আফ্রিকার গিনি-বিসাউয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের একদিন পর সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল হোর্তা এনটা না মান অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। বৃহস্পতিবার সামরিক সদর দপ্তরে শপথ নিয়ে তিনি ঘোষণা করেন, “আমি হাইকমান্ডের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শপথ নিয়েছি।” খবর আল-জাজিরার।
জেনারেল এনটা না মানকে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এম্বালোর ঘনিষ্ঠ হিসেবে ধরা হয়। তিনি দাবি করেন, “অভিযানকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে” এবং সংকট মোকাবিলায় “জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা” নিতে হবে।
আফ্রিকান ইউনিয়ন অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে এম্বালো ও গ্রেপ্তার হওয়া অন্যান্য কর্মকর্তাকে “তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত মুক্তি” দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ECOWAS ও AU পর্যবেক্ষকদের যৌথ বিবৃতি বলছে, দুই শীর্ষ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ঠিক পরেই এই অভ্যুত্থান হওয়া “দুঃখজনক”।
এর আগে বুধবার সামরিক কর্মকর্তারা এক টেলিভিশন বিবৃতিতে নিজেদের “উচ্চ সামরিক কমান্ড” পরিচয়ে ঘোষণা করেন যে তারা প্রেসিডেন্ট এম্বালোকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার মধ্যে রাজধানী বিসাউয়ে নির্বাচন কমিশন ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের আশেপাশে গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়।
এম্বালো ফ্রান্স২৪-কে ফোনে জানান, “আমাকে পদচ্যুত করা হয়েছে,” এবং তিনি বর্তমানে “জেনারেল স্টাফ সদর দপ্তরে” অবস্থান করছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এম্বালো ও প্রধান বিরোধী নেতা ডোমিঙ্গোস সিমোয়েস পেরেইরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে এবং কারফিউ জারি করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান পরিচালনা করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডেনিস এন’কানহা—যিনি প্রেসিডেন্ট প্রহরী বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বিশ্লেষকদের ভাষায়, “যার প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করার কথা ছিল, তিনিই তাকে গ্রেপ্তার করেছেন।”
ঘটনার পর রাজধানী বিসাউ তুলনামূলক শান্ত থাকলেও রাস্তায় সেনা মোতায়েন রয়েছে এবং অনেক বাসিন্দা ঘরে অবস্থান করছে।
উল্লেখ্য, গিনি-বিসাউয়ের দীর্ঘ অভ্যুত্থান-ইতিহাসে এটি সর্বশেষ অস্থিতিশীলতার অধ্যায় হিসেবে সামনে এসেছে।
এমইউ

