আরবের খেজুরে সয়লাব কলকাতায় বাজার

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৫, ১৪: ২০
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৫, ১৪: ২৩

সিয়াম সাধনা, সংযম, ইবাদত আর আত্মশুদ্ধির জন্য পবিত্র রমজান মাসজুড়েই সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকার পর রোজাদাররা ইফতার করেন। রমজানে রোজাদারদের ইফতারিতে অন্যতম প্রিয় খাদ্য হিসেবে থাকে খেজুরসহ নানা রকমের ফল।

এবারে ইফতারির জন্য কলকাতার বিভিন্ন ফল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে নানা জাতের খেজুর। বিভিন্ন ধরনের খেজুরের জন্য কলকাতার পাইকারি ফল বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন খুচরা ফল বিক্রেতার পাশাপাশি সাধারণ ক্রেতারাও।

বিজ্ঞাপন

কলকাতার শুকনো ফলের ব্যবসায়ী তারিক আনোয়ার জানান, নানা রকম পুষ্টিগুণ থাকায় সারা বছরই খেজুরের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে রমজান মাস এবং হজের সময় খেজুরের চাহিদা অনেকটাই বেড়ে যায়। রমজান মাসে অনেকেই আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা গরিব অসহায় প্রতিবেশীকে খেজুরসহ অন্যান্য ফল ও ইফতারসামগ্রী দান করেন।

ফলে রমজানে খেজুরের চাহিদা অনেকটা বেড়ে যায় বলেও জানান খেজুর বিক্রেতারা। চিতপুর এলাকার শুকনো ফলের দোকান ‘মারহাবা সেন্টার’-এর নাসিম আখতার বলেন, মেডজুল, আজওয়া, সুক্কারি, কালমি, সাগাই, মরিয়ম, জাহিদি, খুদরি, মাবরুম, সাফায়ি, কিমিয়া, আম্বার, সুফরি, লেগেটি, আলফাজসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির খেজুর রয়েছে।

মূলত সৌদিআরব, আমিরশাহি, ইরান, তিউনেশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে এগুলো কলকাতায় আসে। কোয়ালিটি এবং ভ্যারাইটি অনুযায়ী বিভিন্ন খেজুরের বাজারদরও ভিন্ন। কলকাতার বাজারে আনুমানিক ২০০ টাকা কেজি থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দামের খেজুরের চাহিদা বেশি থাকে বলেও তিনি জানান।

এবার কলকাতার বাজারে উন্নত মানের বাছাই করা ফ্রেশ আজওয়া খেজুরের খুচরা দাম ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা কেজি। মাবরুম খেজুর ১২০০-১৪০০ টাকা, কালমি খেজুর ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, আম্বার খেজুর-১৪০০ টাকা, সাফায়ি ৭০০-৮০০ টাকা, মরিয়ম ৪০০-৫০০ টাকা, আলফাজ ৪০০ টাকা, কিমিয়া ২৬০-৩০০ টাকা, সুফরি ২৮০-৩০০ টাকা, লেগেটি খেজুর ২৫০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।

ইফতারির সময় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা প্রসঙ্গে কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালের মুখ্য পুষ্টিবিদ সুদেষ্ণা মৈত্র নাগ বলেন, ‘খেজুরকে বলা হয় সুপার ফুড। রমজান মাসে একজন রোজাদার মানুষ ভোররাত থেকে উপবাস থাকার পর সন্ধ্যায় রোজা ভাঙ্গেন।

ইফতারির সময় খেজুর খাওয়া ভীষণ প্রয়োজন। কারণ, সারাদিন রোজা রাখার পর খেজুর খেলে ক্যালোরি এবং এনার্জি পাওয়া যায় খুব দ্রুত। খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল, প্রাকৃতিক গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ থাকায় শরীরে দ্রুত শক্তি পান রোজাদার মানুষ।’

তিনি আরো বলেন, খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাসিয়াম থাকে। দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর ক্ষেত্রে খেজুর ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারিতে খেজুর খেলে গ্যাস-অম্বল থেকে মানবদেহকে সুস্থ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেজুর খুব উপকারী বলেও জানান পুষ্টিবিদ সুদেষ্ণা মৈত্র নাগ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত