আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

সকালের দুঃখ ভুলিয়ে দিলেন দুই সিনিয়র

পার্থ রায়

সকালের দুঃখ ভুলিয়ে দিলেন দুই সিনিয়র
গল টেস্টের প্রথম দিন সেঞ্চুরি পর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে অভিনন্দন জানাচ্ছে মুশফিকুর রহিম, ছবি: এএফপি

দিনের শুরু থেকে বারবারই ধারাভাষ্যকাররা বলছিলেন, ‘গলে প্রথম ইনিংসে রান করা গুরুত্বপূর্ণ। এটাই ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দেবে।’ ম্যাচ চলাকালে ধারাভাষ্য শোনার সুযোগ নেই ক্রিকেটারদের। শুনতে পারলে হয়তো এভাবে আত্মাহুতি দিয়ে আউট হতেন না এনামুল হক বিজয়, সাদমান ইসলাম ও মমিনুল হক। দলীয় ৪৫ রানে এই তিনের বিদায়ের পর বাংলাদেশ তখন খাদের কিনারায়। প্রায় আড়াই সেশন ব্যাট চালিয়ে চতুর্থ উইকেটে ২৪৭ রান যোগ করেন নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মুশফিকুর রহিম। দিনশেষে অপরাজিত থেকে তারা যখন প্যাভিলিয়নে ফেরেন, তখন স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ২৯২। দুজনের নামের পাশেই অপরাজিত সেঞ্চুরি। আজ সকালে ইনিংস বড় করার সুযোগ আছে তাদের সামনে। তাদের এমন দারুণ ব্যাটিংয়ের পর বলতেই হয়Ñদিনটি ছিল বাংলাদেশের।

বিজ্ঞাপন

দারুণ দিনের শুরুটা বাংলাদেশের জন্য ছিল হতাশাময়। টপঅর্ডারের তিন ব্যাটার লঙ্কান বোলারদের ফাঁদে পড়ে আত্মাহুতি দিয়ে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। এনামুল হক বিজয়কে ফেরাতে বারবারই আউটসাইড অফে বল করছিলেন লঙ্কান পেসার আসিথা ফার্নান্দো। ফাঁদে পা দেবেন কি দেবেন না করে শেষ পর্যন্ত অফস্ট্যাম্পের বাইরে থাকা বলে শট করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন বিজয়। তাতে ১০ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই ড্রেসিংরুমে ফেরেন তিনি।

টেস্ট স্পেশালিস্ট সাদমান ইসলাম ও মমিনুল হকও পা দেন লঙ্কান বোলারদের ফাঁদে। অভিষিক্ত সব্যসাচী বোলার থারিন্দু রত্নানায়েকের বলে তারা দুজন আউট হন। বিজয়ের মতো সাদমান-মমিনুলও আউট হন স্লিপে ক্যাচ তুলে। থারিন্দুর টানা অফ স্ট্যাম্পের বাইরের চ্যানেলে করে যাওয়া বলে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন তারা দুজন। তাদের দুজনের ক্যাচই তালুবন্দি করেন লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। সাদমানেরটা সহজে ধরতে পারলেও মমিনুলেরটা তালুবন্দি করতে একটু কষ্টই করতে হয় ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে।

লঙ্কান বোলারদের দাপটে দিনের প্রথম দেড় ঘণ্টায় (প্রথম ১৭ ওভার) যখন বাংলাদেশ কুপোকাত, তখনই ত্রাণকর্তা হয়ে ওঠেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম।

দুজনই এতটাই বাজে সময় কাটাচ্ছেন যে, কারো ওপরই আসলে সমর্থকদের ভরসা ছিল না। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে শান্ত-মুশফিক জুটিই দিনশেষে কেড়ে নেন ম্যাচের পুরো আলো। রাওয়ালপিন্ডিতে ১৯১ রানের ইনিংস খেলার ১৩ ইনিংস পর সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিকুর রহিম। এ সময়ে কোনো ফিফটি না করা মুশফিক অপরাজিত আছেন ১০৫ রানে। তার ১৮৬ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার। বাকি রানগুলো এসেছে সিঙ্গেল আর ডাবলসে। এতটুকুতেই প্রমাণ পাওয়া যায়Ñরান করতে কতটা পরিশ্রম করেছেন তারা দুজন। আর কতটা সাবধানতা অবলম্বন করে ইনিংস বড় করেছেন। অন্যদিকে অধিনায়ক শান্ত ২০ ইনিংস, ১১ ম্যাচ ও ১৮ মাস পর পান সেঞ্চুরির দেখা। প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় শান্ত ২৬০ বলে ১৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। এই ইনিংস খেলার পথে তার ব্যাটে আসে ১৪ চার ও ১ ছক্কা।

অথচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠের লড়াই শুরুর আগেই বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। জ্বরের কারণে গলে দলের সঙ্গে একদিনও অনুশীলন করতে না পারা মেহেদি হাসান মিরাজকে হারায়। ফলে কম্বিনেশনে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। একজন বাড়তি ব্যাটার নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। ফলে গলে ম্যাচের ফল পক্ষে আনতে বড় সংগ্রহের কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর

খুঁজুন