বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, আগামী নির্বাচন যদি হাসিনার আমলের মতো কেউ সন্ত্রাস, জবরদস্তি করে বা কোনো দল যদি হানাহানি করে, তাহলে আমাদের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে । নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে সরকারও বিতর্কিত হবে। গণভোটের প্রশ্ন নিয়ে অনেকের আপত্তি আছে, প্রশ্ন আছে । কিন্তু গণভোটে আমরা হ্যাঁ সূচক ভোট দিতে চাই। গণভোটে হ্যাঁ বিজয়ের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার কল্যাণ এসোসিয়েশনের উদ্যোগে "জাতীয় নির্বাচনে তৃণমূল জনপ্রতিনিধি ইউপি মেম্বারদের করণীয় " শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা উচিত নয়। সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টা বাস্তবায়ন করতে হলে দলীয় প্রতিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বন্ধ হওয়া উচিত। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ বিভিন্ন সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধান করার ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রতি ছয়মাস পরপর ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের নিয়ে গণশুনানি করা দরকার। কোন খাতে কত টাকা বাজেট আসছে, কোন বরাদ্দ কিভাবে আসছে, কোন খাতে ব্যয় হয়েছে , বিস্তারিত জনগনকে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এতে করে ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে জনগণের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে। আগামী নির্বাচনে যাতে কেউ টাকার খেলার মাধ্যমে কেউ নির্বাচিত হতে না পারে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী বলেন, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে, ক্ষমতার গণতন্ত্র আনতে হবে। রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন আনতে হবে। চর্চা করবে রাজনৈতিক দলগুলো। যদি রাজনৈতিক দলগুলো চর্চা না করে, তাহলে আবারও ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারী সরকার ব্যবস্থা তৈরি হবে। আরও খারাপের দিকে যাবে। যারা জনপ্রতিনিধি হবে, এটাতো ফুল টাইম কাজ। এখন জনপ্রতিনিধি মানুষের সমস্যা দেখবে, কিন্তু যদি আপনি তার সমস্যা সমাধান না দেখেন, তাহলে কাজ করবে না। তাহলে ধরে নেওয়া হচ্ছে, হয় তিনি অন্যভাবে আয় করবেন অথবা দুর্নীতি করবেন। যদিও ভালো বেতন পাওয়ার পরও আমাদের আমলারা দুর্নীতি করছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ক্ষমতা কাঠামোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
গনঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কোনভাবেই দলীয় প্রতিকে করা যাবে না। স্থানীয় প্রতিকে নির্বাচনে দলীয় প্রতিকে হলে মারামারি- হানাহানি শুরু হয়ে যাবে। একজন মেম্বারের সরকারি যে ৩৬ টাকা বেতন দেওয়া হয়, এটা অযৌক্তিক। একজন মেম্বারের নূন্যতম সম্মানজনক বেতন নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সরকারকে বলব তাদের দাবি মেনে নেন। তাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না। ৫৫ হাজার মেম্বার রাস্তায় নামলে রাস্তা ব্লক করলে দেশেরই ক্ষতি। তাদের পদমর্যাদা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। মেম্বারদের পদমর্যাদা না দেওয়া পরিকল্পিতভাবে অপমানিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচন চাই না, অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। নির্দিধায় প্রচার প্রচারণা করতে পারার ব্যবস্থা করতে হবে। আসন ভাগাভাগির, দয়ামায়ার তালবাহানার নির্বাচন আর চাই না। দশ-বিশ আসন দিয়ে বলবেন তোমরা আলহামদুলিল্লাহ বল! এই তামাশাভরা নির্বাচন আর হতে দেওয়া হবে না। কোনদল যদি ক্ষমতায় আসতে চান, তারা এখনই সিদ্ধান্ত নেন। বন্ধু ছাড়া আপনারা একক দল বাংলাদেশে আর সুষ্ঠুভাবে দেশ চালাতে পারবে না। বিএনপি বা জামায়াত আপনারা এখনই সিদ্ধান্ত নেন।
বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার কল্যাণ এসোসিয়েশনের আলোচনা সভায় আরও উপস্থিতি ছিলেন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মেম্বারগণ।

