ড্যাবের নির্বাচনে হারুন-শাকিল প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ১৮

বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে যে পরিচিতি অনুষ্ঠানে ৩ স্তরের নির্বাচনী ইশতেহার ও কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ডা.হারুন-শাকিল নেতৃত্বাধীন প্যানেল।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার ও কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেন ড্যাবের এবারে নির্বাচনে মহাসচিব প্রার্থী সদ্য সাবেক কোষাধক্ষ্য ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল।

তিনি বলেন, আমাদের প্যানেলের প্রার্থীরা প্রত্যেকেই গত ১৭ বছর খুনি হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে বিএনপির সহযোগী সংগঠন হিসেবে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি চিকিৎসকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে ও পেশাগত উৎকর্ষতায় ভূমিকা পালন করেছেন। দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে, করোনা মহামারী, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ও বন্যায় জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সরকার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে আহতদের চিকিৎসায় রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের সর্বত্র আহত রোগীদের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছে।

এছাড়া নিহতদের পরিবারকে বিভিন্ন সময় আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসা সেবায় ডা. হারুন-ডা. সালাম-ডা. শাকিলের নেতৃত্বে চিকিৎসকবৃন্দ সর্বদা সচেষ্ট ছিলো। অনুষ্ঠানে হারুন-শাকিল প্যানেলের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এই প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি পদে ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব পদে জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, সিনিয়র সহসভাপতি পদে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কেনান, কোষাধ্যক্ষ পদে ড্যাবের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিদ ডা. মো. মেহেদী হাসান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে অর্থোপেডিক সার্জারি অধ্যাপক ডা. এ কে এম খালেকুজ্জামান দিপু।

ডা. শাকিল তিন পর্বের নির্বাচনী ইশতেহার ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। প্রথম পর্বে স্বল্পমেয়াদি (১-৩ বছর) এর মধ্যে রয়েছে- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতে ৩১ দফা কর্মসূচির ২৬তম ধারার আলোকে 'সবার জন্য স্বাস্থ্য' এবং 'সার্বজনীন চিকিৎসা' ব্যবস্থা কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর। চিকিৎসক, রোগী সম্পর্ক: আস্থা ও সমঝোতার মাধ্যমে গুণগত চিকিৎসা; স্বাস্থ্যসেবা খাতে চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীর সুরক্ষা ও রোগীর জন্য সমতা ভিত্তিক আইন প্রণয়ন ও কার্যকরী ব্যবস্থা। সরকারি চিকিৎসকদের জন্যে সুষম পদোন্নতি ও বদলী নীতিমালা, চাকুরির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নীতিমালা ও বিশ্বের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মেডিকেল কারিকুলামসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাবনা দেওয়া। চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের সুযোগ সৃষ্টি ও সেবার গুণগত মান উন্নয়ন। এমবিবিএস, পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন এবং নার্সিং শিক্ষা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরকরণ। ইউনিয়ন সাব-সেন্টারের মানোন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ।

সঠিক রেফারেল সিস্টেম বাস্তবায়ন। প্রয়োজনীয় ঔষধ নীতির সময়োপযোগী পরিবর্ধন ও কার্যকর বাস্তবায়ন এবং সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ। বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার প্রস্তাবনা। ড্যাবের চিকিৎসকবৃন্দের একটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ড্যাবের নিজস্ব স্থায়ী অফিস স্থাপন। চিকিৎসকবৃন্দের নিরাপদ কর্মস্থল এবং নিরাপদ আবাসস্থলের ব্যবস্থা করা। চিকিৎসকদের পেশাগত কাজে পারদর্শিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিদেশে পেশাগত প্রশিক্ষণ ও কারিগরী দক্ষতা আদান-প্রদানের জন্য বিদেশী চিকিৎসকবৃন্দের বাংলাদেশে আইনগতভাবে বিএমডিসি’র অনুমতিক্রমে কাজ করার সীমাবদ্ধতা দূরীকরণ। ডক্টরস ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন ও চিকিৎসকদের সহযোগীতা করা। সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে চিকিৎসকবৃন্দের বয়স সীমা ৩২ বৎসর থেকে ৩৪ বৎসর করা ও বেকার চিকিৎসকদের চাকুরিতে নিয়োগের বিষয়ে সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা।

মধ্যমেয়াদি (১-৫ বছর) পরিকল্পনার মধ্যে আছে-স্বাস্থ্য কার্ড প্রবর্তনের প্রস্তাবনা। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অটোমেশন। বিগত ১৫ বছরে বঞ্চিত যোগ্যতম চিকিৎসকবৃন্দকে সরকারি ও বেসরকারি খাতে চাকুরিতে নিয়োগ এর ব্যবস্থাকরণ। দীর্ঘদিন বঞ্চিত চিকিৎসকদের বয়স অতিক্রান্ত বিধায় চাকুরিতে তাদেরকে নিয়োগে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। দুর্নীতিমুক্ত চাকুরির নীতিমালা ও মেধাভিত্তিক পদোন্নতির ব্যবস্থাকরণ।

দীর্ঘমেয়াদি (১-১০ বছর) পরিকল্পনার মধ্যে আছে-চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থাপনার পুনঃবিন্যাস ও স্বাস্থ্য বীমা চালুকরণ।

এছাড়াও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, আমরা কাউকে সদস্য পদ থেকে বাদ দিইনি। এ নিয়ে একটা বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। যাদের সদস্যপদ বাতিল হয়েছে তারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী। এ নিয়ে পরবর্তীতে ড্যাবের নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করেছেন। মৃত ব্যাক্তিকে সদস্য রাখার তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো ভোটার তালিকা কিন্তু নির্ভুল নয়। আমাদের নেতা তারেক রহমান যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবেই কাউন্সিল হতে যাচ্ছে। যারা বিগত আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন তাদের মাধ্যমে ড্যাব এগিয়ে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. এমএ সেলিম, সহসভাপতি ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ড্যাবের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. সাঈদ মেহবুব উল কাদির, ডা. আদনান মাসুদ, ডা. রাকিবুল ইসলাম আকাশ প্রমুখ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত