
জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর কারাগার থেকে মুক্তি পান সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা। একসময় নাম উঠেছিল ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তালিকায়। কিন্তু জেল থেকে বের হওয়ার পর যেন একেবারে অন্য মানুষ হয়ে যান তিনি। প্রেমে পড়েছিলেন এক তরুণীর। সেই প্রেমই তাকে বদলে দেয়।
ছয় মাস প্রেমের পর দেড় মাস আগে বিয়ে করেন মেয়েটিকে। সংসার শুরু করেছিলেন নতুন করে। ভালো মানুষ হয়ে, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রত্যয়ে। কিন্তু সেই পথ শেষ হলো হঠাৎই! গত ৫ নভেম্বর প্রতিপক্ষের গুলিতে নিথর হয়ে গেলেন বাবলা।
বাবলা যাকে বিয়ে করেছিলেন, সেই মেয়েটির বয়স মাত্র ২০। চট্টগ্রামের রাহাত্তরপুল এলাকার বাসিন্দা, এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এখন তিনি বিধবা, বিয়ের দেড় মাসের মাথায়। তার চোখে শুধু শূন্যতা। মুখে কোনো শব্দ নেই, ঠোঁট নড়ে না, শুধু মাঝে মাঝে নিঃশব্দ কান্না। তিনি নাম প্রকাশ করতে চাননি। ছবিও তুলতে দেননি। তার কথায়, ও (বাবলা) ভালো মানুষ হয়ে গেছিল। বাসার বাইরে যেত না। সকাল-বিকেল আমার পাশে থাকতো। সংসারের বাজার করতো, মসজিদে নামাজ পড়তো। বিয়ের পর বলেছিল-আর ঝামেলায় যাবো না, শান্তিতে থাকতে চাই।’ কিন্তু কেউ চায়নি সে বাঁচুক।
চালিতাতলীর খন্দরপাড়া। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরের সেই গ্রাম। বায়েজিদের আতুরার দীপু এলাকা পেরিয়ে ঢুকতেই নিস্তব্ধতা। শুক্রবার বিকেলে সেই বাড়িতে গেলে দেখা যায়, শোকাচ্ছন্ন পুরো পরিবেশ। বাবলার বাড়ির উঠানে জড়ো হয়েছেন আত্মীয়-স্বজন, পরিচিতজন। কেউ চুপচাপ বসে আছেন, কেউ কাঁদছেন নিঃশব্দে।
বাবলার বড় ভাই মো. জাহাঙ্গির আলম সাংবাদিককে দেখেই কিছুটা ক্ষোভ নিয়ে বলেন, মিডিয়া আমাদের কথা শুনছে না। সবাই বলছে, বাবলা সন্ত্রাসী। অথচ এলাকার মানুষ জানে, আমার ভাইটা কীভাবে বদলে গিয়েছিল। মসজিদের ইমাম জানে, সে কতটা নিয়মিত নামাজ পড়তো। জেল থেকে আসার পর থেকেই বলতো, আর কোনো খারাপ পথে যাবে না। কিন্তু কেউ সেটা দেখতে চায়নি।
কণ্ঠ ভারী করে তিনি আরও বলেন, দেখেন, একটা মেয়ে যদি জানে কোনো ছেলেটা খারাপ, তাহলে সে কি প্রেম করতো? বিয়ে করতো? ওর স্ত্রী এখন বিধবা। কী অপরাধ করেছিল সে?
ছোট ভাই মো. আজিজের চোখ লাল, মুখ শুকনো। আমার দেশের সাংবাদিক আসার খবরে উঠলেন ঘুম থেকে। বললেন, আমার ভাইটা শত্রুদের টার্গেট ছিল, বলেন তিনি। ‘ওর কোনো অস্ত্র ছিল না, কোনো ঝামেলায় যেত না। কিন্তু যারা ওকে খারাপ বলতো, তারাই এখন ভালো হয়ে গেছে, পুলিশও কিছু করছে না।
ঘরের ভেতর বসে থাকা বাবলার স্ত্রী কোনো কথা বলেন না। টানা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন সামনের দেয়ালের দিকে। মাঝেমধ্যে মুখে একটা শব্দ আসে-সে তো ভালো হয়ে গেছিল... তারপর আবার নীরবতা।
বাবলার বাড়ির পেছনের ছোট উঠানে দেখা গেলো, নতুন লাগানো একটি বটগাছ। পাশেই মাটিতে পড়ে আছে বাবলার ব্যবহৃত পুরনো একজোড়া জুতা। কারও সঙ্গে কথা বলার অবস্থায় নেই।
পাশের বাড়ির বৃদ্ধ আবদুল খালেক বলেন, ছেলেটা আসলেই বদলেছিল। নামাজ পড়তো, ছেলেপেলে ডাকলে বকতো। কিন্তু ওর ভাগ্যে তো এইটা লেখা ছিল...’
আবুল কাশেম নামে দোকানদার বলেন, খারাপ লোক ভালো হতে চাইলেও তাকে বাঁচতে দেয় না কেউ। রাজনীতি, প্রভাব, প্রতিহিংসা-সব মিলে এক যন্ত্রণার সমাজ।
আরেক পাশের দোকানের মালিক আবদুল খালেক বলেন, ও আগে খারাপ পথে ছিল, ঠিক। কিন্তু জেল থেকে আসার পর ও একদম অন্য মানুষ হয়ে গেছিল। কারও সঙ্গে ঝামেলা করতো না। নামাজ পড়তো, দোকানে এসে গল্প করতো, সবাইকে সালাম দিত।
আরেকজন স্থানীয় শিক্ষক আবদুল মান্নান জানান, বাবলার মতো ছেলেরা যদি ভালো হতে চায়, তখন সমাজই তাদের বাঁচতে দেয় না। যারা খারাপ পথে ঠেলে দিয়েছিল, তারাই এখন পবিত্র সাজছে।
গত বুধবার রাতে বায়েজিদ থানার চালিতাতলীর খন্দকার পাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। এসময় পাশে থাকা সরওয়ার হোসেন বাবলার ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে ৬ রাউন্ড গুলি করা হয়। এতে মারা যান বাবলা। পুলিশ সূত্র বলছে, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছোট সাজ্জাদের অনুসারী রায়হান গ্রুপ। অথচ ছোট সাজ্জাদ বর্তমানে স্ত্রীসহ কারাগারে-সেখান থেকেই অপরাধের নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি।
আজ শুক্রবার র্যাব এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর কারাগার থেকে মুক্তি পান সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা। একসময় নাম উঠেছিল ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তালিকায়। কিন্তু জেল থেকে বের হওয়ার পর যেন একেবারে অন্য মানুষ হয়ে যান তিনি। প্রেমে পড়েছিলেন এক তরুণীর। সেই প্রেমই তাকে বদলে দেয়।
ছয় মাস প্রেমের পর দেড় মাস আগে বিয়ে করেন মেয়েটিকে। সংসার শুরু করেছিলেন নতুন করে। ভালো মানুষ হয়ে, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রত্যয়ে। কিন্তু সেই পথ শেষ হলো হঠাৎই! গত ৫ নভেম্বর প্রতিপক্ষের গুলিতে নিথর হয়ে গেলেন বাবলা।
বাবলা যাকে বিয়ে করেছিলেন, সেই মেয়েটির বয়স মাত্র ২০। চট্টগ্রামের রাহাত্তরপুল এলাকার বাসিন্দা, এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এখন তিনি বিধবা, বিয়ের দেড় মাসের মাথায়। তার চোখে শুধু শূন্যতা। মুখে কোনো শব্দ নেই, ঠোঁট নড়ে না, শুধু মাঝে মাঝে নিঃশব্দ কান্না। তিনি নাম প্রকাশ করতে চাননি। ছবিও তুলতে দেননি। তার কথায়, ও (বাবলা) ভালো মানুষ হয়ে গেছিল। বাসার বাইরে যেত না। সকাল-বিকেল আমার পাশে থাকতো। সংসারের বাজার করতো, মসজিদে নামাজ পড়তো। বিয়ের পর বলেছিল-আর ঝামেলায় যাবো না, শান্তিতে থাকতে চাই।’ কিন্তু কেউ চায়নি সে বাঁচুক।
চালিতাতলীর খন্দরপাড়া। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরের সেই গ্রাম। বায়েজিদের আতুরার দীপু এলাকা পেরিয়ে ঢুকতেই নিস্তব্ধতা। শুক্রবার বিকেলে সেই বাড়িতে গেলে দেখা যায়, শোকাচ্ছন্ন পুরো পরিবেশ। বাবলার বাড়ির উঠানে জড়ো হয়েছেন আত্মীয়-স্বজন, পরিচিতজন। কেউ চুপচাপ বসে আছেন, কেউ কাঁদছেন নিঃশব্দে।
বাবলার বড় ভাই মো. জাহাঙ্গির আলম সাংবাদিককে দেখেই কিছুটা ক্ষোভ নিয়ে বলেন, মিডিয়া আমাদের কথা শুনছে না। সবাই বলছে, বাবলা সন্ত্রাসী। অথচ এলাকার মানুষ জানে, আমার ভাইটা কীভাবে বদলে গিয়েছিল। মসজিদের ইমাম জানে, সে কতটা নিয়মিত নামাজ পড়তো। জেল থেকে আসার পর থেকেই বলতো, আর কোনো খারাপ পথে যাবে না। কিন্তু কেউ সেটা দেখতে চায়নি।
কণ্ঠ ভারী করে তিনি আরও বলেন, দেখেন, একটা মেয়ে যদি জানে কোনো ছেলেটা খারাপ, তাহলে সে কি প্রেম করতো? বিয়ে করতো? ওর স্ত্রী এখন বিধবা। কী অপরাধ করেছিল সে?
ছোট ভাই মো. আজিজের চোখ লাল, মুখ শুকনো। আমার দেশের সাংবাদিক আসার খবরে উঠলেন ঘুম থেকে। বললেন, আমার ভাইটা শত্রুদের টার্গেট ছিল, বলেন তিনি। ‘ওর কোনো অস্ত্র ছিল না, কোনো ঝামেলায় যেত না। কিন্তু যারা ওকে খারাপ বলতো, তারাই এখন ভালো হয়ে গেছে, পুলিশও কিছু করছে না।
ঘরের ভেতর বসে থাকা বাবলার স্ত্রী কোনো কথা বলেন না। টানা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন সামনের দেয়ালের দিকে। মাঝেমধ্যে মুখে একটা শব্দ আসে-সে তো ভালো হয়ে গেছিল... তারপর আবার নীরবতা।
বাবলার বাড়ির পেছনের ছোট উঠানে দেখা গেলো, নতুন লাগানো একটি বটগাছ। পাশেই মাটিতে পড়ে আছে বাবলার ব্যবহৃত পুরনো একজোড়া জুতা। কারও সঙ্গে কথা বলার অবস্থায় নেই।
পাশের বাড়ির বৃদ্ধ আবদুল খালেক বলেন, ছেলেটা আসলেই বদলেছিল। নামাজ পড়তো, ছেলেপেলে ডাকলে বকতো। কিন্তু ওর ভাগ্যে তো এইটা লেখা ছিল...’
আবুল কাশেম নামে দোকানদার বলেন, খারাপ লোক ভালো হতে চাইলেও তাকে বাঁচতে দেয় না কেউ। রাজনীতি, প্রভাব, প্রতিহিংসা-সব মিলে এক যন্ত্রণার সমাজ।
আরেক পাশের দোকানের মালিক আবদুল খালেক বলেন, ও আগে খারাপ পথে ছিল, ঠিক। কিন্তু জেল থেকে আসার পর ও একদম অন্য মানুষ হয়ে গেছিল। কারও সঙ্গে ঝামেলা করতো না। নামাজ পড়তো, দোকানে এসে গল্প করতো, সবাইকে সালাম দিত।
আরেকজন স্থানীয় শিক্ষক আবদুল মান্নান জানান, বাবলার মতো ছেলেরা যদি ভালো হতে চায়, তখন সমাজই তাদের বাঁচতে দেয় না। যারা খারাপ পথে ঠেলে দিয়েছিল, তারাই এখন পবিত্র সাজছে।
গত বুধবার রাতে বায়েজিদ থানার চালিতাতলীর খন্দকার পাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। এসময় পাশে থাকা সরওয়ার হোসেন বাবলার ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে ৬ রাউন্ড গুলি করা হয়। এতে মারা যান বাবলা। পুলিশ সূত্র বলছে, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছোট সাজ্জাদের অনুসারী রায়হান গ্রুপ। অথচ ছোট সাজ্জাদ বর্তমানে স্ত্রীসহ কারাগারে-সেখান থেকেই অপরাধের নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি।
আজ শুক্রবার র্যাব এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ফেনীতে যুবদল নেতার বাড়ি থেকে ভারতীয় চোরাই পণ্যের চালান জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলার পরশুরাম মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুল হাকিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরে আবারো প্রকাশ্যে রক্ত ঝরলো। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে থানার চুনা ফ্যাক্টরি মোড়ের শাপলা আবাসিক এলাকার সামনে মো. আকবর (৩০) নামে এক স্থানীয় কাঁচাপণ্যের ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
৩ ঘণ্টা আগে
তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তৃণমূলের মতামতকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে ভুল জায়গায় এমন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়েছেন। কেন্দ্র থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে এই কাজী সালাউদ্দিন রাজনৈতিক জীবনে কখনো পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়নি, এমনকি জেল ও খাটেনি। কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া এই কাজী সালাউদ্দিন ফ্যাসিস্ট
৫ ঘণ্টা আগে
১০৩ বছর বয়সি সেইচি ইশি একজন সাইকেল মেকানিক। তিনি তার কাজকে খুবই ভালোবাসেন। ১২ বছর বয়স থেকে তিনি তার কাজ শুরু করেন। এরপর ৯০ বছর ধরে তিনি এ কাজ করছেন। তার মতে, তিনি একজন কর্মজীবী মানুষ। বয়স হওয়ার পরও কাজ করে যাওয়াই হচ্ছে জীবন।
৫ ঘণ্টা আগে