রাজবাড়ীর ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিন্দা ও প্রতিবাদ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩: ৪৫

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরা পাগলার দরবার ও তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘৃণ্য অপরাধে জড়িতদের অতিদ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে বলা হয়,আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে, শুক্রবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফ ও তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। ‘ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’র পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বেরিয়ে আসা একদল লোকের এই হামলায় কবর অবমাননা ও মরদেহে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি দরবারের ভক্ত, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশসহ ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হওয়ার পাশাপাশি ১ জন নিহত হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ বর্বর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং একই সঙ্গে এই ঘৃণ্য অপরাধে জড়িতদের অতিদ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।

এর আগেও আমরা নানা সময়ে মাজার, দরগাহ ও ওরসকে কেন্দ্র করে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানোত্তর এ ধরনের ভয়াবহ ঘটনা বেশ উদ্বেগজনক ও উৎকণ্ঠার বিষয়। মনে রাখতে হবে, জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম আকাঙ্ক্ষা একটি ‘ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা— যেখানে দল, মত, ধর্ম, জাতি ও শ্রেণি নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে। অথচ এ ধরনের ঘৃণ্য ও সহিংস হামলা সেই ‘ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ’ গঠনের পথে বড় প্রতিবন্ধকতা। এসব ঘটনার দায় অবশ্যই অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই নিতে হবে। কারণ, সরকারের পক্ষ থেকে এসব থামাতে এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ আমরা প্রত্যক্ষ করেনি । ফলে, মাজার ভাঙচুর, কবর অবমাননা ও মরদেহে অগ্নিসংযোগের মতো এ ধরনের সহিংসতা সরকারের নানা ব্যর্থতারই বহিঃপ্রকাশ।

এ ছাড়া বেশ উদ্বেগের সঙ্গে উক্ত ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের কয়েকজন স্থানীয় নেতার সম্পৃক্ততা বিভিন্ন গণমাধ্যমসূত্রে আমরা লক্ষ করেছি; জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম শক্তি কর্তৃক এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করে, এই ধরনের হামলা অমানবিক, মূল্যবোধবিরোধী এবং সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পথে সরাসরি বাধা। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, এ ধরনের ঘটনায় কেবল দায়সারাভাবে বিবৃতি বা হুঁশিয়ারি না দিয়ে অতিদ্রুত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, সে যে দলেরই হোক না কেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত