ভারতের বিহার রাজ্যে সরকারি এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের নারীর প্রতি বিতর্কিত আচরণ দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় আয়ুষ (আয়ুর্বেদ, যোগ ও ন্যাচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথি) চিকিৎসকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী ৭৪ বছর বয়সী নারী চিকিৎসকের হিজাব টান দিয়ে খুলে দেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, নীতিশ কুমার নারী চিকিৎসককে ইশারায় হিজাব সরানোর জন্য বলেন। নারী চিকিৎসক বোঝার আগেই নীতিশ নিজেই হাত বাড়িয়ে হিজাব সরিয়ে দেন, যাতে তার মুখ ও থুতনি দৃশ্যমান হয়ে পড়ে। ওই সময় পেছনে উপস্থিত কয়েকজনকে হাসতে দেখা যায়। উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীও মুখ্যমন্ত্রীকে থামানোর চেষ্টা করেছিলেন।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর বিরোধী দলগুলো মুখ্যমন্ত্রীর মানসিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কংগ্রেস দল এই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘ঘৃণ্য’ আখ্যায়িত করে নীতিশ কুমারের পদত্যাগের দাবি করেছে। দলের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে তারা লিখেছে, “একজন নারী চিকিৎসক নিয়োগপত্র নিতে এসেছিলেন, আর নীতিশ কুমার তার হিজাব টেনে নামালেন। রাজ্যের সর্বোচ্চ পদে থাকা একজন ব্যক্তি প্রকাশ্যে এমন ঘৃণ্য আচরণ করছেন। ভাবুন তো, রাজ্যে নারীরা কতটা নিরাপদ?”
আরজেডি দলও নীতিশ কুমারের এই আচরণকে সমালোচনা করেছে। তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পর্দা করা মুসলিম নারীর হিজাব খুলে ফেলা, জেডিইউ এবং বিজেপি নারীকে শক্তিশালী করার নামে কি রাজনীতি করছে তা প্রকাশ করে। আরজেডি সাবেক টুইটার হ্যান্ডেলে লিখেছে, “নীতীশজির মানসিক অবস্থা এখন সম্পূর্ণ করুণ পর্যায়ে পৌঁছেছে।”
উল্লেখ্য, নীতিশ কুমার এর আগে নভেম্বর মাসে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এক জনসভায় নারীকে মালা পরানোর ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। তখনও তিনি এক জেডিইউ সংসদ সদস্যকে ধমক দিয়ে থামাতে চেষ্টা করেছিল।
এবারের ঘটনায় দেশজুড়ে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে, এবং মুখ্যমন্ত্রীর আচরণকে ‘জঘন্য’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এসআর

