আমার দেশ

খুলনায় বিএনপির রাজনীতিতে লবীর প্রত্যাবর্তন নিয়ে ক্ষোভ

এহতেশামুল হক শাওন, খুলনা ব্যুরো
খুলনায় বিএনপির রাজনীতিতে লবীর প্রত্যাবর্তন নিয়ে ক্ষোভ

খুলনার রাজনীতিতে ১৯ বছর পর সক্রিয় হয়েছেন সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলী আসগার লবী। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনায় এসে দুটি কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি খুলনার কোনো একটি আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন, এমন গুঞ্জন জোরালো হয়েছে। তবে তার আকস্মিক প্রত্যাবর্তনে দলে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

একটি অংশ খুশি হলেও, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে নিষ্পেষণের শিকার তৃণমূলের বিপুলসংখ্যক কর্মী সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলেছেন সমালোচনার ঝড়। ‘সুসময়ে দলে ফেরার তাড়না’ নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের এই কর্মীদের।

বিজ্ঞাপন

আলী আসগার লবীর রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে দুটি কর্মসূচিতে তার অংশগ্রহণ ও দেওয়া বক্তব্যে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা বিএনপি আয়োজিত জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। এ ছাড়া শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ফুলতলার জামিরায় টোলনা জেপিডিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

রাজনীতিতে ফেরা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আলী আসগার লবী বলেন, ‘আমি দলের কর্মী, দলের নির্দেশ পেয়ে খুলনায় কর্মসূচিতে এসেছি। দল যদি মনে করে আমাকে নির্বাচন করতে হবে, আমি করব। খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) বা খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) জানি না। সিদ্ধান্ত দলের। দল মনে না করলে নির্বাচন করব না। সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত নয়।’

এদিকে দীর্ঘদিন পরে লবীর আকস্মিক রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে যারা বিগত সাড়ে ১৫ বছর রাজপথে দাঁড়িয়ে ফ্যাসিবাদের অত্যাচার, নির্যাতন ও জুলুম সহ্য করে গেছেন। হাইকমান্ডের নির্দেশে রাজনীতিতে ফিরছেন লবীÑ এই ধারণায় বিএনপি নেতারা মুখ না খুললেও চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বইছে সমালোচনার ঝড়।

তবে এর বাইরেও লবীর অনুসারীরা বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের দাবি তিনি হয়তো খুলনা আসনে নির্বাচন করতে পারেন। সেখানে সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে দলটি। এ কারণে, জামায়াতের প্রার্থীকে হারাতে লবীকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন তার অনুসারীরা।

তবে লবীর সমালোচক তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ‘সে সময় যখন চাপ সহ্য করতে পারেননি, তাহলে এখন কেন এসেছেন রাজনীতিতে? দলের সুসময় চলছে তাই? সে সময় আমরা রাজপথ ছাড়িনি। তাই এখনো অধিকার আমাদের।’ তারা দুঃসময়ে লড়াই-সংগ্রামে অংশ নেওয়া নেতাদের যোগ্য পদ ও আসনে দেখতে চান বলে জানান।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি দলের মহাসচিবের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান লবী। সে সময় তিনি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন