আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

জুলাই ঐক্যের সংবাদ সম্মেলন

জুলাই যোদ্ধাদের ‘চরমপন্থি’ বলা ভারতের চরমপন্থার বহিঃপ্রকাশ

প্রতিনিধি, ঢাবি

জুলাই যোদ্ধাদের ‘চরমপন্থি’ বলা ভারতের চরমপন্থার বহিঃপ্রকাশ

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক বক্তব্যে জুলাই ঐক্যের আন্দোলনকে ‘চরমপন্থি গোষ্ঠী’র আন্দোলন হিসেবে আখ্যা দেওয়াকে ভারতের চরমপন্থার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছে জুলাই ঐক্য। সংগঠনটি বলছে, এটি কেবল কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন নয়, বরং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিন প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জুলাই ঐক্যের শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ‘চরমপন্থি গোষ্ঠী’র আন্দোলন হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, যা ভারতের রাজনৈতিক ও নৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ। জুলাইয়ের চেতনা ধারণকারী শতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক মোর্চা মনে করে—এটি পররাষ্ট্রনীতির সীমা লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান।

এবি জুবায়েরের অভিযোগ, “বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়ে শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা ভারতে পালিয়ে গেছে। সেই খুনিদের আশ্রয় দিয়ে ভারত সরাসরি পররাষ্ট্রনীতির সীমা লঙ্ঘন করেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৭ ডিসেম্বর পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচি জুলাই ঐক্যের ব্যানারে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়। রামপুরা ব্রিজ থেকে মার্চ শুরু হলেও বাড্ডা এলাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে আন্দোলনকারীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সম্মান জানিয়ে সেখানেই অবস্থান নেন তারা।

জুলাই ঐক্য জানায়, কর্মসূচিতে সাবেক দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। অথচ এই কর্মসূচিকে ‘ঢাকায় কিছু চরমপন্থি গোষ্ঠীর আন্দোলন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে মোদি সরকার, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

সংবাদ সম্মেলনে ডাকসুর স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সময় এবং পরবর্তীতে দোষী আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার যোগাযোগ বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।

জুলাই ঐক্যের অভিযোগ, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় জড়িত উগ্র হিন্দু চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে ভারত বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া গণহত্যাকারীদের আশ্রয় দিচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে সংগঠনটি দিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিক জবাব তলবের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানায়। পাশাপাশি ভিয়েনা কনভেনশনের অনুচ্ছেদ ৯ অনুযায়ী ভারতীয় হাইকমিশনারকে পারসোনা নন গ্রাটা ঘোষণার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্চ কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া ভারতের বক্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্চ ও স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর

খুঁজুন