শর্ত পূরণে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শতভাগ পাস করেছে। এ কারণে দলটি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রবর্তী তালিকায় আছে। অপর ২১ দল নিয়ে আছে নানা ধোঁয়াশা। এমনকি বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে নিয়ে বিভিন্ন মুখরোচক আলোচনা থাকলেও সেখানে তথ্যের গরমিল পেয়েছে ইসি। এছাড়া নিবন্ধনের শর্ত পূরণের কাছাকাছি থাকা বেশ কয়েকটি দলকে ফের চিঠি দেওয়া হবে।
বিগত কমিশন যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনেক দলকে নিবন্ধন দেয়নি বলে অভিযোগ ছিল। তাই ইসির এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ১২টি দল আদালতে যায়। ওই দলগুলোর মধ্যে কয়েকটি নিবন্ধন পেয়েছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও প্রয়াত শফিউল আলম প্রধানের দল জাগপা নিবন্ধন পাচ্ছে। আদালতের নির্দেশনা যাচাই করে দল দুটিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। সংস্থাটির দায়িত্বশীলদের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বক্তব্য দেওয়ার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করে এক ইসি কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, সংক্ষিপ্ত তালিকার ২২ নতুন দলের তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করা হয়েছে। তবে শুধু এনসিপিই নিবন্ধন শর্ত পূরণ করেছে। দলটির ২২ জেলায় অফিস, এসব অফিসের অধীনে গঠিত কমিটির সদস্য সংখ্যা এবং দলীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম সঠিক পেয়েছে ইসি। এছাড়া দলটির ১০০ উপজেলা পর্যায়ে অফিস, সব কমিটিতে ২০০ সদস্য এবং তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ইসির আরেক কর্মকর্তা জানান, নতুন দলগুলোর মধ্যে বেশি আলোচনায় ছিল এনসিপি। এরপর এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনি গ্রুপের দল বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি। দেশজুড়ে নেটওয়ার্ক থাকার পরও দলটি শতভাগ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এসব কারণে নিবন্ধন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কমিশন আরো কম-বেশি ছয়টি দলকে ঘাটতি পূরণের জন্য তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
খবরের সত্যতা স্বীকার করে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আমার দেশকে বলেন, কয়েকটি দলের কাছে নতুন করে তথ্য চাওয়া ও তাদের ইতোমধ্যে সরবরাহ করা তথ্য রিভিউ করা হচ্ছে।
ইসি সূত্রমতে, ৩১ আগস্ট মাঠ পর্যায় থেকে তদন্ত করে ২২ দলের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেন ইসির মাঠ অফিসের কর্মকর্তারা। এ প্রতিবেদন ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা ফের যাচাই-বাছাই করেন। সেখানে এনসিপিসহ কয়েকটি দলের তথ্যে সীমিত ঘাটতি ছিল। তবে বেশিরভাগ দলের তথ্যে ব্যাপক গরমিল পায় ইসি।
পরে ২২ দলকে মৌখিকভাবে ডেকে ইসির অতিরিক্ত সচিব তাদের ঘাটতিগুলো দেখিয়ে পূরণের অনুরোধ জানান। শুধু এনসিপি ঘাটতি পূরণ করে এবং বাকিগুলো তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে ২২ দলের মধ্য থেকে কম-বেশি ছয়টি দলকে পুনরায় তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইসির নিবন্ধন চাওয়া নতুন আলোচিত দলগুলো হচ্ছে—এনসিপি, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, আমজনতার দল, বাংলাদেশ উলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ) ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।
পুনরায় তথ্য চাওয়া দলগুলোর তথ্য পেলে কমিশন সভা করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দল নিবন্ধন চূড়ান্ত করবে। বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪৯টি। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।


ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি, কে এটি পরিচালনা করবে?