খেলাধুলায় ক্রীড়াবিদদের জন্য ত্যাগ ও নিবেদনের সর্বপ্রথম বাক্যটাই হলো- ‘সবার আগে দেশ ও দল’। এই কথাটা অক্ষরে অক্ষরে মনেপ্রাণে ধারণ করে খেলতে নামেন তারা। ক্রিকেটে এই ত্যাগ আর নিবেদনের গল্পে ভাঙা হাত যেন অসীম সাহস আর দেশপ্রেমের গল্প। যে গল্পের সবশেষ চরিত্রের নাম ক্রিস ওকস। অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির পঞ্চম ও শেষ টেস্টের শেষদিনে ব্যান্ডেজে মোড়ানো হাত নিয়ে খেলতে নেমে ইতিহাস ফিরিয়ে আনলেন ইংলিশ ক্রিকেটার। যে ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের তামিম ইকবাল থেকে শুরু করে আছেন পাকিস্তানের সেলিম মালিক ও ইংল্যান্ডের ম্যালকম মার্শাল।
ওভালে ম্যাচের প্রথম দিনেই ফিল্ডিংয়ের সময় বাঁ কাঁধে চোট পান ওকস। চোটের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে, প্রচণ্ড ব্যথায় সোয়েটারকে স্লিংয়ের মতো বানিয়ে হাত ঝুলিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। পঞ্চম দিনে ইংল্যান্ডের সামনে সিরিজ জয়ের ৩৫ রানের সমীকরণে শেষ ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামেন এই অলরাউন্ডার। তার এমন বীরত্বের দিনেও অবশ্য হার মেনেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু ওকস হয়ে রইলেন ক্রিকেট ইতিহাসের অমর চরিত্রদের একজন।
অতীতের গল্পে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যালকম মার্শালের নামটাই শুরুতে আসে। ১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টে তার বুড়ো আঙুল ভেঙে গিয়েছিল ফিল্ডিংয়ের সময়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার দলের প্রয়োজনে আঙুলে ব্যান্ডেজ করে তবু ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। তার সেই এক হাতের ব্যাটিং দুই বছর পরই ফিরিয়ে আনেন পাকিস্তানের সেলিম মালিক। সেলিম মালিকের অবস্থা ছিল ওকসের মতোই। ১৯৮৬ সালে ফয়সালাবাদ টেস্টে বাঁ হাত প্লাস্টার করে স্লিংয়ে ঝুলিয়ে তার ওপর জার্সি চাপিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন মালিক। ডানহাতি থেকে বাঁহাতি হয়ে সেদিন মালিক খেলেছিলেন ১৪টি ডেলিভারি!
বাংলাদেশের তামিম ইকবালের গল্পটা আরো টাটকা। ২০১৮ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের শুরুর দিকে সুরঙ্গা লাকমলের বলে চোট পেয়ে ভেঙে যায় তামিমের বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল। দলের প্রয়োজনে গ্লাভস কেটে হাতে পরে মাঠে নেমে যান বাংলাদেশের সেরা ওপেনার। মুশফিকের সঙ্গে তার শেষ জুটি দলকে এনে দেয় বড় সংগ্রহ। জয় পায় বাংলাদেশ।

