বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট ও গণপরিষদের চিন্তা যুক্তিসংগত নয়

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৯: ২৪

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট ও গণপরিষদের চিন্তা যুক্তিসংগত নয় বলে মনে করছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবেÑতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের যে মতামত নিচ্ছে, সেখানে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ, গণভোট, গণপরিষদ গঠনের মতো প্রস্তাব এসেছে। অন্যদিকে জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত পূর্ণাঙ্গ খসড়ার ওপর দেওয়া মতামতে গণভোট অথবা রাষ্ট্রপতির ঘোষণার মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছে জামায়াতে ইসলামী। এছাড়া নির্বাচনের আগে গণপরিষদ গঠন করে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদের সর্বশেষ অবস্থা দলের নীতি-নির্ধারকদের অবহিত করেন।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানান, তাদের দল মনে করে, জুলাই সনদ হচ্ছে জনগণের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার। সেই অঙ্গীকার আইনের চেয়েও শক্তিশালী। অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে পরে জনগণই ভোটের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে এর জবাব দেবে। এ বিষয়ে বিএনপির সিদ্ধান্ত হচ্ছে- সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া এমন সংস্কার প্রস্তাবগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাহী আদেশ ও অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আর যেসব সংস্কার প্রস্তাব সংবিধান সংশোধনসংশ্লিষ্ট সেগুলো নির্বাচিত সংসদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আগামী বৈঠকে তাদের এই অবস্থান তুলে ধরবে বিএনপি।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) না হলে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না কিংবা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না- কয়েকটি রাজনৈতিক দলের এমন সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। বিএনপি এ বিষয়গুলোকে তেমন গুরুত্ব দিতে চায় না। দলটি মনে করছে, প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের নিজেদের মতো করে বক্তব্য রাখবে, মতামত দেবেÑগণতন্ত্রে এমন নানা মত থাকবে এবং এটাই স্বাভাবিক। এখানে দ্বন্দ্বের কিছু নেই। এটা দলগুলোর রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে, মাঠ গরম করার জন্য তারা এমন বক্তব্য দিতে পারে। এ নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি কোনো দ্বন্দ্ব বা বিরোধে যাবে না।

বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ ও প্রশাসনে হওয়া বিভিন্ন রদবদল নিয়েও আলোচনা হয়। তবে কোনো কোনো পক্ষ থেকে এসব বদলি বা রদবদলের সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। নেতারা বলেন, এর সঙ্গে বিএনপির কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা বা সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে সরকার চাইলে এ ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করতে পারে বিএনপি এবং সে ক্ষেত্রে দল সুনির্দিষ্ট কাউকে দায়িত্ব অর্পণ করবে, যিনি এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ বা সমন্বয় করবেন। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই বিএনপি এসব রদবদল করছে কিংবা এর সঙ্গে বিএনপির নাম জুড়ে দেওয়া, এটা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয় বলে মনে করছে দলটি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত