হংকংয়ে কারাবন্দি গণমাধ্যম ব্যবসায়ী ও গণতন্ত্রপন্থি নেতা জিমি লাইয়ের সাজায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “আমার খুব খারাপ লাগছে। আমি এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাকে (জিমি লাইকে) মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে বলেছি।” তবে ঠিক কবে তিনি এই অনুরোধ করেছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি ট্রাম্প।
তিনি আরও বলেন, “তিনি একজন বয়স্ক মানুষ এবং অসুস্থ। তাই আমি বিষয়টি মানবিক দিক বিবেচনা করে অনুরোধ জানিয়েছি। এখন দেখা যাক কী হয়।”
হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় মেয়াদে ফেরার আগেই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি জিমি লাইকে মুক্ত দেখতে চান। জিমি লাই হংকংয়ের প্রভাবশালী গণতন্ত্রপন্থী সংবাদপত্র অ্যাপল ডেইলি-র প্রতিষ্ঠাতা এবং একজন সফল ব্যবসায়ী।
গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বৈঠকেই লাইয়ের মুক্তির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন ট্রাম্প।
এদিকে ট্রাম্পের মন্তব্যের পরপরই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে বলেন, জিমি লাইয়ের রায় প্রমাণ করে যে বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার রক্ষায় যারা কাজ করেন, চীন তাদের কণ্ঠরোধ করে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৯৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে হংকংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সময় চীন সেখানে পৃথক বিচারব্যবস্থা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
এক বিবৃতিতে রুবিও বলেন, “প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক হাজার ৮০০ দিনের বেশি সময় কারাবন্দি থাকায় জিমি লাইয়ের স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, মানবিক দিক বিবেচনা করে যেন দ্রুত তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।”
৭৮ বছর বয়সী, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত জিমি লাই একজন ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক। যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করা কর্মীদের পাশাপাশি খ্রিস্টান অধিকারকর্মীদের একটি গোষ্ঠীও তার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার। এই গোষ্ঠীটি ট্রাম্পের বড় সমর্থক হিসেবেও পরিচিত।
২০২০ সালের শেষ দিকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাবন্দি থাকা জিমি লাইয়ের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে আনা তিনটি অভিযোগে সোমবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই রায়ের ফলে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বড় বিক্ষোভের পর চীনের কঠোর দমনপীড়নের অংশ হিসেবেই জিমি লাইয়ের বিরুদ্ধে এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
এসআর

