আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

কাশ্মীর নিয়ে লেখা ২৫ বই নিষিদ্ধ করলো ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কাশ্মীর নিয়ে লেখা ২৫ বই নিষিদ্ধ করলো ভারত

কাশ্মির নিয়ে লেখালেখির ওপর আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার। কাশ্মির নিয়ে লেখা ২৫টি বই নিষিদ্ধ করেছে নয়াদিল্লি। নিষিদ্ধঘোষিত বইগুলোর মধ্যে বুকার পুরস্কারজয়ী ভারতীয় লেখক অরুন্ধতী রায়ের বইও রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।।

গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, বুধবার জম্মু ও কাশ্মিরের দিল্লি-শাসিত স্বরাষ্ট্র দপ্তর ২৫টি বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এসব বইকে ‘সন্ত্রাসবাদকে গৌরবান্বিত’ ও ‘ভারতের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদে উসকানিমূলক’ বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এসব বইয়ের লেখকরা ভারতের, কাশ্মিরের ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব।

নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু বই হলো:

অরুন্ধতী রায়ের ‘আজাদি’, এজি নূরানির ‘দ্য কাশ্মির ডিসপিউট ১৯৪৭-২০১২’, ভিক্টোরিয়া স্কোফিল্ডের ‘কাশ্মির ইন কনফ্লিক্ট’ এবং ক্রিস্টোফার স্নেডেনের ‘ইন্ডিপেডেন্ট কাশ্মির’, সুমন্ত্র বোস, হাফসা কানজোয়াল, অনুরাধা ভাসিন, রাধিকা গুপ্তা, এসার বতুল, আথার জিয়া, পঙ্কজ মিশ্র, হ্যালি ডুশিনস্কি, মোনা ভান, পিয়ত্র বালসেরোভিচ এবং আগনিস্জকা কুশেভস্কার বইও নিষিদ্ধের আওতায় পড়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বইগুলো ‘অভিযোগ, ভুক্তভোগী ব্যক্তির সংস্কৃতি এবং সন্ত্রাসবাদীদের বীর বানানোর ধারা’ তৈরি করে, যা ইতিহাসকে বিকৃত করে এবং সেনাবাহিনীকে অপমান করে উগ্রপন্থা বাড়ায়। এসব বইকে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার জন্য হুমকি বলেও উল্লেখ করা হয়।

২০২৩ সালের ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা আইনের ৯৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই বইগুলো বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হাফসা কানজোয়াল বলেন, “কাশ্মির নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন, তাদের কাছে এটা অবাক হওয়ার কিছু নয়”। তিনি বলেন, ভারতের দীর্ঘ দখলদারি শুরু থেকেই তথ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে আসছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং কাশ্মিরবাসী— দু’পক্ষের কাছেই। তার নিজের বই ‘কলোনাইজিং কাশ্মির: স্টেট-বিল্ডিং আন্ডার ইন্ডিয়ান অকুপেশন’-ও নিষিদ্ধ হয়েছে।

‘দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব কাশ্মির আফটার আর্টিকেল ৩৭০’ বইয়ের লেখক অনুরাধা ভাসিনও সরকারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “সব বই-ই গবেষণালব্ধ। একটিও সন্ত্রাসবাদকে গৌরবান্বিত করে না। সরকারের মিথ্যা আখ্যানকে চ্যালেঞ্জ করলেই যদি ভয় হয়, তাহলে সেই ভয়ই অনেক কিছু বলে দেয়।”

গত কয়েক মাস ধরেই জম্মু ও কাশ্মিরে বইয়ের দোকানে হানা, বই বাজেয়াপ্ত করার মতো পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীনগরের দোকানগুলো থেকে অন্তত ৬৬৮টি বই জব্দ করা হয়, যার বেশিরভাগই ছিল আবুল আ'লা মওদুদীর লেখা বই।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ কাশ্মিরের বিতর্কিত ইতিহাস ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিকল্প বয়ানগুলো দমন করারই অংশ।

উল্লেখ্য, কাশ্মির নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দশকের বিরোধ চলছে। দুই পক্ষই পুরো কাশ্মির নিজেদের দাবি করলেও আলাদা অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে শুরু হয় সশস্ত্র প্রতিরোধ, যেখানে অনেক মুসলিম স্বাধীনতা কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে। ভারত পাকিস্তানের ওপর এই বিদ্রোহে মদদের অভিযোগ করলেও ইসলামাবাদ বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

রায়েরবাজারে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের লাশ উত্তোলন শুরু রোববার

‌নির্বাচনের প্রক্রিয়া যেন ব্যাহত না হয়, সে জন্য কাজ করছে বিএন‌পি: আলাল

যৌথবাহিনীর হাতে আটক বহিষ্কৃত যুবদল নেতার কারাগারে মৃত্যু

টিসিবির মাধ্যমে চিনি বিক্রি চলমান থাকবে: শিল্প উপদেষ্টা

স্বৈরাচার দেশে জুলুমতন্ত্র কায়েম করে সবকিছু লুটেপুটে নিয়েছে: জাহিদুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন