আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন সেই জামায়াত নেতা

উপজেলা প্রতিনিধি, ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ)

মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন সেই জামায়াত নেতা

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক জসিম উদ্দিন।

রোববার বিকেলে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও কার্যালয়ে তিনি তার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

বিজ্ঞাপন

এর মাধ্যমে ১৫৩, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়ীয়া) সংসদীয় আসনে নির্বাচনি লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলেন তিনি। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় উপজেলা চত্বরে ফুলবাড়ীয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষী উপস্থিত ছিলেন।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে অধ্যাপক জসিম উদ্দিন বলেন, “মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে এক নতুন প্রত্যাশার অধ্যায় সূচিত হলো। শিক্ষা, সততা ও মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী আমরাই প্রথম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আপনারা সকল ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে বিজয় ছিনিয়ে আনবেন।”

দলীয় সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে সোমবার রাতে তিনি আমার দেশকে জানান, তাকে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) ছাড়াই প্রথমে সদস্যপদ স্থগিত এবং পরে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “দল থেকে আমাকে কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি, হঠাৎ জানতে পারলাম আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমার জনপ্রিয়তা দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে কেউ কেউ এমনটা করেছে। ফুলবাড়ীয়াবাসী চাচ্ছে আমি নির্বাচন করি, এটাই হয়তো কারও পছন্দ হচ্ছে না।”

‘ফুলবাড়ীয়া ঐক্যবদ্ধ জনতা’র আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম জানান, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ২০০১ সালে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকলেও স্থানীয় বিভেদ ও ভোট চুরির কারণে তাকে পরাজিত হতে হয়। বিগত সরকারের আমলে তিনি রাজনৈতিক নিপীড়ন ও একাধিক মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছেন। এমনকি পেশাগত জীবনেও তিনি বৈষম্যের শিকার হয়ে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই অবসরে যেতে বাধ্য হন।

ছাত্রশিবির ফুলবাড়ীয়া থানার সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ জাকির হোসেন মঞ্জু বলেন, “জসিম স্যার ফুলবাড়ীয়া জামায়াতের ইতিহাসের অংশ। তার মতো ক্লিন-ইমেজের নেতাকে ছাড়া এই আসনে জয়লাভের চিন্তা করা অলীক কল্পনা মাত্র।”

আরেকজন স্থানীয় নেতা এ কে এম মোফাজ্জল হক তারা বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রে স্পষ্টভাবে জানাতে চাই—ফুলবাড়ীয়া আসনে অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। অতীতে তিনি দলের জন্য কী করেছেন, তা ফুলবাড়ীয়ার মানুষ জানে। দল যদি জয়ের মুখ দেখতে চায়, তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অবশ্যই স্থানীয় মানুষের এই আবেগ ও দাবির প্রতি সম্মান জানাতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে এর ফল হবে ভোটের ভরাডুবি।’

উল্লেখ্য, অধ্যাপক জসিম উদ্দিনকে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) ছাড়াই সোমবার দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। এরও আগে তার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।

ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়ীয়া) সংসদীয় আসনে এবার জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মুহা. কামরুল হাসান মিলনকে। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র হিসেবেই লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন অধ্যাপক জসিম উদ্দিন।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন