আয়ারল্যান্ড টেস্ট সিরিজ

বাংলাদেশের বড় দুশ্চিন্তা ব্যাটিং

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ০০

টি-টোয়েন্টির দামামায় শেষ ১৪ মাসে মাঠে টেস্ট গড়িয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি। এ সময় সবচেয়ে বেশি ১৭ টেস্ট খেলেছে ভারত। চতুর্থ সর্বোচ্চ ১০ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্ট খেলায় বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে থাকলেও পারফরম্যান্সে অনেকটাই পিছিয়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এই ১০ ম্যাচে মাত্র দুই জয় পেয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এমন নিদারুণ পারফরম্যান্সের সময় বল কিংবা ব্যাট- কোনো বিভাগেই বলার মতো পারফরম্যান্স নেই বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের। ব্যাট হাতে সবচেয়ে বেশি রান করা যশস্বী জয়সওয়ালের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে আছেন বাংলাদেশি ব্যাটাররা। এমনকি বল হাতে শীর্ষে থাকা জাসপ্রিত বুমরাহর চেয়েও আছেন অনেকটাই পিছিয়ে। এমন করুণ পারফরম্যান্সের মধ্যেই ফের সাদা পোশাকে মাঠে নামবে শান্ত-মিরাজরা। এবার ঘরের মাঠে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ টেস্ট ক্রিকেটের নবীন দল আয়ারল্যান্ড। ২০১৮ সালে টেস্ট অভিষেকের পর খেলেছে ১০ ম্যাচ। অন্যদিকে ২০০০ সালে সাদা পোশাকে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশ খেলেছে ১৫৪ টেস্ট। ফলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এবার হচ্ছে একরকম অসম লড়াই!

শেষ ১৪ মাসে বাংলাদেশের খেলা ১০ টেস্টের সবগুলোর একাদশেই ছিলেন মমিনুল হক। এ সময় তার ব্যাটে ১৯ ইনিংসে মাত্র ২৬ গড়ে এসেছে ৪৮৪ রান। ছিল একটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি। এ সময় বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৮ টেস্টে ১৫ ইনিংসে ৪৬ গড়ে করেছেন ৬৫০ রান। ছিল দুটি করে সেঞ্চুরি আর হাফ সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫১২ রান করেছেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। তার ব্যাটে আসে একটি সেঞ্চুরি ও তিন হাফ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের টপ অর্ডারের এই দুই ব্যাটার ছাড়া বাকিদের রান অবশ্য খুব বেশি নয়। শেষ ১৪ মাসে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে ২০০ কিংবা তার চেয়ে বেশি রান করা ক্রিকেটার মাত্র ৭ জন! অথচ, এ সময় বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট খেলেছেন ২২ ক্রিকেটার!

বিজ্ঞাপন

আয়ারল্যান্ড সিরিজে যার ওপর থাকবে সবচেয়ে বেশি আলো- তিনি মুশফিকুর রহিম। শেষ ১৪ মাসে ৮ ম্যাচে তার ব্যাটে মোটে ২৯ গড়ে এসেছে ৪৩৬ রান। করেছেন মাত্র একটি সেঞ্চুরি। আর টেস্টে লোয়ার মিডল অর্ডারে দায়িত্ব সামলানো লিটন দাস ৭ ম্যাচে মাত্র ১৯ গড়ে করেছেন ২৭৪ রান। সব মিলিয়ে আইরিশদের বিপক্ষে টেস্টে নামার আগে অধিনায়কের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে সাদমানের সঙ্গী হতে পারেন মাহমুদুল হাসান জয়। তার পারফরম্যান্সও সুখকর নয়! ৫ ম্যাচে ১০ ইনিংসে তার রান মাত্র ১৫২ এবং ছিল না কোনো ফিফটি কিংবা সেঞ্চুরি। ব্যাটিং অর্ডারের এই দুরবস্থা আইরিশদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে কাটিয়ে ওঠার সুযোগ থাকছে বাংলাদেশ দলের সামনে। নতুন ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুলের অধীনে ব্যাটারদের জন্য থাকবে নিজেদের প্রমাণের সুযোগ!

ব্যাটাররা যেমন রান করতে পারেননি, ঠিক তেমনি বড় জুটি গড়তেও ব্যর্থ। শেষ ১৪ মাসে ১০ টেস্টে মাত্র ছয়বার শতরানের জুটি গড়তে পেরেছিল বাংলাদেশ। ওপেনিং জুটিতে সেই সংখ্যাটা মাত্র একবার! চতুর্থ উইকেটে দুইবার শতরানের জুটি গড়েছে বাংলাদেশ। পঞ্চম, সপ্তম ও নবম উইকেট জুটিতে একবার করে শতরানের জুটি পেয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট ব্যাটিংয়ে কতটা হতশ্রী সময় পার করছে বাংলাদেশ।

ব্যাটারদের এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সে অবশ্য বোলারদের নিয়েও স্বস্তির কোন বার্তা নেই। শেষ ১৪ মাসে বাংলাদেশের হয়ে ২০ কিংবা তার চেয়ে বেশি উইকেট শিকারি বোলারের সংখ্যা মাত্র তিনজন। এই তালিকায় আছেন তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ ও হাসান মাহমুদ। ৯ ম্যাচে তাইজুলের শিকার ৪২ উইকেট। এ সময় পাঁচবার ফাইফার নিয়েছেন তিনি। মেহেদি হাসান মিরাজ সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৩১ উইকেট আর হাসান মাহমুদের শিকার ২০ উইকেট। আয়ারল্যান্ড সিরিজের স্কোয়াডে না থাকা তাসকিন আহমেদ এ সময় শিকার করেছেন ১৫ উইকেট আর তরুণ নাহিদ রানা ৬ ম্যাচে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। নিয়মিত খেলার সুযোগ না পাওয়া নাঈম হাসানের শিকার ছিল ১২ উইকেট। নিয়মিত না খেলেও ১২ উইকেট নেওয়া নাঈম হাসান অবশ্য আইরিশদের বিপক্ষে সিরিজে নেই স্কোয়াডে।

সব মিলিয়ে ব্যাটারদের চেয়ে খানিকটা ভালো অবস্থায় আছে বোলাররা। সেই বোলারদের ওপর ভরসা করেই সিলেটে টেস্ট সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ দল।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

ক্রিকেট
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত