কানাডায় উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে ইসলাম বিদ্বেষ ও ‘হেইট ক্রাইম’

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১৫: ০৪
ছবি: টিআরটি গ্লোবাল

গাজায় ইসরাইলের সামিরক অভিযান শুরুর পর থেকে কানাডায় ইসলাম বিদ্বেষ বেড়েছে। সেইসঙ্গে উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে ‘হেইট ক্রাইম’ বা ঘৃণাজনিত অপরাধের সংখ্যা। সম্প্রতি ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামোফোবিয়া রিসার্চ হাবের নাদিয়া হাসানের প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। খবর টিআরটি গ্লোবালের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান শুরুর পর কানাডাজুড়ে ইসলাম বিদ্বেষ এবং ফিলিস্তিন বিরোধী ‘হেইট ক্রাইম’ (ঘৃণা থেকে হওয়া অপরাধ) ১,৮০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামোফোবিয়া রিসার্চ হাবের লেখক নাদিয়া হাসানের ‘ডকুমেন্টিং দ্য প্যালেস্টাইন এক্সেপশন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে গত ২১ মাসে ইসলাম বিদ্বেষ, ফিলিস্তিন-বিরোধী বর্ণবাদ এবং আরব-বিরোধী বর্ণবাদ তীব্র ও বিপজ্জনকহারে বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

অটোয়াতে এক সংবাদ সম্মেলনে হাসান বলেন, ‘২০২৩ সালের অক্টোবরের পর, কানাডায় ফিলিস্তিন-বিরোধী বর্ণবাদ, ইসলাম বিদ্বেষ এবং আরব-বিরোধী বর্ণবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। কানাডার জনসাধারণের জীবন ও কর্মক্ষেত্রে এর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে।’

প্রতিবেদনটি ১৬টি কানাডীয় সংগঠনের সঙ্গে পরামর্শ, সরকারি ও সংবাদমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।

স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে মুসলিম-বিরোধী ঘৃণামূলক অপরাধের সংখ্যা ৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আরব ও পশ্চিম এশীয়দের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে ৫২ শতাংশ।

ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিমস (এনসিসিএম) জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের পরের মাসে ইসলাম বিদ্বেষের ঘটনা ১,৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা পরের বছর ১,৮০০ শতাংশে পৌঁছেছে।

মুসলিম লিগ্যাল সাপোর্ট সেন্টার ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে মার্চ ২০২৪ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ৪৭৪টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনের কারণে চাকরি হারিয়েছেন বা ছুটিতে পাঠানো হয়েছে ৩৪৫ জনকে। লিগ্যাল সেন্টার ফর প্যালেস্টাইন জানিয়েছে, আট মাসে ফিলিস্তিন বিরোধী বর্ণবাদের মামলা ৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

নাদিয়া হাসান জানান, ‘এই প্রতিবেদনে বাস্তব পরিস্থিতির মাত্র একটি অংশ তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সাক্ষাৎকার, তাদের দেওয়া তথ্য, সরকারি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।’

কানাডায় ইসলাম বিদ্বেষ মোকাবিলার জন্য নিযুক্ত বিশেষ প্রতিনিধি আমিরা এলঘাওয়াবি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে কথা বলায় মানুষকে চাকরি হারাতে হচ্ছে, ভবিষ্যত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এসব পরিস্থিতি এখনই মোকাবিলা করা দরকার।’

কানাডাজুড়ে প্রতিদিনই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে সেগুলো মোকাবিলা করার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘৯/১১-এর পরে যে পুরনো অপপ্রচার ছিল তা আবার আবার ফিরে এসেছে। অতি ডানপন্থী এবং অন্যরা তা আরো বাড়িয়ে তুলেছে এবং আমাদের সম্প্রদায় বিশেষ করে ফিলিস্তিন-মুসলিম এবং আরব-কানাডিয়ানদের অবমাননা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে ফিলিস্তিনি-বিরোধী বর্ণবাদের একটি সংজ্ঞা প্রণয়ন, হেইট ক্রাইমের জন্য উপযুক্ত জবাবদিহিতা এবং স্কুল এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এই ক্রমবর্ধমান হুমকির প্রতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তার স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানো হয়।

আরএ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত