যেকোনো মুহূর্তে সংঘর্ষের আশঙ্কা, শেবাচিমে পুলিশ মোতায়েন

নিকুঞ্জ বালা পলাশ, বরিশাল
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ৫০

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলমান পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ডাক্তার, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হামলার জের ধরে এই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শেবাচিম হাসপাতালের প্রধান ফটক ও অভ্যন্তরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মারধর করে ক্যাম্পাস থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। যদিও দিনভর পাল্টা আক্রমণের খবর ছড়িয়েছিল, শেষ পর্যন্ত বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলনের প্রেক্ষাপট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির নেতৃত্বে গত ১৮ দিন ধরে সারা দেশের স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নের দাবিতে আন্দোলন চলছিল। এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, এবং হাসপাতালের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর জন্য বরিশালে আসেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাঁর পরিবর্তে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে দেখতে চাওয়ায় তিনি ফিরে যান।

বৈঠকে ডা. আবু জাফর স্বীকার করেন, আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি যৌক্তিক, কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লাগবে। তিনি এও বলেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে কেউ সরকারকে বেকায়দায় ফেলছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও সংঘর্ষ

মহাপরিচালক বরিশাল ছাড়ার পর বিকেলে ডাক্তার, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবিতে পাল্টা বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেন। সকালে শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করলেও বৃষ্টির কারণে উপস্থিতি ছিল কম। এ সুযোগে সাড়ে ১১টার দিকে ডাক্তার ও নার্সরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে শিক্ষার্থীরা অনশন ছেড়ে সরে পড়ে। এসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থীকে ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এই ঘটনার পর পুরো হাসপাতালজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পাল্টা হামলার আশঙ্কা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

এই আন্দোলন ও পাল্টা কর্মসূচির কারণে দিনভর হাসপাতালের সব ধরনের চিকিৎসা সেবা বন্ধ ছিল, ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে চিকিৎসা না নিয়েই ফিরে যান।

বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের বরিশাল শাখার সভাপতি মো. আলী আজগর বলেন, পর্যাপ্ত জনবল ও অবকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও তাঁদের অতিরিক্ত রোগীর সেবা দিতে হচ্ছে। তিনি তাঁদের নিরাপত্তার দাবি জানান এবং তা নিশ্চিত করা না হলে শনিবার থেকে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত