ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ন করবে

গাজায় অবৈধ বসতি স্থাপন বন্ধের দাবি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৫: ৫৭

ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হওয়া গাজার পুরো দখল নিতে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরাইল। একদিকে হামলা, অন্যদিকে অনাহার দুয়ে মিলে প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। এবার নতুন করে অধিকৃত পশ্চিম তীরে নতুন করে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে ইসরাইল। তাদের এ পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মহাসচিবের মুখপাত্রের অফিস জানায়, জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপন আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের অবৈধ বসতি স্থাপন দখলদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করবে এবং এতে উত্তেজনা বাড়বে। বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ই-ওয়ান নামে নতুন এ বসতি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পশ্চিম তীরের উত্তর এবং দক্ষিণ এলাকা বিভক্ত হয়ে পড়বে। এ ধরনের পদক্ষেপ ‘দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের অংশ হিসেবে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ণ করবে। অবিলম্বে এ পরিকল্পনা থেকে ইসরাইলকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘বৃহত্তর ইসরাইল’-এর দাবির নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এটি দখলদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করবে এবং একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের কার্যকারিতা নষ্ট করবে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে মনে করে। গত জুলাই মাসে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং পশ্চিম তীরসহ পূর্ব জেরুজালেমের সব বসতি খালি করতে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ইসরাইলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরাইলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ জেরুজালেমের পূর্বে মাআলে আদুমিমে তিন হাজার ৪০১টি বসতি ইউনিট এবং আশপাশের এলাকায় আরো তিন হাজার ৫১৫টি বসতি ইউনিট নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছেন। প্রকল্পটির লক্ষ্য পশ্চিম তীরকে দুটি ভাগে বিভক্ত করা, এর উত্তর ও দক্ষিণ শহরগুলোর মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং পূর্ব জেরুসালেমকে বিচ্ছিন্ন করা।

ইসরাইলের অতিডানপন্থি অর্থমন্ত্রী, বেজালেল স্মোট্রিচ এ পরিকল্পনা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব আরোপ উভয়কেই সমর্থন করেন। তার বিশ্বাস এ পরিকল্পনা অনুযায়ী ই-ওয়ানের বাস্তবায়ন ‘স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ধারণা সমাহিত করবে।’

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, পশ্চিম তীরে ইসরাইলের বসতি স্থাপন অবৈধ।

এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপনে ইসরাইলের পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। এক বিবৃতিতে সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে ইসরাইলের অপচেষ্টার নিন্দা জানায়।

অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি নির্মাণ বন্ধ করতে ইসরাইল সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি। এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপনে হাজার হাজার নতুন আবাসন ইউনিট অনুমোদনের বিষয়ে ইসরাইলি সরকারের ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে তারা।

এ পরিকল্পনার নিন্দা করেছে তুরস্কও। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই স্থায়ী শান্তি অর্জনের একমাত্র উপায়। কিন্তু ইসরাইলের এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের প্রস্তাবগুলোকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত