নাইজেরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)–এর লক্ষ্যবস্তুতে বড়দিনের দিনে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলাকে ঘিরে দেশটির ভেতরে ও আন্তর্জাতিক পরিসরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পপন্থী মার্কিন রাজনীতিক ও ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো হামলাকে ‘বড়দিনের উপহার’ হিসেবে উদযাপন করলেও, নাইজেরিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও বেসামরিক সুরক্ষার প্রশ্ন নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ছোড়া একটি মিসাইল নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যের জাবো গ্রামের একমাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাত্র কয়েক মিটার দূরে আছড়ে পড়ে। এরপর থেকেই ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা চরম আতঙ্ক ও বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। অন্যদিকে এটিকে ‘বড়দিনের উপহার’ বলে উপহাস করেছেন মার্কিন ডানপন্থিরা।
অতি-ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী লরা লুমার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘ইসলামিক সন্ত্রাসীদের ন্যায্য গণহত্যার মাধ্যমে খ্রিস্টানদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার চেয়ে বড়দিন উদযাপনের আর কোনো ভালো উপায় আছে আমার মনে হয় না। আপনাদের এটি ভালো লাগা উচিত! সমস্ত ইসলামী সন্ত্রাসীদের মৃত্যু! ধন্যবাদ।’
এর আগে, ফ্লোরিডার রিপাবলিকান মার্কিন হাউস সদস্য র্যান্ডি ফাইন, ধর্মীয় সহিংসতার কারণে নাইজেরিয়াকে "বিশেষ উদ্বেগের দেশ" হিসাবে মনোনীত করার কংগ্রেসের প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিলেন।
বৃহস্পতিবারের নাইজেরিয়ার আক্রমণের ঘটনাকে ‘একটি আশ্চর্যজনক ক্রিসমাস উপহার’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
শুক্রবার আরো মন্তব্যে, অন্যান্য রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা ট্রাম্পের এই হামলা চালানোর প্রশংসা করেছেন। উত্তর ক্যারোলিনার রিপাবলিকান সিনেটর টেড বাড, বলেছেন যে, আইএস নাইজেরিয়ার হাজার হাজার খ্রিস্টান এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি)–এর সহিংসতায় অনেক মানুষ নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছে। খ্রিস্টান ও মুসলিম—উভয় সম্প্রদায়ই এই সহিংসতার শিকার।
তবে, নাইজেরিয়ান সরকার বারবার জানিয়ে আসছে, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে তারা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা স্বাগত জানালেও তা অবশ্যই দেশের সার্বভৌমত্ব ও আইনি কাঠামোর প্রতি সম্মান দেখিয়েই হতে হবে।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

