অস্ত্রের পেছনে খরচ বাড়লে জলবায়ুর জন্য ঝুঁকি কীভাবে বাড়ে?

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৫০

বিশ্বজুড়েই বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীগুলো আরো আধুনিক অস্ত্র পাওয়ার জন্য তোড়জোর চালাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নানাভাবে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়তে থাকাও এর একটা কারণ। তবে এসব বাহিনীগুলোর কর্মকাণ্ডও কার্বন নিঃসরণ ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক প্রতিবেদনে সতর্ক করেছেন— সামরিক খরচ বাড়তে থাকার প্রবণতা জলবায়ু বিপর্যয়কে আরো ত্বরান্বিত করছে। বিশ্বজুড়ে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত বাড়লে সামরিক খরচও বাড়বে, ফলে কার্বন নিঃসরণ আরো বেড়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত অর্থ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও অভিযোজনের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদও কমে যাচ্ছে।

সামরিক বাহিনী আসলে কতটা কার্বন নিঃসরণ করে?

বিশ্বজুড়ে সামরিক কর্মকাণ্ড থেকে ঠিক কত পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয় তার কোনো একক, নিরীক্ষিত পরিসংখ্যান নেই। তবে কিছু সরকার স্বেচ্ছায় এই তথ্য প্রকাশ করে থাকে। কিছু বিশেষজ্ঞ পূর্বাভাস ও হিসাবের ভিত্তিতে একটি বৈশ্বিক ধারণা তৈরি করেছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশেষজ্ঞদের অনুমান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী সামরিক খাত মোট বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের প্রায় ৩ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত দায়ী।’

যদি বিশ্বের সামরিক বাহিনীগুলোকে একটি দেশ হিসেবে ধরা হয়, তবে তারা চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পর চতুর্থ বৃহত্তম নিঃসরণকারী হবে। এ তথ্য উঠে এসেছে ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের দাতব্য সংস্থা কনফ্লিক্ট এন্ড এনপভায়রনমেন্ট অবজারভেটরি (যা সামরিক কার্যকলাপের পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে গবেষণা করে) এবং সাইনটিস্ট ফর গ্লোবাল রেসপন্সিবিলিটি (যা নৈতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চার পক্ষে কাজ করে) এর যৌথ গবেষণায়। এছাড়া বিশ্বব্যাপী সামরিক বাজেটের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয় যে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে চলেছে।

২০২৪ সালে বৈশ্বিক সামরিক ব্যয় পৌঁছেছে ২ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। এটি স্নায়ু যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি বলে উল্লেখ করেছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট।

প্রতিবেদনটি জানায়, ২০২৪ সালে ১০০টিরও বেশি দেশ তাদের সামরিক খরচ বাড়িয়েছে, বিশেষত ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রবৃদ্ধি ছিল দ্রুতগতির। এ বছরের শুরুতে নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো) ঘোষণা করেছে যে, তাদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয় জিডিপির ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করবে।

এর আগে, ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মোট সামরিক কার্বন ফুটপ্রিন্ট ৩ কোটি (৩০ মিলিয়ন) টন বেড়েছে—যা ওই সময়ে সামরিক খরচ বৃদ্ধির সঙ্গেই ঘটেছে। ট্রান্সন্যাশনাল ইনস্টিটিউটের (একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান যা টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে) হিসাব অনুযায়ী, এটি রাস্তার উপর অতিরিক্ত ৮০ লাখেরও বেশি গাড়ি যোগ হওয়ার সমান।

সবচেয়ে বড় দূষণকারী কারা?

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে আসল চ্যালেঞ্জ হলো— ভারী অস্ত্র ব্যবস্থা যেমন যুদ্ধবিমান, ট্যাংক, যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিনকে ডিকার্বনাইজ (কার্বন নির্ভরতা কমানো) করা, কারণ এগুলো চালাতে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি প্রয়োজন। তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিমানগুলো বর্তমানে চালু থাকা সবচেয়ে বেশি জ্বালানিখেকো যন্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে, গত অর্ধশতকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের (বর্তমানে যার নামকরণ করা হয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার বা যুদ্ধ বিভাগ) মোট জ্বালানি ব্যবহারের ৫৫ শতাংশ এসেছে জেট ফুয়েল থেকে।

২০২২ সালের ‘ন্যাচার’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান যখন ১০০ নটিক্যাল মাইল (১৮৫ কিলোমিটার) উড়ে, তখন এটি যত কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করে, তা যুক্তরাজ্যের একটি সাধারণ পেট্রোলচালিত গাড়ির এক বছরের নিঃসরণের সমান।

গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, শুধু মার্কিন সামরিক বাহিনীর জেট ফুয়েল ব্যবহারই প্রতিবছর ছয় মিলিয়ন মার্কিন যাত্রীবাহী গাড়ির সমপরিমাণ নিঃসরণ ঘটায়।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট এর তথ্যানুযায়ী, তারপরও, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ সামরিক ব্যয় বাড়িয়েছে এবং বিশ্বের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা ব্যয়কারী দেশ হিসেবে রয়ে গেছে।

কনফ্লিক্ট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অবজারভেটরি -এর ডগ ওয়েয়ার বলেছেন, ‘অস্ত্র ভাণ্ডার বাড়ানোর জন্য সামরিক উৎপাদন বৃদ্ধি অত্যন্ত জ্বালানি-নির্ভর, অথচ কম কার্বন নির্ভর সামরিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এখনো সীমিত।’

স্পষ্ট অগ্রাধিকার

বিবিসি যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ারকে জিজ্ঞেস করেছিল যে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির ফলে তাদের কার্বন নিঃসরণে কী প্রভাব পড়তে পারে এবং সামরিক খাতকে ডিকার্বনাইজ করার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না। ‘যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সংক্রান্ত সেইসব কর্মসূচি ও উদ্যোগ বাতিল করছে, যা আমাদের মূল যুদ্ধ পরিচালনার মিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়,’ — এক ইমেইল জবাবে বিবিসিকে জানিয়েছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা মূলত প্রাণঘাতী সক্ষমতা বৃদ্ধি, যুদ্ধ পরিচালনা এবং প্রস্তুতি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা এটি করছি তিনভাবে: যোদ্ধার নীতি পুনঃস্থাপন, আমাদের সামরিক বাহিনীকে পুনর্গঠন এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা’।

নেটোকে একই ধরনের প্রশ্ন পাঠানো হলেও তারা কোনো জবাব দেয়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, তাদের বাড়তি কার্বন নিঃসরণ সামলানোর প্রচেষ্টা তেমন কার্যকর নয়।

ব্রাসেলসে অবস্থিত ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন অব মিলিটারি অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড ট্রেড ইউনিয়নসের সিনিয়র নীতি কর্মকর্তা দিমিত্রা কৌতৌজি বলেছেন, ‘বর্তমানে, ডিকার্বনাইজেশন প্রচেষ্টা পুনরায় অস্ত্রসজ্জা বাজেটের পরিসরের তুলনায় খুবই সামান্য।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্পগুলো তাদের পরিকল্পনায় জ্বালানি দক্ষতা ও টেকসই উন্নয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা শুরু করেছে, কিন্তু বর্তমানে যে অস্ত্র ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে তা কার্যকর হতে এখনো বহু বছর লাগবে।’

যুদ্ধের খরচ

যুদ্ধের কারণে জলবায়ুর ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করা কঠিন, তবে চলমান কিছু যুদ্ধ এদের পরিবেশগত প্রভাব কতটা ভয়াবহ হতে পারে তার ধারণা দেয়। ২০২৪ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম দুই বছরে প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন ১৭ (কোটি ৫০ লাখ) টন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়েছে। আরেকটি গবেষণা, যা মে মাসে প্রকাশিত হয়, তাতে বলা হয়েছে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের সরাসরি সামরিক কর্মকাণ্ড থেকে প্রায় ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন (১৯ লাখ) টন কার্বন নিঃসরণ হয়েছে। এটি ৩৬টি দেশ ও অঞ্চলের বার্ষিক নিঃসরণের থেকেও বেশি।

ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল এবং ন্যাটোর সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিচার্ড নুজি বলেছেন, ‘তা সে দ্রুতগতির যুদ্ধবিমান হোক, ফ্রিগেট (যুদ্ধজাহাজ) হোক বা ট্যাংক—এখনো আমাদের হাতে এমন কোনো প্রযুক্তি নেই যা শূন্য নিঃসরণ সক্ষমতা দিতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে—যতক্ষণ না সেই প্রযুক্তি আসে, ততক্ষণ আমরা আমাদের ইচ্ছেমতো নিঃসরণ কমাতে পারব না।’ অর্থাৎ প্রতিরক্ষার জন্য যত বেশি অর্থ ব্যয় হবে, জলবায়ু অর্থায়নের জন্য তত কম অর্থ পাওয়া যাবে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের বার্ষিক অর্থায়ন ঘাটতি ইতোমধ্যেই ৪ ট্রিলিয়ন ডলার (যার অর্ধেক জ্বালানি ও জলবায়ুর জন্য বরাদ্দ ঘাটতি)।

প্রতিবেদনটি আরো সতর্ক করেছে যে এই ঘাটতি আগামী বছরগুলোতে ৬ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার (৪ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন পাউন্ড) পর্যন্ত বাড়তে পারে, ঠিক তখনই বৈশ্বিক সামরিক ব্যয় ২০৩৫ সালের মধ্যে ৬ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার (৪ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন পাউন্ড) ছুঁতে পারে।

এতে আরো বলা হয়েছে, বিশ্বের ধনী দেশগুলো জলবায়ু অর্থায়নে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য যে অর্থ ব্যয় করছে তার তুলনায় ৩০ গুণ বেশি অর্থ সামরিক খাতে ব্যয় করছে।

আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত দেশগুলো ২০৩৫ সালের মধ্যে বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলার (২৪৮ বিলিয়ন পাউন্ড) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলো বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব মোকাবিলায় বছরে ১ ট্রিলিয়ন ডলার (৭৪১ বিলিয়ন পাউন্ড) এরও বেশি প্রয়োজন।

পানামার জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি হুয়ান কার্লোস মন্টেরি গোমেজ নভেম্বরে আজারবাইজানের বাকুতে কপ২৯ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রতি বছর বৈশ্বিক সামরিক ব্যয় প্রায় ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার (১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন পাউন্ড)। একে অপরকে হত্যার জন্য ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় খুব বেশি নয়, কিন্তু জীবন বাঁচানোর জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করা অযৌক্তিক বলে মনে হয়।’

কিন্তু এখন সন্দেহ দেখা দিয়েছে, পূর্বের অঙ্গীকারগুলো আদৌ পূরণ হবে কি না।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) এর তথ্যানুযায়ী, ১১টি দাতা দেশ ইতোমধ্যেই ২০২৫ থেকে ২০২৭ সালের জন্য তাদের সরকারি উন্নয়ন সহায়তা—যার মধ্যে জলবায়ু অর্থায়নও রয়েছে—কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্য জানিয়েছে যে তারা প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়াবে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে বৈদেশিক সহায়তা ব্যয় মোট জাতীয় আয়ের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ করবে।

জেনারেল নুজি বলেন, ‘আমরা সামরিক বাহিনীকে চাইবই—আমরা চাই বা না চাই। যুদ্ধে সামরিক বাহিনীর নিঃসরণ বাড়া ঠেকানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো শুরুতেই একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী তৈরি করা, যা প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করবে। ন্যাটো এবং ব্রিটেন এটাই করার চেষ্টা করছে।’

তবে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী কি সত্যিই মানুষকে ভেঙে পড়া জলবায়ুর ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে রক্ষা করতে পারবে, নাকি উল্টো সেই প্রভাবকে আরো ত্বরান্বিত করবে?

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত