Ad T1

ভোলায় ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে মধ্যরাতে, প্রস্তুত জেলেরা

জেলা প্রতিনিধি, ভোলা
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৪: ৩৩

ভোলার-মেঘনা তেতুলিয়ার ১৯০ কিলোমিটার নদীতে ৬০ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার শেষ দিন আজ ৩০ এপ্রিল। আনন্দের শেষ নেই জেলেদের মাঝে। ট্রলার, নৌকা ও জাল নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছেন মধ্যরাতে নদীতে যাওয়ার জন্য।

ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়ার সদর উপজেলা থেকে মনপুরার চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং ভোলার ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার সহ মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার ১৯০ কিলোমিটার ইলিশ অভয়াশ্রম এলাকায় গত পহেলা মার্চ মাছ ধরা উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে ৩০ এপ্রিল বুধবার রাত ১২টায়।

ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় মাছ আহরণ করতে নামবেন জেলার প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার নিবন্ধিত জেলে সহ প্রায় আড়াই লাখ জেলে। তবে জাটকা রক্ষায় সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ কঠোর নজরদারি ও প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিলো।

ভোলার মেঘনা উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ মানুষই মাছ আহরণের উপর নির্ভরশীল । কিন্তু এদের মধ্যে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা আহরণ করার প্রচেষ্টা চালায়। আইন অমান্য করে জাটকা ধরায় প্রশাসনের হাতে আটক হয়ে জরিমানা সহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ভোগ করেছে অসাধু জেলেরা।

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার সময়ে জাটকা ইলিশের অভয়াশ্রমে ৫৪০টি অভিযান পরিচালনা করেছে মৎস্য বিভাগ। তার মধ্যে মোবাইল কোর্ট ৬০টি। আটক করা হয়েছে জাটকা ০.৭৬৭৫ মে: টন এবং অন্যান্য ৬.০৬০৫ মে: টন। মোট জাল আটক করা হয়েছে, ইলিশ ৫৪৭৯ লক্ষ মিটার, কারেন্ট জাল ৪৭.১৬২ লক্ষ মিটার এবং অন্যান্য জাল ১৪৭৩ টি। এ অভিযানে মোট মামলা হয়েছে ৬০টি, জেল হয়েছে ৬ জনের এবং জরিমানা আদায় করা হয়েছে ০.১৫০ লক্ষ টাকা। নিলামকৃত আয় হয়েছে ৩ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা।

মাছ ধরার ঘাট গুলো ঘুরে দেখা যায়, ভোলা সদর উপজেলার ভোলার খাল, তুলাতলী, নাছিরমাঝি, কাঠির মাথা, শিবপুর, দৌলতখান উপজেলার ফিস ঘাট, গুপ্তগঞ্জ, সাহেবের হাট, স্বরাজ গঞ্জ, আলীমদ্দিন, বাংলাবাজার, বোরহান উদ্দিন উপজেলার হাকিমুদ্দিন, মৃজাকালু, গংঙ্গাপুর মাছ ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জাল ও নৌকা মেরামত শেষ করে এখন নদীতে মাছ আহরণের জন্য অপেক্ষা করছে জেলেরা।

ভোলা ঘাটের জেলে মনির মাঝি জানান, সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আমরা মেনে চলার চেষ্টা করি। জাটকা না ধরার জন্য নদীতে যে অভিযান পরিচালনা করে আমরা তা মেনে নেই, কিন্তু মান্তা গোষ্ঠী সহ কতিপয় অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জাটকা নিধন করে। অভিযান শেষে আমরা ঋণ করে নতুন জাল ক্রয়, নৌকা মেরামতসহ শ্রমিকদের অগ্রিম টাকা দিতে হয়। নদীতে মাছ না পাওয়া গেলে খুবই খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ঝাটকা ইলিশ সংরক্ষণে ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়ার ১৯০ কিলোমিটার নদী মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ১৮৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের। আশা করি উৎপাদন আরো বেশি হবে। এ বছর ইলিশ সংরক্ষণে জেলেরা আমাদের খুব সহযোগিতা করেছে বলেও জানান মৎস্য কর্মকর্তা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত