গণঅভ্যুত্থানে দিবসের র‍্যালিতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ

কোনো সমন্বয়কের ডাকে নয়, দেশমুক্তির জন্যই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ২২: ০৯
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ১৯

ফ্যাসিবাদ বিলোপ ও নতুন জনগণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের আহ্বানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার দিন ৫ আগস্টকে জুলাই বিপ্লবের বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করেছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।

এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সংগঠন দু'টির নেতাকর্মীরা রাজধানীর শাহবাগ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত বিজয় শোভাযাত্রা করেছে।

বিজ্ঞাপন

পরে শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, সহকারী সদস্য সচিব গালিব ইহসান, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ ও সহকারী সদস্য সচিব জিহাদী ইহসান। সভা সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান।

মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, ৫ আগস্ট আমাদের বিজয় দিবস। কোনো সমন্বয়কের ডাকে নয় দেশের মুক্তির জন্যই সর্বস্তরের মানুষ সর্বাত্মক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু সরকার ফ্যাসিস্টদের এখনও বিচার না করায় জনগণ এক বছরেও জুলাই বিপ্লবের সুফল পুরোপুরি পায়নি।

তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, যারা দুই হাজারের অধিক আন্দোলনকারীকে গুলি করে শহীদ করেছে আজও তাদের অনেকেই চাকরিতে আছে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। এ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে আহত জুলাই যোদ্ধাদেরকে আক্রমণকারী পুলিশের বিচার করতে হবে।

খুনি হাসিনার সহযোগী মহাজোটের সব দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে। হাসিনার কেবিনেটের সকল এমপি-মন্ত্রী, মেয়র-কমিশনারদের গণহত্যার জন্য গ্রেপ্তার ও বিচার করতে হবে।

মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা বিভাগ, প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগে ঘাপটি মেরে থাকা র’ এর এজেন্টদের নির্মূল করতে ব্যর্থ হলে শহীদদের সাথে, আহতদের রক্তের সাথে বেঈমানী করা হবে।

সাইয়েদ কুতুব বলেন, গণমানুষের জুলাই বিল্পব কিছু কুচক্রী মহল নিজেদের বিত্তবৈভবের জন্য বেহাত করেছে। ওরা এতটাই লুটপাটে জড়িয়েছেযে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবর দিতে পারেনি। বরং এক বছর পরেও মর্গে লাশ পরে আছে । আমরা বিশ্বাস করি মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে সকল শহীদের সম্মান ও গণমানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিব।

জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য গালীব ইহসান বলেন, আজ ৫ আগস্ট গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার পলায়ন দিবস তথা বাংলাদেশের জনগণের বিজয় দিবস। গত বছরের এ দিনে আমরা ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার অপশাসন থেকে মুক্ত হয়ে নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। আগস্টের এ বিজয়ের মাসে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না।

আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ৫ই আগস্টের বিপ্লব ৮ই আগস্ট বেহাত হওয়ার কারণে আমরা এনজিও উপদেষ্টাদের পেয়েছি যাদের সাথে বিপ্লবের কোনো সম্পর্ক নাই। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আর ছাত্র উপদেষ্টা ৩ জন ছাড়া কাউকেই আমরা সমর্থন করি নাই, এখনো করি না। আমরা মনে করি দেশে এখনও জুলাই বিপ্লবের প্রথম স্তর চলছে। জুলাই বিপ্লব চূড়ান্ত বিজয়ে পরিণত করতে হলে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগের সহযোগী ১৪ দল ও জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। সংবিধান বিলোপ করে গণপরিষদ নির্বাচন দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে।

জিহাদী ইহসান বলেন, ৫ আগস্টের পর দেখতে পেলাম একটা গৃহপালিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। যারা এদেশের মানুষের জনআকাঙ্খা নিয়ে ইঁদুর-বিড়ালের খেলা খেলছে। তারা শহীদদের রক্তের হিস্যা দেয়নি। আহতদের সুচিকিৎসা দেয়নি। অন্যদিকে ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত ছাত্ররা লুটপাটে জড়িয়ে জুলাইয়ের জনআকাঙ্খার সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

শোভাযাত্রায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সদস্য তপু তৌহিদ, হাবিবুল্লাহ মারজান, নাইম আব্দুল্লাহ, সাইদুর রহমান, বায়েজিদ বোস্তামী, ওয়াসিম আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ ও হারুনর রশীদ; বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সানোয়ারা খাতুন, বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোঃ আরিফুল ইসলাম, ঢাকা মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার আহ্বায়ক রাকিব মন্ডল প্রমুখ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত