প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের সাংবাদিকতা ‘ইসলামবিদ্বেষে আক্রান্ত’: হেফাজতে ইসলাম

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৩৪

দৈনিক ‘প্রথম আলো’ ও ‘ডেইলি স্টার’-এর সাংবাদিকতা ‘ইসলামবিদ্বেষ ও ওলামাবিদ্বেষে আক্রান্ত’ বলে অভিযোগ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ধর্মভিত্তিক সংগঠনটি একইসঙ্গে পত্রিকা দুটির বিরুদ্ধে ‘দীর্ঘ রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক প্রকল্প’ থাকারও অভিযোগ এনেছে।

শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারকে ইসলামবিদ্বেষী ফ্রেমিং পরিহার করে বস্তুনিষ্ঠ ও পক্ষপাতমুক্ত সাংবাদিকতা করার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি প্রথম আলোতে প্রকাশিত কয়েকটি ধর্ষণের খবর প্রসঙ্গে আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব সংবাদ নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে, যা তাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তিনি বলেন, গোষ্ঠী বা ধর্মপরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে প্রমাণসাপেক্ষে ধর্ষক বা যেকোনো অপরাধীর সুষ্ঠু বিচার হওয়া উচিত। তবে প্রথম আলোর সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে এথিক্স বা নীতি-নৈতিকতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, ধর্ষণের সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রথম আলো ধর্ষক যদি সংখ্যালঘু বা পাহাড়ি নৃ-গোষ্ঠীর কেউ হয়, তখন তার সামাজিক, পেশাগত ও গোষ্ঠীগত পরিচয় ব্ল্যাকআউট করে দেয়। অন্যদিকে, ধর্ষক মুসলিম সম্প্রদায়ের হলে তার পেশাগত ও গোষ্ঠীগত পরিচয়কে হাইলাইট করে কথিত ‘প্রগতিশীল’ পত্রিকাটি। তার মতে, এটি ‘এতই চাক্ষুষ’ যে বোঝার জন্য গভীর বিবেচনার প্রয়োজন নেই এবং এ থেকে স্পষ্ট যে প্রথম আলোর সাংবাদিকতা ‘ইসলামবিদ্বেষ ও ওলামাবিদ্বেষে আক্রান্ত’।

হেফাজতে ইসলামের এই নেতা প্রথম আলোকে বাংলাদেশে ইসলামবিদ্বেষী হলুদ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, এই পত্রিকাটি ইন্ডিয়ান আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলামের রাজপথের আন্দোলন ও প্রতিরোধকে প্রায়সময় ‘তাণ্ডব’ আখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতার পরিচয় দিয়েছে।

২০০৭ সালে এই পত্রিকায় মুসলিমদের প্রিয় রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন ছাপা হয়েছিল।

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার বাংলাদেশবিরোধী ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলব হয়ে দেশের জনগণের ওপর দিল্লির দৈত্য চাপিয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছিল।

তাদের ‘পাপ ও জুলুম অনেক দীর্ঘ’। তারা ‘পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার অনুগত র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহকৃত’ জঙ্গিবিষয়ক খবর ভেরিফিকেশন ছাড়াই প্রচার করত।

আজিজুল হক অভিযোগ করেন, ভারত-আমেরিকার যৌথ ‘ওয়ার অন টেরর’ প্রজেক্টের অন্যতম ঠিকাদার এই পত্রিকা দুটির ‘জঙ্গি ন্যারেটিভ’ সরকারের বিরোধী মত দমনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতো। ফলস্বরূপ, সাজানো জঙ্গি মামলায় অসংখ্য নিরপরাধ প্র্যাকটিসিং মুসলিম তরুণের ঠাঁই হয় আয়নাঘরে। এই দীর্ঘ জুলুমের দায়ে পত্রিকা দুটির সম্পাদকের বিচার হতে হবে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের পক্ষে বয়ান উৎপাদনে বিভিন্ন সময় কলামও লিখেছিলেন’।

সবশেষে তিনি বলেন, এখন নিউ মিডিয়ার যুগ এবং আগের মতো একতরফা জনমত গঠন আর সম্ভব নয়। তাই প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের বদলে যাওয়ার সময় এসেছে এবং তাদের ইসলামবিদ্বেষী ফ্রেমিং পরিহার করে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করতে হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত