আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা ও দিনাজপুর

চুয়াডাঙ্গা ও দিনাজপুর প্রতিনিধি

শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা ও দিনাজপুর
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাতেও শীতের দাপট বেড়েছে। ছবি: আমার দেশ

শীতের তীব্রতায় কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা ও দিনাজপুর। কনকনে ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনাজপুরে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিজ্ঞাপন

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি জানান, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার থাকলেও সূর্যের তেজ ছিল ক্ষীণ। হিমেল হাওয়ায় কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে জেলায় তাপমাত্রা কমতে শুরু করে এবং টানা ৪২ দিন ধরে তা ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ছবি: আমার দেশ
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ছবি: আমার দেশ

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। তিনি বলেন, গতকাল সোমবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আগামী দিনে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে।

শীতের কারণে শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট বেড়েছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের নতুন বাজারের নৈশপ্রহরী আবেদ আলি বলেন, প্রচণ্ড শীতে রাতে পাহারা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সদর উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের কৃষক তুহিন জানান, অতিরিক্ত শীতে বোরো ক্ষেতে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি জানান, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। গত দুইদিন সূর্যের দেখা মিললেও তাপ ছিল না। সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন মাত্র রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহ ধরে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ও ১৩ এর ঘরে উঠানামা করছে। দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই এরপরও শীত বেশি।

তবে গত ৩/৪ দিনধরে দিনাজপুরসহ আশপাশের জেলায় হাওয়া বইছে। ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের আলো দেখা না দেওয়ায় শীত বেশি অনুভুত হচ্ছে। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন থাকতে পারে এমনটি জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

গত দুইদিন থেকে দিনাজপুরের রাস্তাঘাট ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে। বেলা ১২টার পর দিনাজপুরে সূর্যের দেখা মিললেও তাপ নেই। বইছে হিমেল হওয়া। হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীতে মানুষ, গবাদি পশু, কুকুর, বিড়ালসহ ও অন্যান্য প্রাণিকূল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এদিকে, জেলার খানসামা উপজেলাতেও শীতের দাপট বেড়েছে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ, দিনমজুর, শিশু ও বয়স্করা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাতেও শীতের দাপট বেড়েছে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ছবি: আমার দেশ
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাতেও শীতের দাপট বেড়েছে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ছবি: আমার দেশ

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। হাটবাজার ও খোলা স্থানে মানুষের উপস্থিতি ছিল কম।

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাতেও শীতের দাপট বেড়েছে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ছবি: আমার দেশ
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাতেও শীতের দাপট বেড়েছে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ছবি: আমার দেশ

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল প্রায় ৯৩ শতাংশ।

খানসামার ছাতিয়ানগড় গ্রামের ইপিজেড কর্মী ও মোটরসাইকেল চালক রুবেল বলেন, খুব ভোরে কাজে বের হতে হয়, তখন শীত ও কুয়াশার কারণে চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়ে। একই এলাকার মোসলেম উদ্দিন বলেন, দুপুর পর্যন্তও সূর্যের দেখা মিলছে না। ভ্যানচালক মিজানুর রহমান জানান, সকালে যাত্রী কম থাকায় আয় কমে গেছে। বয়স্ক ফজলে রহমান বলেন, সামান্য শীতেই শরীর কাহিল হয়ে পড়ে।

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাতেও শীতের দাপট বেড়েছে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ছবি: আমার দেশ
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাতেও শীতের দাপট বেড়েছে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ছবি: আমার দেশ

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, বুধবার থেকে কুয়াশা কিছুটা কমতে পারে, তবে রাতের তাপমাত্রা আরো হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডিসেম্বরের শেষদিকে একটি পূর্ণ শৈতপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলেও তিনি জানান।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন