২০২৬ বিশ্বকাপের গ্রুপিং চূড়ান্ত। ঠিক হয়েছে ফুটবলের বিশ্বমঞ্চের সূচিও। ইতোমধ্যে বিশ্বকাপের টিকিট কাটা দলগুলো জেনে গেছে তাদের গ্রুপ প্রতিপক্ষের বিষয়েও। ৪৮টি দল বিশ্বকাপ খেলবে ১২ গ্রুপে ভাগ হয়ে। ফুটবল মহাযজ্ঞের গ্রুপগুলো নিয়ে আমার দেশ-এর বিশেষ আয়োজনে আজ থাকছে তিনবারের রানার্সআপ নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে ‘এফ’ গ্রুপে থাকা জাপান, তিউনিশিয়া ও ইউরোপিয়ান প্লে-অফ বি জয়ী দলের শক্তিমত্তা বিশ্লেষণ।
ফুটবল বিশ্বে নেদারল্যান্ডসের রাজত্ব নতুন নয়। শুরু থেকেই নিজেদের আলোয় উদ্ভাসিত ডাচরা। কমলা রঙের ইতিহাসে কিংবদন্তি এসেছেন অনেক। তবে দুঃখের বিষয়, আজ অবধি বিশ্বকাপে কোনো শিরোপা জিততে পারেনি ডাচরা। তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্য রানার্সআপ। শক্তিশালী দল নিয়েও মোট তিনবার ফাইনাল হারতে হয়েছে কমলা যোদ্ধাদের। সবশেষ ১৯৭৪ ও ১৯৭৮ সালের পর ২০১০। এর মধ্যে ২০১০ সালে তাদের শিরোপাই দেখছিলেন অনেকে। তবে দুর্দান্ত দল নিয়েও স্পেনের কাছে ট্রফি খুইয়েছেন আরিয়ান রোবেনরা। এবার সেই আক্ষেপ ঘোচানোর পালা। যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকোর মাটিতে অনুষ্ঠিত আসরে নিজেদের সেরা দল নিয়েই যাচ্ছেন ডাচরা।
এই দলের স্কোয়াডে তারকার কমতি নেই। দলের অধিনায়ক ভার্জিল ভ্যান ডাইক খেলছেন প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা ক্লাব লিভারপুলে। রক্ষণের অন্যতম ভরসা দীর্ঘদেহী এই ডিফেন্ডার। তার সঙ্গে আছেন ম্যানসিটির নাথান আকে ও টটেনহ্যামের মিকি ভ্যান ডি ভেন। মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা ফ্রেঙ্কি ডি জং বার্সেলোনার প্রাণ। তার সঙ্গে আছেন জাভি সিমন্স। আক্রমণের অন্যতম বড় তারকা লিভারপুলের ভরসা কোডি হাকপো। মেমফিস ডিপাইয়ের গতি ভড়কে দিতে পারে প্রতিপক্ষকে। প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেন উইং-ব্যাকে খেলা ডেনজেল ডামফ্রিজ। সব মিলিয়ে নিজেদের গ্রুপে শক্তিমত্তায় এগিয়ে ডাচরা।
নেদারল্যান্ডসের জন্য গ্রুপের শক্ত প্রতিপক্ষ এশিয়ার দেশ জাপান। যারা প্রতিবারই কোনো না কোনো দলকে চমকে দেয়। যদিও বিশ্বকাপের ইতিহাসে কখনো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে পারেনি জাপানিজরা। তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য শেষ ষোলো। সবশেষ বিশ্বকাপেও এখানেই থেমেছে তাদের যাত্রা। এবার তারা আরেকটু সামনে দৃষ্টি রাখতেই পারে। দলের দিকে তাকালে অবশ্য তারকাদের দেখা মেলে। ইউরোপের নামিদামি ক্লাবে খেলছেন তারা। দলের সবচেয়ে বড় ভরসা ব্রাইটনে খেলা উইঙ্গার কাওরা মিতোমা, তার সঙ্গে আছেন রিয়াল সোসিয়েদাদের তাকেফুসা কুবো ও মোনাকোর তাকেমি মিনামিনো। মাঝমাঠে আছেন লিভারপুলের ওয়াতারু এন্ডো, ক্রিস্টাল প্যালেসের দাইচি কামাদা। রক্ষণে ভরসা আর্সেনালের তাকেহিরো তোমিয়াসু। সব মিলিয়ে এবার ভালো কিছু করতে পারে জাপান।
গ্রুপের অন্য দল তিউনিশিয়া। আফ্রিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে দাপট দেখিয়ে এসেছে তারা। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছে আফ্রিকান দেশটি। কাতার বিশ্বকাপেও তিউনিশিয়া প্রশংসনীয় পারফরম্যান্স করেছিল। তারা ডেনমার্ককে পেছনে ফেলে গ্রুপ ডি-তে তৃতীয় হয়েছিল এবং ফাইনালিস্ট ফ্রান্সকে হারিয়ে বড় চমক দেখিয়েছিল, যদিও অল্পের জন্য নকআউট পর্বে পৌঁছানো হয়নি। এবারের আসরেও চমক দেখাতে পারে দলটি। গ্রুপের অন্য দলটি আসবে উয়েফা প্লে-অফের লড়াইয়ে উত্তীর্ণ হয়ে।
এই গ্রুপের লড়াইয়ে প্রথম ম্যাচে ১৪ জুন মাঠে নামবে নেদারল্যান্ডস ও জাপান। এরপর ১৫ জুন লড়বে উয়েফা প্লে অফ বি এবং তিউনিশিয়া। ২০ জুন একই দিনে মাঠে নামবে তিউনিশিয়া-জাপান ও নেদারল্যান্ডস-উয়েফা প্লে অফ বি। ২৬ জুন মুখোমুখি হবে জাপান-উয়েফা প্লে অফ বি ও তিউনিশিয়া-নেদারল্যান্ডস।

