত্যাকারী কসাই মোদির সরকার ও তাদের আওয়ামী সেবাদাসীর বিষয়টি বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে নতুন করে ঐক্যবদ্ধ করে ফেলে। আওয়ামী দাসীর অপতৎপরতা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতাকে ভয়ানকভাবে ক্ষুব্ধ করে।
ফলে তারা হাজারে হাজারে সংখ্যায় উপস্থিত হয়ে লাখে লাখে পরিণত হয়ে গুঁড়িয়ে দেয় ৩২ নাম্বারের আস্তানা আইকনটি। হাতুড়ি-শাবল দিয়ে, এমনকি হাত দিয়ে ভাঙা শুরু করে। ৩২ নাম্বার নামক অসভ্যতার ও বর্বরতার গণশত্রুর অবস্থানের ও দেশ বেচে দেওয়ার আসল খলনায়ক ফ্যাসিস্ট মুজিবের মূর্তিকে ধ্বংস করতে সবশেষে রাষ্ট্রশক্তির ও সেনা কর্তৃপক্ষের বাধা উপেক্ষা করে লাখো জনতা নিয়ে আসে বুলডোজার এবং ধ্বংসলীলার পরিকল্পনা পূর্ণ করে উল্লাসে ফেটে পড়ে। সারা দেশে অভূতপূর্ব আনন্দ উৎসব করে মানুষ। ওই যুবকটিও তার বন্ধুদের নিয়ে রেস্তোরাঁয় ভোজন উৎসব করে। ঠিক ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এবং ৫ আগষ্ট ২০২৪-এর মতো রাস্তায় নেমে আসে ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ ব-দ্বীপের পুরো ভূগোলের জনগণ। সেই রাতে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ফ্যাসিস্ট মুজিব ও হাসিনার নামফলক, মূর্তি ও আইকন ধ্বংস করা হয়।
এদিকে এ নিয়ে কিছু আওয়ামী কুশীল পত্রিকা, মিডিয়া ও সংগঠন চিপায়-চাপায় কিংবা কেউ কেউ প্রকাশ্যে দুঃখে ভেঙে পড়ছে। কেউবা ‘মব জাস্টিস’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে ফ্যাসিবাদী ৩২ আইকন ধ্বংস করার বিষয়কে। তাদের কি মনে নেই লগি-বৈঠার তাণ্ডব, শাপলা তাণ্ডব, শাহবাগী তাণ্ডব, বিডিআর তাণ্ডবসহ জুলাই ২০২৪ সর্বশেষ তাণ্ডব? এর সবগুলোই তো ছিল ঘৃণ্যতম মব জাস্টিস ও অসভ্যতম লিনচিং।
আর গণশত্রুদের কি মনে নেই ১৯৭২ থেকে ’৭৫ পর্যায়ে কিংবা ১৯৯৬ থেকে জুন ২০০১, আর ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যায়ে সম্পূর্ণ ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমে সাড়ে তিন বছর, মাঝে পাঁচ বছর এবং শেষে ১৬ বছর ধরে প্রথমে ফ্যাসিস্ট মুজিব এবং পরে তার খুনি ফ্যাসিস্ট কন্যা দুই দফায় কী বীভৎস অত্যাচার, স্বৈরাচার, লুট, পাচার, অপমান ও লাঞ্ছনা করেছে গণমানুষকে? ফ্যাসিস্ট মাফিয়া রাণী চরম স্বেচ্ছাতান্ত্রিক, ব্যক্তিক ও পারিবারিক ডাকাতি ও অপশাসন চালিয়েছে। অনাচার, অপপ্রচারসহ রাষ্ট্র, প্রশাসন ও অস্ত্রধারীদের ব্যবহার করে কত হাজার হত্যা করেছে, কত অসংখ্য মানুষকে পঙ্গু করেছে, কত মা-বোনকে বিধবা করেছে এবং কত সন্তানকে ইয়াতিম বানিয়েছে, তার হিসেব নেই। শুধু ২০২৪-এর ৩৬ দিনের বীভৎস অত্যাচার ও গণহত্যার জন্যই তো কেবল হাসিনার গোষ্ঠী, তার পোষা গুণ্ডা, ডাকাত ও সাঙ্গাতদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া ন্যায়ের দাবি।
এদেরকে চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধকরণ, এমনকি নিশ্চিহ্নকরণ অতি আবশ্যক জাতীয় কর্তব্য। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলি এ নিয়ে বল চালাচালির খেলা খেলছে। দখলদারি চেতনার রাজনীতিবিদদের কেউ কেউ নিজেদেরকে খুবই স্মার্ট ও দক্ষ ভাবলেও জনচোখে তাদের উদ্দেশ্য উলঙ্গ হয়ে পড়েছে। কাজেই জনগণের দায়িত্ব এই কুশীল খেলোয়াড়দের বয়কট করা, মিডিয়ার ফ্যাসিবাদী দোসরদের বিরুদ্ধাচরণ করা এবং আওয়ামী গুণ্ডাদের পরিত্যাজ্যকরণ-সহ ভোটের মাঠে সুযোগ পাওয়া মাত্র কালেক্টিভ মেমোরি থেকে রিকালেক্ট করে বংশদণ্ড প্রদান করা, কিংবা সুযোগ পেলে ‘না-ভোট’ দিয়ে বয়কট করা। ফ্যাসিস্টদের দোসরদের মনে রাখতে হবে, তারা দীর্ঘকাল ধরে কত বেশি ঘৃণ্য অপরাধ করেছে জনগণের বিরুদ্ধে। গণশত্রু পলাতক আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল, গোপালি শেখ পরিবারের পুরো গোষ্ঠীর নেতা ও সাঙ্গাতবৃত্ত—কারো জন্যই জনসম্মতির লেশমাত্র উপস্থিতি রয়েছে মনে করাটা মোটেই বিবেচনার বিষয় হতে পারে না। তাই ৩২ নাম্বারের ধ্বংস সমগ্র পৃথিবীর ইতিহাসের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী জনরোষের সাক্ষ্য বিবেচনায় পুরোপুরি যথার্থ।
তাই ৩২ নাম্বারের জমি এবং সেইসঙ্গে দুর্নীতির মাধ্যমে পাশের প্লটটি দখল করে গোপালি জমিদারি সম্প্রসারণের কথা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখে অবিলম্বে অধিগ্রহণ করে ওয়াক্ফ ঘোষণাকরত সেখানে বিশাল মসজিদ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা এবং সামনে ধানমণ্ডি লেইকে যে বিশাল স্থান দখল করে কাচের ঘর বানিয়ে ও সিট বসিয়ে আওয়ামী চোর-গুণ্ডাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা বাতিল করতে হবে। কেননা লেইকের এলাকা সরকারি জমি। আর ওই জমি কি মুজিব-হাসিনা-আওয়ামীদের বাপের তালুকদারি? এর পুরোটাই তাই ইসলামী গবেষণাকেন্দ্র ও ইসলামী সুবিশাল গ্রন্থের আকর লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠাসহ ইসলাম-সম্পর্কিত সেমিনার-সিম্পোজিয়াম-কনফারেন্স অনুষ্ঠান করার নিমিত্তে ছোট-বড় কয়েকটি অডিটোরিয়াম ও কমিউনিটি হল করে দিতে হবে। অন্য সব আন্দোলন-অভ্যুত্থানের মতো, মুক্তিযুদ্ধের মতো ২০২৪ সালের মনসুন রিভোলিউশন বা বর্ষা বিপ্লবেও জীবনদানের দিক থেকে প্রায় পুরোটা ঘটেছে এককভাবে মুসলিমদের দ্বারা।
১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে এ যাবৎ পাওয়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও নিহতদের তালিকা গভীরভাবে পরীক্ষা করে দেখলেও একইভাবে প্রায় পুরোটাই মুসলিমদের সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণের ও জীবনদানের সত্যে ভাস্বর। এটা আরো স্পষ্টভাবে দেখা যাবে যে, সর্বশেষ ২০২৪-এর ৩৬ জুলাইয়ের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের আগে-পরে নিহত তিন-চারজন বাদ দিয়ে সবাই মুসলিম।
কাজটা মূলত মুসলিম জনসমাজ দ্বারাই হয়েছে। অতএব ভারতীয় দালালির ঠিকাদার হিন্দুত্ববাদের মূল কেন্দ্র, হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্ট মুজিব কর্তৃক ১৯৭১-এ পুরো দেশ, মানুষ ও জনপদকে অরক্ষিত রেখে স্বেচ্ছায় পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সঙ্গে পূর্ব যোগাযোগ মোতাবেক স্যুটকেইস গুছিয়ে ধরা-দান এবং গোপালি শেখ পরিবারকে সুরক্ষিত করে, আর তাও আবার দখলদারদের আতিথেয়তায় ধানমণ্ডিতে আরেক বাড়িতে মাসোহারাসহ সকল সুবিধার ব্যবস্থা করে তথাকথিত নেতার পলায়নের সাক্ষী ৩২-এর ওই ঘৃণ্য আইকন বাড়িটি। হিন্দুত্ববাদী ও তাদের দোসরদের চক্রান্তে জিয়াউর রহমান নিহত হলে ইতঃপূর্বে তার দয়ায় দেশে প্রবেশকারী দিল্লিদাসী হাসিনা ৩০ মে ১৯৮১-তে এক বস্ত্রে হিন্দুস্তানে পালাতে গিয়ে বিডিআরের হাতে বর্ডারে ধরা পড়েন।
তখন তাকে জেলে না ঢুকিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আবার ২০০৭-০৮ সালে ১/১১ সরকার প্রতিষ্ঠায় চক্রান্ত করে পরে স্বভাবমতো আরেকবার দেশ ছেড়ে পালান পলাতক লীগের মাফিয়াপ্রধান খুনি হাসিনা। আর ২০২৪-এর বর্ষা বিপ্লবের ঠিক আগে আগে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলে অঙ্গভঙ্গিসহ নর্তকী নৃত্য দিয়েও হাসিনা জানের ডরে হিন্দুত্ববাদী প্রভু কসাই মোদির কোলে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
একইভাবে কাউয়া ওবায়েদও ‘পালাবো না’ বলে ভাঁড়ামি করে শেষ পর্যন্ত তিন মাস বিবরে পালিয়ে থেকে উৎকোচ ও বিনিময় দিয়ে দুই আনুষ্ঠানিক অস্ত্রধারী গোষ্ঠীর পাহাড়ায় গিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন হাসিনার মতোই ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুস্তানি প্রভুর পদতলে। তাই পালানোর, বেইমানির, দেশদ্রোহিতার, গণশত্রুতার ও গণমানুষের দ্বীনবিরোধিতার আইকন ৩২ নাম্বার বাড়ি।
এ ছাড়া শেখ হাসিনা নিজে পালানোর তিন-চার দিন আগে ১৬ জন ঘনিষ্ঠতম আত্মীয়সহ মোট শতাধিক শেখ পরিবারের স্বজনকে বিদেশে ও ভারতে পালিয়ে চলে যেতে দিয়েছেন। সবশেষে তিনি আর তার বোন রেহানা পালিয়েছেন বহুসংখ্যক স্যুটকেইসে মালপানি, ডকুমেন্টস ও অত্যাধুনিক মোবাইল নিয়ে। এ ছাড়া ফ্যাসিস্ট হাসিনার নানা পর্যায়ের দোসরদের (সামরিকচক্র, পুলিশচক্র, বিজিবিচক্র, আমলাচক্র) সাহায্যে আরো কয়েক হাজার আওয়ামী মন্ত্রী, এমপি, নেতা, পাতি নেতাসহ সর্বপ্রকার কুকুরলীগীয় জানোয়ারগুলোও পালিয়েছে। এরা সারা দেশকে জেলখানা ও আয়নাঘর বানিয়েছিল।
তাই ১৯৭১-এর পলায়ন এবং ২০২৪-এর পলায়নের আঁতুরঘর ধ্বংস করে দিয়ে লাখো ছাত্র-জনতা সঠিক কাজ করেছে। দেশটা ২০ কোটি মানুষের। বাংলাদেশ কোনো গোষ্ঠী, কিছু রাজনৈতিক নেতা, সুশীল, সুযোগসন্ধানী ও মিডিয়ার ‘সাংঘাতিক’দের বাপের সম্পত্তি নয় যে, তাদের মেজাজ ও চটাচটিকে জনগণ ভয় পাবে, কিংবা বিবেচনায় আনবে।
২০২৪-এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের ওই ৩৬ দিনে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম গণহত্যা চালিয়েছেন খুনি হাসিনা এবং ফ্যাসিবাদী দেশঘাতক আওয়ামী লীগ। তাই তাদেরকে এদেশের জনগণ কেন সহ্য করবে? বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ, জনগণ, বিএনপি-জামাতসহ বিভিন্ন দলের প্রকৃত লড়াকু কর্মীদের বিবেচনার বিষয় হতে পারে না ৩২-এর জন্য কুম্ভীরাশ্রু দেখে তা নিয়ে গলে যাওয়া।
২০২৪-এর অভূকপূর্ব ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের নির্যাস ঘটনাসহ আগের সকল গৌরবময় আন্দোলন-সংগ্রামের প্রকৃত নায়ক দেশের নাম-না-জানা অগণিত মানুষ তথা বনি আদমকে সাক্ষী রেখে তাদের সামনে বারংবার লেখা, বক্তৃতা ও ভিডিওর মাধ্যমে এসব তথ্য তুলে ধরেছি যে, পৃথিবীতে কখনো কোনো দেশে ফ্যাসিবাদী পরাজিত শক্তিকে টিকিয়ে রাখা বা পুনর্বাসিত করা হয়নি।
সর্বশেষ দৃষ্টান্ত সিরিয়ার বাথ পার্টির নিষিদ্ধকরণ, বাশার আল আসাদের পলায়ন এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের শাস্তি ও নিধন। ফ্যাসিস্ট হাসিনা, তার আওয়ামী-বাকশালী দল এবং তাদের কুশীল দোসর-সহযোগীদের রাজনীতিতে, নির্বাচনে, রাষ্ট্রক্ষমতায়, সমাজজীবনে ও সংস্কৃতিতে চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। আর তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে আদালতের মাধ্যমে। এদের নিষিদ্ধকরণ ও নিশ্চিহ্নকরণ সবচেয়ে জরুরি প্রাধিকার এবং সময়ের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
ফ্যাসিবাদের উপস্থিতি ও পুনর্বাসন মানেই বাংলাদেশের সর্বনাশ। আর তাদের অনুপস্থিতি ও নিশ্চিহ্নকরণ মানেই বাংলাদেশের অস্তিত্বশীলতা ও স্বাধীনতা। বাংলাদেশের জনগণ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর দিবাগত রাতেই ৩২ সম্পর্কে তাদের ৩৬-এর স্পিরিট জানিয়ে দিয়েছে সারা দেশে এবং দেশের বাইরে। এখন যে বা যারা এর বিরুদ্ধে বলবে, উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তাদেরকে সর্বত্র ও সর্বপর্যায়ে চূড়ান্তভাবে রুখে দেওয়াই হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার নিশ্চিত ওয়াদা ও আমল।
প্রফেসর (অব.), রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকার ধানমণ্ডি ৩২ নাম্বারের বাসাটি নতুন করে গুঁড়িয়ে, জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে জয় বাংলা করে দিয়েছে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে হাজারো, লাখো ছাত্র-জনতা। এতে সারাদেশের জনগণ খুশি হয়েছে। তারা দেশের আরো বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী বর্বর ফ্যাসিবাদের আইকন স্থাপনা, মুজিবের ম্যুরাল তথা বাস্তবে মূর্তিকে ধ্বংস করেছে। দেশের বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও অবস্থানের অসংখ্য নাম-না-জানা মানুষ অংশ নিয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, পুরো দেশবাসী প্রথমবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তির স্বাদ পেয়েছে ৫ আগস্ট, ২০২৪—ওই দিন ফ্যাসিস্ট হাসিনা পলায়নের পর। ৩৬ জুলাই ২০২৪-এ জুতা খেয়েছিল আওয়ামী-বাকশালী ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আধিপত্যবাদের দাসী ও ফ্যাসিবাদী সাঙ্গাতরা। দীর্ঘকালের গণশত্রু খুনি হায়েনাকে ও ফ্যাসিবাদকে আবার ভালো ধোলাই করেছে ছাত্র-জনতা ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ দিবাগত রাতে ফ্যাসিবাদের ৩২ নাম্বারের আইকন ধ্বংস করে এবং জোর করে চেপে বসা জাতির বাপ ও জাতির ঘাড়ে চেপে বসা লাই, লেট লুজ ও লিঞ্চিংয়ের বর্বরতা প্রত্যাখ্যানের স্মারক হিসেবে।
একনায়ক অসভ্যের মূর্তিকে ধ্বংস করে ওই রাতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। ‘চিরঞ্জীব মুজিব’, ‘সার্বভৌম মুজিব’-এর দ্বীনবিরোধী শির্ক, ব্যক্তিপূজা ও চেপে বসা ‘পিতার আসন’ ওই রাতেই ধূলিসাৎ হয়ে যায় একমাত্র আল হাইয়্যূ, আল কাইয়্যূম আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের চূড়ান্ত ও অপার করুণায়।
এর মাঝে আসে এক যুবক, সচ্ছল পরিবারের সদস্য। সে ইংরেজিতে অনার্স ও মাস্টার্স, আল-কুরআনের হাফিজ। বাংলা, ইংরেজি, আরবি ও উর্দু ভাষায় দক্ষ। অত্যন্ত স্মার্ট। ভালো ছাত্রত্ব নিয়ে সে বিসিএস পরীক্ষায় বসে প্রিলিমিনারি ও রিটেন সাফল্যের সঙ্গে শেষ করেছিল। কিন্তু ভাইভা পর্যন্ত পারেনি, কারণ তাকে কেবলই অনলাইনে লেখালেখির কারণে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে মিথ্যা মামলা দেয়। তারপর আয়নাঘর, হাজতবাস, অত্যাচার, মৃত্যুর মুখোমুখীকরণ ঘটে।
তাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হলে সে জবাবে কেবল দুই রাকা‘আত নফল সলাহ আদায়ের অনুরোধ করে, যা ফ্যাসিস্ট হাসিনার গোয়েন্দা দাসদের হতবাক করে। এসবের মধ্যেই সে সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করে ফেলে। একসময় আদালত থেকে রায়ের মাধ্যমে বেকসুর খালাস পায়। তত দিনে তার বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন শেষ, ব্যক্তিগত জীবন শেষ, পারিবারিক জীবন শেষ। এরপরও আল্লাহর ইচ্ছায় একজন মু’মিন হওয়ায় ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার পতনের কারণে প্রথমে সে আল্লাহর শুকরিয়া জানায় ২০২৪-এর ৫ আগস্ট। অতঃপর কয়েক মাস অতিবাহিত হয়।
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ দিবাগত রাতে জনতার সঙ্গে সেও যায় ৩২ নাম্বারে। সেখানে ফ্যাসিস্ট মুজিব ও তার কন্যার ‘দস্যু ভবনে’ সোফায় বসে উল্লাস করে। তারপর জনতা ওই সোফা পুড়িয়ে দেয়। যুবক এরপর ৩২ নাম্বারের জ্বলন্ত ছাদে উঠে পড়ে। সে তার সঙ্গে বহন করা ধবধবে সাদা রংয়ের কাপড়ের ওপর কন্ট্রাস্ট কালারে লিখিত কালেমার বাণীযুক্ত পতাকা আকাশের দিকে তুলে ধরে তার রবের এককত্ব তথা লা শরীক অস্তিত্বের ঘোষণা দেয়। কোন্ স্থানে এই কাজ করে ওই যুবক? এটা ধর্মনিরেপক্ষতা, হিন্দুত্ববাদ ও ইসলাম ধ্বংসের আকর ভবন। সেখানেই জ্বলন্ত আগুনের আলোতে কালেমার পতাকা উজ্জ্বল দেখা যায়। তা ছিল এক প্রতীকী বিরল মুহূর্ত। ওই যুবকের আক্বীদাহ ও আবেগ তখন যেন তার আত্মগণ্ডির সীমা ছাড়িয়ে আদিগন্ত বাংলাদেশের অযুত বনি আদমের অন্তর হয়ে ওঠে।
গুম, খুন, দখল, লুট, পাচার, দম্ভ, অনাচার, বেআইনি অপকর্ম, পৈতৃক তালুকদারি, ইতিহাস বিকৃতি, ক্ষমতা পারিবারিকভাবে ও এককভাবে কুক্ষিগতকরণ এবং ভয়তাল দেখানোর পরও এ দেশের লড়াকু ছাত্র-জনতা ৩৬ জুলাই সুযোগ পেয়েও অনেকটা উপেক্ষা করেছিল শাখামৃগ, সারমেয় ও বরাহ জীবকুলের আত্মসাতের টাকায় গড়ে ওঠা একনায়কত্ব ও ফ্যাসিবাদের প্রতীক ও বাস্তবে মূর্তিপূজা ও হিন্দুত্ববাদী দাসত্ব প্রতিষ্ঠার আইকন ওই ভবনটিকে চূড়ান্তভাবে গুঁড়িয়ে না দিয়ে।
কিন্তু দ্বিতীয় দফায় তারা আর ছাড় দেয়নি। কেননা ওই ভবন পরিণত হয়েছিল আমাদের রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা বিকিয়ে দেওয়ার, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদের পদতলে সঁপে দেওয়ার প্রামাণ্য শ্বাপদের আস্তানা হিসেবে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সাত দফা গোপন চুক্তি এবং ১৯৭২ সালে মুজিব কর্তৃক ভারতের সঙ্গে কৃত ২৫ বছরের গোলামির চুক্তি এদেশের ছাত্র-জনতা মেনে নেয়নি।
তারা রক্ষীবাহিনীকে যেমন মেনে নেয়নি, তেমনি ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীদের দাদাগিরিও সহ্য করতে রাজি থাকেনি। তারা বাকশালী ফ্যাসিবাদকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। এজন্য ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫, ১৯৯৬ থেকে জুন ২০০১ এবং ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ইতিহাস স্মরণে রাখুন। ভুলে যাবেন না, নতুবা ফ্যাসিবাদ পালালেও ফিরে আসবে। যা হোক, বিপ্লবী ছাত্র-জনতা উদারতা দেখিয়েছে প্রথম দফায়। কিন্তু যখন তারা খুনি হাসিনার চট করে ঢুকে যাওয়ার ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘোষণা শুনল; যখন তারা দেখল যে, ঘরে-বাইরে ভারতীয় ও আওয়ামী দালালরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে, চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে; যখন তারা খুনি হাসিনার ভাষণদানের ইতর ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ উসকানির ঘোষণা শুনল, তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা তাদের চরম ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাল। স্মরণে রাখতে হবে, ছয় মাস পরে যখন ওই ভবন ছাত্র-জনতা আক্রমণ করল, তখন তাদের ধৈর্যের শেষ সীমা অতিক্রম করে গিয়েছিল।
কেননা বিগত ছয় মাস সীমান্তের ওপারে হিন্দুত্ববাদী, আধিপত্যবাদী তস্করদের কোলে বসে, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে পালিয়ে যাওয়া খুনি হাসিনা তার গুণ্ডা-ডাকাত বাহিনীসহ বারংবার বাংলাদেশে অন্তর্ঘাত চালাচ্ছিল। তদুপরি শেখ হাসিনা ওই ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ নতুন করে জাতির উদ্দেশে তার প্রবলতম ঘৃণা উৎপাদনকারী নষ্টামিপূর্ণ ভাষণ দেওয়ার অগ্রিম উষ্মা-প্রকাশক ঘোষণা দেয়। একইসঙ্গে হিন্দুত্ববাদী কসাই মোদির সরকার ও মিডিয়ার ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। হিন্দুস্তানের চরম দাঙ্গাবাজ ও মুসলিম গণহত্যাকারী কসাই মোদির সরকার ও তাদের আওয়ামী সেবাদাসীর বিষয়টি বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে নতুন করে ঐক্যবদ্ধ করে ফেলে। আওয়ামী দাসীর অপতৎপরতা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতাকে ভয়ানকভাবে ক্ষুব্ধ করে।
ফলে তারা হাজারে হাজারে সংখ্যায় উপস্থিত হয়ে লাখে লাখে পরিণত হয়ে গুঁড়িয়ে দেয় ৩২ নাম্বারের আস্তানা আইকনটি। হাতুড়ি-শাবল দিয়ে, এমনকি হাত দিয়ে ভাঙা শুরু করে। ৩২ নাম্বার নামক অসভ্যতার ও বর্বরতার গণশত্রুর অবস্থানের ও দেশ বেচে দেওয়ার আসল খলনায়ক ফ্যাসিস্ট মুজিবের মূর্তিকে ধ্বংস করতে সবশেষে রাষ্ট্রশক্তির ও সেনা কর্তৃপক্ষের বাধা উপেক্ষা করে লাখো জনতা নিয়ে আসে বুলডোজার এবং ধ্বংসলীলার পরিকল্পনা পূর্ণ করে উল্লাসে ফেটে পড়ে। সারা দেশে অভূতপূর্ব আনন্দ উৎসব করে মানুষ। ওই যুবকটিও তার বন্ধুদের নিয়ে রেস্তোরাঁয় ভোজন উৎসব করে। ঠিক ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এবং ৫ আগষ্ট ২০২৪-এর মতো রাস্তায় নেমে আসে ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ ব-দ্বীপের পুরো ভূগোলের জনগণ। সেই রাতে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ফ্যাসিস্ট মুজিব ও হাসিনার নামফলক, মূর্তি ও আইকন ধ্বংস করা হয়।
এদিকে এ নিয়ে কিছু আওয়ামী কুশীল পত্রিকা, মিডিয়া ও সংগঠন চিপায়-চাপায় কিংবা কেউ কেউ প্রকাশ্যে দুঃখে ভেঙে পড়ছে। কেউবা ‘মব জাস্টিস’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে ফ্যাসিবাদী ৩২ আইকন ধ্বংস করার বিষয়কে। তাদের কি মনে নেই লগি-বৈঠার তাণ্ডব, শাপলা তাণ্ডব, শাহবাগী তাণ্ডব, বিডিআর তাণ্ডবসহ জুলাই ২০২৪ সর্বশেষ তাণ্ডব? এর সবগুলোই তো ছিল ঘৃণ্যতম মব জাস্টিস ও অসভ্যতম লিনচিং।
আর গণশত্রুদের কি মনে নেই ১৯৭২ থেকে ’৭৫ পর্যায়ে কিংবা ১৯৯৬ থেকে জুন ২০০১, আর ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যায়ে সম্পূর্ণ ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমে সাড়ে তিন বছর, মাঝে পাঁচ বছর এবং শেষে ১৬ বছর ধরে প্রথমে ফ্যাসিস্ট মুজিব এবং পরে তার খুনি ফ্যাসিস্ট কন্যা দুই দফায় কী বীভৎস অত্যাচার, স্বৈরাচার, লুট, পাচার, অপমান ও লাঞ্ছনা করেছে গণমানুষকে? ফ্যাসিস্ট মাফিয়া রাণী চরম স্বেচ্ছাতান্ত্রিক, ব্যক্তিক ও পারিবারিক ডাকাতি ও অপশাসন চালিয়েছে। অনাচার, অপপ্রচারসহ রাষ্ট্র, প্রশাসন ও অস্ত্রধারীদের ব্যবহার করে কত হাজার হত্যা করেছে, কত অসংখ্য মানুষকে পঙ্গু করেছে, কত মা-বোনকে বিধবা করেছে এবং কত সন্তানকে ইয়াতিম বানিয়েছে, তার হিসেব নেই। শুধু ২০২৪-এর ৩৬ দিনের বীভৎস অত্যাচার ও গণহত্যার জন্যই তো কেবল হাসিনার গোষ্ঠী, তার পোষা গুণ্ডা, ডাকাত ও সাঙ্গাতদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া ন্যায়ের দাবি।
এদেরকে চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধকরণ, এমনকি নিশ্চিহ্নকরণ অতি আবশ্যক জাতীয় কর্তব্য। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলি এ নিয়ে বল চালাচালির খেলা খেলছে। দখলদারি চেতনার রাজনীতিবিদদের কেউ কেউ নিজেদেরকে খুবই স্মার্ট ও দক্ষ ভাবলেও জনচোখে তাদের উদ্দেশ্য উলঙ্গ হয়ে পড়েছে। কাজেই জনগণের দায়িত্ব এই কুশীল খেলোয়াড়দের বয়কট করা, মিডিয়ার ফ্যাসিবাদী দোসরদের বিরুদ্ধাচরণ করা এবং আওয়ামী গুণ্ডাদের পরিত্যাজ্যকরণ-সহ ভোটের মাঠে সুযোগ পাওয়া মাত্র কালেক্টিভ মেমোরি থেকে রিকালেক্ট করে বংশদণ্ড প্রদান করা, কিংবা সুযোগ পেলে ‘না-ভোট’ দিয়ে বয়কট করা। ফ্যাসিস্টদের দোসরদের মনে রাখতে হবে, তারা দীর্ঘকাল ধরে কত বেশি ঘৃণ্য অপরাধ করেছে জনগণের বিরুদ্ধে। গণশত্রু পলাতক আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল, গোপালি শেখ পরিবারের পুরো গোষ্ঠীর নেতা ও সাঙ্গাতবৃত্ত—কারো জন্যই জনসম্মতির লেশমাত্র উপস্থিতি রয়েছে মনে করাটা মোটেই বিবেচনার বিষয় হতে পারে না। তাই ৩২ নাম্বারের ধ্বংস সমগ্র পৃথিবীর ইতিহাসের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী জনরোষের সাক্ষ্য বিবেচনায় পুরোপুরি যথার্থ।
তাই ৩২ নাম্বারের জমি এবং সেইসঙ্গে দুর্নীতির মাধ্যমে পাশের প্লটটি দখল করে গোপালি জমিদারি সম্প্রসারণের কথা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখে অবিলম্বে অধিগ্রহণ করে ওয়াক্ফ ঘোষণাকরত সেখানে বিশাল মসজিদ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা এবং সামনে ধানমণ্ডি লেইকে যে বিশাল স্থান দখল করে কাচের ঘর বানিয়ে ও সিট বসিয়ে আওয়ামী চোর-গুণ্ডাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা বাতিল করতে হবে। কেননা লেইকের এলাকা সরকারি জমি। আর ওই জমি কি মুজিব-হাসিনা-আওয়ামীদের বাপের তালুকদারি? এর পুরোটাই তাই ইসলামী গবেষণাকেন্দ্র ও ইসলামী সুবিশাল গ্রন্থের আকর লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠাসহ ইসলাম-সম্পর্কিত সেমিনার-সিম্পোজিয়াম-কনফারেন্স অনুষ্ঠান করার নিমিত্তে ছোট-বড় কয়েকটি অডিটোরিয়াম ও কমিউনিটি হল করে দিতে হবে। অন্য সব আন্দোলন-অভ্যুত্থানের মতো, মুক্তিযুদ্ধের মতো ২০২৪ সালের মনসুন রিভোলিউশন বা বর্ষা বিপ্লবেও জীবনদানের দিক থেকে প্রায় পুরোটা ঘটেছে এককভাবে মুসলিমদের দ্বারা।
১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে এ যাবৎ পাওয়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও নিহতদের তালিকা গভীরভাবে পরীক্ষা করে দেখলেও একইভাবে প্রায় পুরোটাই মুসলিমদের সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণের ও জীবনদানের সত্যে ভাস্বর। এটা আরো স্পষ্টভাবে দেখা যাবে যে, সর্বশেষ ২০২৪-এর ৩৬ জুলাইয়ের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের আগে-পরে নিহত তিন-চারজন বাদ দিয়ে সবাই মুসলিম।
কাজটা মূলত মুসলিম জনসমাজ দ্বারাই হয়েছে। অতএব ভারতীয় দালালির ঠিকাদার হিন্দুত্ববাদের মূল কেন্দ্র, হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্ট মুজিব কর্তৃক ১৯৭১-এ পুরো দেশ, মানুষ ও জনপদকে অরক্ষিত রেখে স্বেচ্ছায় পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সঙ্গে পূর্ব যোগাযোগ মোতাবেক স্যুটকেইস গুছিয়ে ধরা-দান এবং গোপালি শেখ পরিবারকে সুরক্ষিত করে, আর তাও আবার দখলদারদের আতিথেয়তায় ধানমণ্ডিতে আরেক বাড়িতে মাসোহারাসহ সকল সুবিধার ব্যবস্থা করে তথাকথিত নেতার পলায়নের সাক্ষী ৩২-এর ওই ঘৃণ্য আইকন বাড়িটি। হিন্দুত্ববাদী ও তাদের দোসরদের চক্রান্তে জিয়াউর রহমান নিহত হলে ইতঃপূর্বে তার দয়ায় দেশে প্রবেশকারী দিল্লিদাসী হাসিনা ৩০ মে ১৯৮১-তে এক বস্ত্রে হিন্দুস্তানে পালাতে গিয়ে বিডিআরের হাতে বর্ডারে ধরা পড়েন।
তখন তাকে জেলে না ঢুকিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আবার ২০০৭-০৮ সালে ১/১১ সরকার প্রতিষ্ঠায় চক্রান্ত করে পরে স্বভাবমতো আরেকবার দেশ ছেড়ে পালান পলাতক লীগের মাফিয়াপ্রধান খুনি হাসিনা। আর ২০২৪-এর বর্ষা বিপ্লবের ঠিক আগে আগে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলে অঙ্গভঙ্গিসহ নর্তকী নৃত্য দিয়েও হাসিনা জানের ডরে হিন্দুত্ববাদী প্রভু কসাই মোদির কোলে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
একইভাবে কাউয়া ওবায়েদও ‘পালাবো না’ বলে ভাঁড়ামি করে শেষ পর্যন্ত তিন মাস বিবরে পালিয়ে থেকে উৎকোচ ও বিনিময় দিয়ে দুই আনুষ্ঠানিক অস্ত্রধারী গোষ্ঠীর পাহাড়ায় গিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন হাসিনার মতোই ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুস্তানি প্রভুর পদতলে। তাই পালানোর, বেইমানির, দেশদ্রোহিতার, গণশত্রুতার ও গণমানুষের দ্বীনবিরোধিতার আইকন ৩২ নাম্বার বাড়ি।
এ ছাড়া শেখ হাসিনা নিজে পালানোর তিন-চার দিন আগে ১৬ জন ঘনিষ্ঠতম আত্মীয়সহ মোট শতাধিক শেখ পরিবারের স্বজনকে বিদেশে ও ভারতে পালিয়ে চলে যেতে দিয়েছেন। সবশেষে তিনি আর তার বোন রেহানা পালিয়েছেন বহুসংখ্যক স্যুটকেইসে মালপানি, ডকুমেন্টস ও অত্যাধুনিক মোবাইল নিয়ে। এ ছাড়া ফ্যাসিস্ট হাসিনার নানা পর্যায়ের দোসরদের (সামরিকচক্র, পুলিশচক্র, বিজিবিচক্র, আমলাচক্র) সাহায্যে আরো কয়েক হাজার আওয়ামী মন্ত্রী, এমপি, নেতা, পাতি নেতাসহ সর্বপ্রকার কুকুরলীগীয় জানোয়ারগুলোও পালিয়েছে। এরা সারা দেশকে জেলখানা ও আয়নাঘর বানিয়েছিল।
তাই ১৯৭১-এর পলায়ন এবং ২০২৪-এর পলায়নের আঁতুরঘর ধ্বংস করে দিয়ে লাখো ছাত্র-জনতা সঠিক কাজ করেছে। দেশটা ২০ কোটি মানুষের। বাংলাদেশ কোনো গোষ্ঠী, কিছু রাজনৈতিক নেতা, সুশীল, সুযোগসন্ধানী ও মিডিয়ার ‘সাংঘাতিক’দের বাপের সম্পত্তি নয় যে, তাদের মেজাজ ও চটাচটিকে জনগণ ভয় পাবে, কিংবা বিবেচনায় আনবে।
২০২৪-এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের ওই ৩৬ দিনে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম গণহত্যা চালিয়েছেন খুনি হাসিনা এবং ফ্যাসিবাদী দেশঘাতক আওয়ামী লীগ। তাই তাদেরকে এদেশের জনগণ কেন সহ্য করবে? বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ, জনগণ, বিএনপি-জামাতসহ বিভিন্ন দলের প্রকৃত লড়াকু কর্মীদের বিবেচনার বিষয় হতে পারে না ৩২-এর জন্য কুম্ভীরাশ্রু দেখে তা নিয়ে গলে যাওয়া।
২০২৪-এর অভূকপূর্ব ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের নির্যাস ঘটনাসহ আগের সকল গৌরবময় আন্দোলন-সংগ্রামের প্রকৃত নায়ক দেশের নাম-না-জানা অগণিত মানুষ তথা বনি আদমকে সাক্ষী রেখে তাদের সামনে বারংবার লেখা, বক্তৃতা ও ভিডিওর মাধ্যমে এসব তথ্য তুলে ধরেছি যে, পৃথিবীতে কখনো কোনো দেশে ফ্যাসিবাদী পরাজিত শক্তিকে টিকিয়ে রাখা বা পুনর্বাসিত করা হয়নি।
সর্বশেষ দৃষ্টান্ত সিরিয়ার বাথ পার্টির নিষিদ্ধকরণ, বাশার আল আসাদের পলায়ন এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের শাস্তি ও নিধন। ফ্যাসিস্ট হাসিনা, তার আওয়ামী-বাকশালী দল এবং তাদের কুশীল দোসর-সহযোগীদের রাজনীতিতে, নির্বাচনে, রাষ্ট্রক্ষমতায়, সমাজজীবনে ও সংস্কৃতিতে চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। আর তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে আদালতের মাধ্যমে। এদের নিষিদ্ধকরণ ও নিশ্চিহ্নকরণ সবচেয়ে জরুরি প্রাধিকার এবং সময়ের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
ফ্যাসিবাদের উপস্থিতি ও পুনর্বাসন মানেই বাংলাদেশের সর্বনাশ। আর তাদের অনুপস্থিতি ও নিশ্চিহ্নকরণ মানেই বাংলাদেশের অস্তিত্বশীলতা ও স্বাধীনতা। বাংলাদেশের জনগণ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর দিবাগত রাতেই ৩২ সম্পর্কে তাদের ৩৬-এর স্পিরিট জানিয়ে দিয়েছে সারা দেশে এবং দেশের বাইরে। এখন যে বা যারা এর বিরুদ্ধে বলবে, উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তাদেরকে সর্বত্র ও সর্বপর্যায়ে চূড়ান্তভাবে রুখে দেওয়াই হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার নিশ্চিত ওয়াদা ও আমল।
প্রফেসর (অব.), রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১৮ ঘণ্টা আগে
‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১৮ ঘণ্টা আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১৮ ঘণ্টা আগে
গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
২ দিন আগে