পতিত আওয়ামী আমলে ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন দেশের জনপ্রিয় আলেম ও ধর্মীয় বক্তা মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবী। অন্যায়ভাবে তাকে আটকের পর ১০ দিন গুম রেখে হাত-মুখ বেঁধে নির্যাতন চালায় র্যাব।
পতিত আওয়ামী সরকারের সময়ে পুলিশি নির্যাতনের ভয়াবহ রূপ দেখেছেন হাটহাজারী মাদরাসার সাবেক ছাত্র মাওলানা আসাদুল্লাহ। মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য গ্রেপ্তারের পর থেকেই তার ওপর শুরু হয় নির্যাতন। রিমান্ডে নিয়ে চালানো হয় বর্বর শারীরিক নিপীড়ন।
পতিত আওয়ামী লীগের শাসনামলে আলেম-ওলামা নির্যাতনের অন্যতম সাক্ষী হয়ে আছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানীনগর এলাকা। আলোচিত সাত খুনের আসামি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নুর হোসেন চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী এলাকার মানুষকে জিম্মি করে রাখত।
একটানা ১৭ দিনসহ মোট ২৮ দিন রিমান্ডের নামে পুলিশি হয়রানি, নির্যাতন ও গালাগালের শিকার হয়েছেন এই আলেম। জেলে থাকাবস্থায় তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রীও স্বামীর অনুপস্থিতিতে দুর্ভোগে পড়েন।
শুধু গ্রেপ্তার করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। সম্পূর্ণ নিরপরাধ ব্যক্তিকে অস্ত্র মামলা দিয়ে রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। কারারুদ্ধ ছিলেন দেড় মাস। এমনই বর্বর ঘটনা ঘটেছে দেশের অন্যতম আলেম অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীনের সঙ্গে।
নিরীহ আলেম হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক মাওলানা যুবায়ের আহমাদ রাজধানীর লালবাগ মাদরাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি ইসলামি রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজপথে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে তিনি নানাভাবে বাধাবিঘ্ন ও পিটুনির শিকার হন।
২০২১ সালে দেশে নরেন্দ্র মোদির আগমনবিরোধী প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জেরে গণহারে গ্রেপ্তার-নির্যাতনের শিকার হন দেশের প্রতিবাদী আলেম-ওলামারা।
পবিত্র রমজানে তারাবির নামাজে ইমামতি শেষে বেশ ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরেন মুফতি আলী হাসান উসামা। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরিবারের সঙ্গে রাতের খাবারের। কিন্তু এমন মুহূর্তে জঙ্গি আস্তানার আদলে তার বাসা ঘিরে ফেলে অসংখ্য পুলিশ।
রাজপথে সোচ্চার থাকার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ টার্গেটে পরিণত হয়েছিলেন মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। নানাভাবে জুলুম-নিপীড়নের ধারাবাহিকতায় প্রাণনাশের শঙ্কায়ও ছিলেন তিনি।
মিথ্যা অভিযোগের মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে চেইন দিয়ে একটানা সাড়ে ৩ ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখা হয়। গোপনাঙ্গে দেওয়া হয় কারেন্টের শক। একবার-দুবার নয়, সাতবার গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
শেখ হাসিনার শাসনকালে দেশের আলেম-ওলামা ও ধর্মীয় নেতাদের দিন কাটতো আতঙ্কে। আতঙ্ক নিয়েই পবিত্র রমজান মাসে সেহরি খেয়ে ঘুমিয়েছিলেন মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। সকালে ঘুম থেকে উঠতেই দেখেন তার বাসা ঘিরে ফেলেছে পুলিশ।