১৯৭৯ সালের পর থেকে সোনার দাম কখনো এত দ্রুত বৃদ্ধি পায়নি। চলতি বছরে নিউইয়র্কে সোনার আগাম লেনদেনে মূল্য ৭১ শতাংশ বেড়েছে। এর আগে এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বৃদ্ধি ঘটেছিল ১৯৭৯ সালে, যখন মধ্যপ্রাচ্যে সংকট, ইরানের ইসলামি বিপ্লব, যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানিসংকট ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছিল। সেসময় সোনার দাম ১২৬ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ২২৬ ডলার থেকে ৫১২ ডলারে পৌঁছেছিল।
বর্তমানে পরিস্থিতি আলাদা হলেও সংকটের প্রভাব এখনও আছে। মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভেনেজুয়েলার তেলবাহী ট্যাংকার আটকসহ নানা বিষয় সোনার দাম বৃদ্ধির পেছনে প্রভাব ফেলছে। বছরের শুরুতে আউন্সপ্রতি সোনার দাম ছিল ২,৬৪০ ডলার, যা বছরের শেষের দিকে বেড়ে ৪,৫০০ ডলারে পৌঁছেছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ২০২৬ সালে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৫,০০০ ডলারে উঠতে পারে।
চলতি বছরে সোনার মুনাফা অন্য বিনিয়োগের তুলনায় অনেক বেশি। সোনার দাম বেড়েছে ৭১ শতাংশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক বেড়েছে মাত্র ১৮ শতাংশ। ২০২৪ সালে সোনার আগাম লেনদেনে মুনাফা ছিল ২৭ শতাংশ, এসঅ্যান্ডপি সূচক বেড়েছে ২৪ শতাংশ।
মূল্যবৃদ্ধির অন্য কারণ হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা ক্রয় বৃদ্ধি। বিশেষত চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমাতে সোনা মজুত বাড়াচ্ছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো ডলারে সংরক্ষিত রাশিয়ার সম্পদ জব্দ করেছে, ফলে রাশিয়া ও চীন ডলারে বিনিয়োগের ঝুঁকি কমাতে সোনার দিকে ঝুঁকছে।
ওলে হ্যানসেন (স্যাক্সো ব্যাংক) বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর বর্তমান সোনা কেনার প্রেক্ষাপট মূলত ভূরাজনৈতিক। এটি বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থার বিভাজন ও সার্বভৌম রিজার্ভ জব্দের প্রেক্ষিতে সোনার চাহিদাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো প্রতিবছর এক হাজার টনের বেশি সোনা কিনেছে, যেখানে এর আগের এক দশকে বার্ষিক ক্রয় ছিল মাত্র ৪০০–৫০০ টন।
এসআর
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

