বিপিএলের ১২তম আসরের নিলামে আগে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছিল ৯ ক্রিকেটারের বাদ পড়া। বিপিএলে খেলার যোগ্যতা থাকলেও ফিক্সিংকাণ্ডে জড়িত থাকায় তাদের রাখা হয়নি নিলামে। এ নিয়ে হয়েছিল বেশ আলোচনা। এমনকি উচ্চ আদালতে তিনটি রিট আবেদন করেছিলেন ক্রিকেটাররা। পাশাপাশি তাদের পক্ষ থেকে বিসিবিকে দেওয়া হয়েছিল আইনি নোটিসও। এতদিন এসব নিয়ে কোনো কথা বলেনি বিসিবি। গতকাল গুলশানে বিসিবি গভর্নিং কাউন্সিলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের বাদ দেওয়া নিয়ে কথা বলেন বিসিবির ইন্টিগ্রিটি ইউনিটের প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল। সঙ্গে ছিলেন বিসিবির আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহিন এম রহমান ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন। সেখানে অ্যালেক্স মার্শাল জানান, নিরাপত্তার স্বার্থেই অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের এবারের বিপিএলের বাইরে রাখা হয়েছে।
বিপিএল নিলামের আগে স্বাধীন তদন্ত কমিটি ৯০০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন বিসিবির কাছে জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিসিবির ইন্টিগ্রিটি ইউনিটের প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল অভিযুক্ত ৯ ক্রিকেটারকে বিপিএলের বাইরে রাখার পরামর্শ দেন। শুধু অভিযুক্ত ক্রিকেটারই নন, ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে বাকিদেরকেও এবারের বিপিএলে না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেই পরামর্শ মেনে কাজ করছে বিসিবি। এ নিয়ে মার্শাল বলেন, ‘৯০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন পড়ে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলকে পরামর্শ দিয়েছি কিছু লোককে বিপিএলে আমন্ত্রণ করা উচিত হবে না। এদের মধ্যে কেউ খেলোয়াড়, কেউ খেলোয়াড় নন। আমি এই পরামর্শ দিয়েছি বিপিএলে হওয়া সমস্যাগুলো আটকানোর জন্য। তারা ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ নন, তারা শুধু এ টুর্নামেন্টে আমন্ত্রিত নন।’
বিষয়টি নিয়ে বিসিবির আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহিম এম রহমান বলেন, ‘একজন মানুষ যখন বিচারাধীন থাকে, তখন তাকে জেল খাটতে হতে পারে। সবাই কিন্তু জেল খাটছে না। কেন কিছু মানুষ সাজা হওয়ার আগেই জেল খাটছে? অনেক সময় এর দরকার হয়। উনি (অ্যালেক্স মার্শাল) বারবার বলার চেষ্টা করছেন যে, এটি সাজা নয়; এটি একটি নিরাপত্তা জনিত ব্যাপার যেটি বিপিএল এবং বিশেষ করে এই ১২তম বিপিএলের জন্য প্রয়োজন।’
এনামুল হক বিজয়, নিহাদুজ্জামান, সানজামুল ইসলামসহ ৯ ক্রিকেটার ফিক্সিংকাণ্ডে অভিযুক্ত হওয়ায় বিপিএলে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এই সিদ্ধান্তটি রাতারাতি হয়নি বলেও জানান মাহিন। তার কথায়, ‘ইন্টিগ্রিটি ইউনিট কিছুটা সময় নিয়েছে। প্রায় দু-তিন সপ্তাহ ধরে এর ওপর রিভিউ করা হয়েছে। তারপর উনি (অ্যালেক্স মার্শাল) মনে করেছেন এই প্রতিরোধ, এই নিরাপত্তাটা প্রয়োজন।’ ব্যারিস্টার মাহিন নিশ্চিত করেন, এই সিদ্ধান্ত শুধু বিপিএল ঘিরেই নেওয়া হয়েছে। তবে বিপিএলের পরের কোনো টুর্নামেন্টে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু জানাননি তিনি।
বিপিএল থেকে অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের বহিষ্কার করেই থেমে নেই বিসিবি। তদন্তের বাকি অংশ এখনো চলমান বলে স্পষ্ট করেন মাহিন এম রহমান। তার কথায়, ‘লাইভ ইনভেস্টিগেশন। লাইভ ইনভেস্টিগেশন মানে এটা তদন্তাধীন। এটা হলো প্রক্রিয়াধীন। আবারও বলছি, একটা অভিযোগ থেকে যখন শুরু হয়, সেটা সাজা পর্যন্ত একটা লম্বা আইনি প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়াটা চলমান রাখতে হবে। আর আমরা বলতে চাচ্ছি যে, আমরা এই প্রক্রিয়ার মধ্যখানে আছি এবং আমরা এটাকে নিরাপত্তার অংশ হিসেবে নিয়েছি, যেটা যেকোনো প্রক্রিয়ায় করা যায় এবং এটা করা সম্ভব।’
শুধু ক্রিকেটারদেরই নয়, দল-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরও বাইরে রাখা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করে বিসিবি। এ নিয়ে মাহিন বলেন, ‘নিলাম তালিকায় যেহেতু খালি ক্রিকেটারদের রাখা হয়, সে কারণে ক্রিকেটারদের নাম আপনারা বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু, এর বাইরেও নাম আছে এবং তারা কোনোভাবেই নিরাপত্তার কারণে সংযুক্ত থাকতে পারবে না।’
এছাড়া আসন্ন বিপিএলে ড্রেসিংরুম, অর্থাৎ খেলোয়াড়, কোচ ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের জন্য বরাদ্দকৃত এলাকাতে (পিএমওএ) নির্ধারিত ব্যক্তি ছাড়া কাউকে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানান অ্যালেক্স মার্শাল। পাশাপাশি কোনো ধরনের যোগাযোগযন্ত্র, যেমন মোবাইল, স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও নিশ্চিত করেন তিনি। শুধু টিম ম্যানেজার, মিডিয়া ম্যানেজার ও চিকিৎসককে স্বল্পপরিসরে মোবাইল ফোন কিংবা অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি দেবে বিসিবি। বিপিএল চলাকালে এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে তাৎক্ষণিক পিএমওএ কার্ড বাতিল করা হবে বলেও জানান মার্শাল।
বিপিএলের দ্বাদশ আসর
‘নিরাপত্তার স্বার্থে বাদ অভিযুক্তরা’

স্পোর্টস রিপোর্টার

বিপিএলের ১২তম আসরের নিলামে আগে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছিল ৯ ক্রিকেটারের বাদ পড়া। বিপিএলে খেলার যোগ্যতা থাকলেও ফিক্সিংকাণ্ডে জড়িত থাকায় তাদের রাখা হয়নি নিলামে। এ নিয়ে হয়েছিল বেশ আলোচনা। এমনকি উচ্চ আদালতে তিনটি রিট আবেদন করেছিলেন ক্রিকেটাররা। পাশাপাশি তাদের পক্ষ থেকে বিসিবিকে দেওয়া হয়েছিল আইনি নোটিসও। এতদিন এসব নিয়ে কোনো কথা বলেনি বিসিবি। গতকাল গুলশানে বিসিবি গভর্নিং কাউন্সিলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের বাদ দেওয়া নিয়ে কথা বলেন বিসিবির ইন্টিগ্রিটি ইউনিটের প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল। সঙ্গে ছিলেন বিসিবির আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহিন এম রহমান ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন। সেখানে অ্যালেক্স মার্শাল জানান, নিরাপত্তার স্বার্থেই অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের এবারের বিপিএলের বাইরে রাখা হয়েছে।
বিপিএল নিলামের আগে স্বাধীন তদন্ত কমিটি ৯০০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন বিসিবির কাছে জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিসিবির ইন্টিগ্রিটি ইউনিটের প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল অভিযুক্ত ৯ ক্রিকেটারকে বিপিএলের বাইরে রাখার পরামর্শ দেন। শুধু অভিযুক্ত ক্রিকেটারই নন, ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে বাকিদেরকেও এবারের বিপিএলে না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেই পরামর্শ মেনে কাজ করছে বিসিবি। এ নিয়ে মার্শাল বলেন, ‘৯০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন পড়ে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলকে পরামর্শ দিয়েছি কিছু লোককে বিপিএলে আমন্ত্রণ করা উচিত হবে না। এদের মধ্যে কেউ খেলোয়াড়, কেউ খেলোয়াড় নন। আমি এই পরামর্শ দিয়েছি বিপিএলে হওয়া সমস্যাগুলো আটকানোর জন্য। তারা ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ নন, তারা শুধু এ টুর্নামেন্টে আমন্ত্রিত নন।’
বিষয়টি নিয়ে বিসিবির আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহিম এম রহমান বলেন, ‘একজন মানুষ যখন বিচারাধীন থাকে, তখন তাকে জেল খাটতে হতে পারে। সবাই কিন্তু জেল খাটছে না। কেন কিছু মানুষ সাজা হওয়ার আগেই জেল খাটছে? অনেক সময় এর দরকার হয়। উনি (অ্যালেক্স মার্শাল) বারবার বলার চেষ্টা করছেন যে, এটি সাজা নয়; এটি একটি নিরাপত্তা জনিত ব্যাপার যেটি বিপিএল এবং বিশেষ করে এই ১২তম বিপিএলের জন্য প্রয়োজন।’
এনামুল হক বিজয়, নিহাদুজ্জামান, সানজামুল ইসলামসহ ৯ ক্রিকেটার ফিক্সিংকাণ্ডে অভিযুক্ত হওয়ায় বিপিএলে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এই সিদ্ধান্তটি রাতারাতি হয়নি বলেও জানান মাহিন। তার কথায়, ‘ইন্টিগ্রিটি ইউনিট কিছুটা সময় নিয়েছে। প্রায় দু-তিন সপ্তাহ ধরে এর ওপর রিভিউ করা হয়েছে। তারপর উনি (অ্যালেক্স মার্শাল) মনে করেছেন এই প্রতিরোধ, এই নিরাপত্তাটা প্রয়োজন।’ ব্যারিস্টার মাহিন নিশ্চিত করেন, এই সিদ্ধান্ত শুধু বিপিএল ঘিরেই নেওয়া হয়েছে। তবে বিপিএলের পরের কোনো টুর্নামেন্টে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু জানাননি তিনি।
বিপিএল থেকে অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের বহিষ্কার করেই থেমে নেই বিসিবি। তদন্তের বাকি অংশ এখনো চলমান বলে স্পষ্ট করেন মাহিন এম রহমান। তার কথায়, ‘লাইভ ইনভেস্টিগেশন। লাইভ ইনভেস্টিগেশন মানে এটা তদন্তাধীন। এটা হলো প্রক্রিয়াধীন। আবারও বলছি, একটা অভিযোগ থেকে যখন শুরু হয়, সেটা সাজা পর্যন্ত একটা লম্বা আইনি প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়াটা চলমান রাখতে হবে। আর আমরা বলতে চাচ্ছি যে, আমরা এই প্রক্রিয়ার মধ্যখানে আছি এবং আমরা এটাকে নিরাপত্তার অংশ হিসেবে নিয়েছি, যেটা যেকোনো প্রক্রিয়ায় করা যায় এবং এটা করা সম্ভব।’
শুধু ক্রিকেটারদেরই নয়, দল-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরও বাইরে রাখা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করে বিসিবি। এ নিয়ে মাহিন বলেন, ‘নিলাম তালিকায় যেহেতু খালি ক্রিকেটারদের রাখা হয়, সে কারণে ক্রিকেটারদের নাম আপনারা বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু, এর বাইরেও নাম আছে এবং তারা কোনোভাবেই নিরাপত্তার কারণে সংযুক্ত থাকতে পারবে না।’
এছাড়া আসন্ন বিপিএলে ড্রেসিংরুম, অর্থাৎ খেলোয়াড়, কোচ ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের জন্য বরাদ্দকৃত এলাকাতে (পিএমওএ) নির্ধারিত ব্যক্তি ছাড়া কাউকে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানান অ্যালেক্স মার্শাল। পাশাপাশি কোনো ধরনের যোগাযোগযন্ত্র, যেমন মোবাইল, স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও নিশ্চিত করেন তিনি। শুধু টিম ম্যানেজার, মিডিয়া ম্যানেজার ও চিকিৎসককে স্বল্পপরিসরে মোবাইল ফোন কিংবা অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি দেবে বিসিবি। বিপিএল চলাকালে এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে তাৎক্ষণিক পিএমওএ কার্ড বাতিল করা হবে বলেও জানান মার্শাল।
